“ঈদ পর্যন্ত রাজপথে অবস্থান করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে ঈদের নামাজ আদায় করবো,” বলেন শিক্ষকদের এক নেতা।
Published : 02 Mar 2025, 05:00 PM
আসছে ঈদুল ফিতরেই শতভাগ উৎসব ভাতা চান এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা; না পেলে ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দায়িত্ব করবেন না বলে হুঁশিয়রি দিয়েছেন তারা।
ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গত ১৯ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসা এই শিক্ষকদের জোট রোববার এই ঘোষণা দিয়েছে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ, শতভাগ উৎসব ভাতা, সরকারি কর্মচারীদের মত একই হারে বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতার দাবিতে ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’ ব্যানারে শিক্ষকরা আন্দোলন করে আসছেন।
রোজার শুরুর দিন সকাল ১১টার দিকে তারা প্রেস ক্লাব এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন।
কয়েকটি শিক্ষক সংগঠন নিয়ে গঠিত জোটের সদস্য সচিব দেলাওয়ার হোসেন আজীজী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত ১৯ দিন লাগাতার অবস্থান, কর্মবিরতি, প্রতীকী অনশন, বিক্ষোভ মিছিল ও কয়েক দফা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেও কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা আমরা পাইনি।
“তারা আমাদের আশ্বাস দিয়েই যাচ্ছেন, তবে সুস্পষ্টভাবে কোনো কথা বলছেন না।”
বর্তমানে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ ও কর্মচারীরা মূল বেতনের ৫০ শতাংশ হারে দুই ঈদে উৎসব ভাতা পান।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের শতভাগ উৎসব ভাতা দেওয়ার দাবি তুলে ধরে এ শিক্ষক নেতা বলেন, “আমরা আসছে ঈদেই শতভাগ উৎসব ভাতা চাই। আসছে ঈদে শতভাগ উৎসব ভাতা না দেওয়া হলে আমরা এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার সব দায়িত্ব বর্জন করবো।
“কোন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী এ পরীক্ষার কোন দায়িত্ব পালন করবেন না। আর ঈদ পর্যন্ত রাজপথে অবস্থান করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে ঈদের নামাজ আদায় করবো।”
সরকারি কর্মচারীদের মত একই হারে বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতার দাবি তুলে ধরে দেলাওয়ার হোসেন বলেন, “আসন্ন বাজেটে এ বিষয়ে সরকার ঘোষণা দিতে পারে। তবে শতভাগ উৎসব ভাতা আসছে ঈদের আগেই শিক্ষকদের দিতে হবে। এটি আমাদের ন্যায্য দাবি।”
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ‘শিক্ষকদের মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত’ বলে তুলে ধরে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “তাদের জন্য যতদূর করার, আমি চেষ্টা করব।”
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষে তিনি বলেন, “এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অনলাইন বদলির ব্যবস্থা করছি। তারা যে ভাতা পান তা অপ্রতুল। আমাদের সীমিত সাধ্যের মধ্যে ভাতা বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
আগামী বছরের জন্য এখন একটা বাজেট তৈরি হচ্ছে তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেছিলেন, শিক্ষকদের অবসরকালীন যে সুবিধা, তা তাদের টাকা। এগুলো তাদের ন্যায্য দাবি। তিনি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন।
“অবসর ভাতা না দেওয়া অত্যন্ত অনৈতিক। কিন্তু তাদের ভাতা এক বছরের বাজেটের ওপর চাপিয়ে সমাধান করা যাবে না। আমরা অনেকভাবে চেষ্টা করছি। যেমন বন্ডের মাধ্যমে একটা ফান্ড তৈরির চেষ্টা করছি। আগামী বছর থেকে সেটা শুরু হতে পারে।”
প্রকাশ করা সূচি অনুযায়ী, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে ১০ এপ্রিল। বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার মাধ্যমে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে ১৩ মে।