মিছিল করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে কয়েকশ মিটার যাওয়ার পর কদম ফোয়ারার সামনে তাদের আটকে দেয় পুলিশ।
Published : 02 Mar 2025, 11:01 PM
এমপিওভুক্তির দাবি-দাওয়া প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে উপস্থাপনেরও আশ্বাসে টলেননি ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকরা।
রোববার রোজার প্রথম দিনে শিক্ষকরা টানা অষ্টম দিনের মত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থানে ছিলেন। পরে বেলা পৌনে ১২টার দিকে তারা সেখান থেকে মিছিল করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন।
তবে কয়েকশ মিটার দূ্রে কদম ফোয়ারার সামনে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। এরপর পুলিশের সঙ্গে শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যান।
সেখান থেকে ফিরে এসে পরিষদের সমন্বয়ক ফরহাদ হোসেন বাবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন বেতন-ভাতা পাই না। তাই শর্ত শিথিল করে ননএমপিও আড়াই হাজারের কিছু বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবি জানাচ্ছি।
“তিনি আমাদের দাবি-দাওয়া সম্বলিত স্মারকলিপিটি প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে উপস্থাপন করবেন বলে আশ্বস্ত করে আমাদের ক্লাসে ফিরে যেতে বলেছেন। কিন্তু আশ্বাস নয়, আমরা চাই এমপিওভুক্তির সুস্পষ্ট ঘোষণা।
তার ভাষ্য, “এমপিওভুক্তির সুস্পষ্ট ঘোষণা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা ফিরে যাব না। আমাদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চলবে।”
এমপিওভুক্তির দাবিতে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন ‘দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়া’ ননএমপিও এসব শিক্ষক।
‘ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ’ নামের সংগঠনের ব্যানারে এ আন্দোলন চলছে। বিদ্যমান এমপিও নীতিমালার শর্তশিথিল করে ননএমপিও প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি বেতনভাতায় তালিকাভুক্ত বা এমপিওভুক্ত করার দাবি জানাচ্ছেন অবস্থান কর্মসূচি থেকে।
আসছে ঈদেই শতভাগ উৎসব ভাতা, না হয় এসএসসি বর্জন, এমপিও শিক্ষকদের হুঁশিয়ারি
সরকারি হিসাবে ৪ হাজার ২০০টির বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ননএমপিও বা এমপিওভুক্তির বাইরে থাকলেও এ সংখ্যা বর্তমানে আড়াই হাজারের কিছু বেশি বলে দাবি করেন আন্দোলনকারী শিক্ষকদের নেতা বাবুল।
তার দাবি, দীর্ঘ ২০-২৫ বছর ধরে শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারি বেতনভাতা না পাওয়ায় বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে গেছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষকদের আরেক সমন্বয়ক মমিনুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এমপিওভুক্তি একটি চলমান প্রক্রিয়া, প্রতিবছর এমপিওভুক্তির আবেদন নেওয়া হবে বলে নীতিমালায় বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে ২০২১ সালের পর কোনো আবেদনই নেওয়া হয়নি।”
২০২১ সালের এমপিও নীতিমালা বাতিল করে ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্তির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “যুগ যুগ ধরে বেতন না পাওয়া ননএমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের সামাজিক মর্যাদা ও সীমাহীন কষ্টের কথা চিন্তা না করেই বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ২০২১ সালে কঠিন শর্ত জুড়ে দিয়ে এমপিও নীতিমালা করেছে। এমপিওভুক্তি বা সরকারি সুযোগ সুবিধার বাইরে থেকে সেসব শর্তপূরণ প্রায় অসম্ভব।
”তাই আমরা নীতিমালা বাতিল বা শর্তশিথিল করে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্তির দাবি জানাচ্ছি।”
এমপিওভুক্তির জন্য বাজেটে ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকার দাবি করে তিনি বলেন, “বরাদ্দ থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় আবেদন নেয় না। আবেদন করলেও কঠিন শর্তের জন্য আমরা এমপিওভুক্ত হতে পারি না। ফলে যুগের পর যুগ আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকরা বেতনভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।”
তার আশা শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে সরকার ওই টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্ত করবে।