“একজন আইনজীবীর দেওয়া একটি অভিযোগের (আজিজ আহমেদের ভাইদের বিষয়ে) সত্যতা যাচাইয়ের জন্য দুই ডিপার্টমেন্টে পাঠিয়ে দিয়েছি”, বলেন তিনি।
Published : 10 Jun 2024, 06:25 PM
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের দুই ভাইয়ের ‘মিথ্যা তথ্যে ই-পাসপোর্ট ও এনআইডি জালিয়াতি’র অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে বলা হয়েছে জানিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘এতে আজিজ আহমেদের দোষ নেই।’
তবে অভিযোগ দুটি খতিয়ে দেখতে নির্বাচন কমিশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার দুদকের সংবাদ সংগ্রহে নিয়োজিত গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশনের (র্যাক) সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন মঈন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, “একজন আইনজীবীর দেওয়া একটি অভিযোগে বলা হয়েছে, তার (আজিজ আহমেদ) দুই ভাই মিথ্যা তথ্য দিয়ে ই-পাসপোর্ট নিয়েছেন। এটা আজিজের দোষ না, তার দুই ভাই এবং পাসপোর্ট ডিপার্টমেন্টের লোক জড়িত।
“দ্বিতীয় অভিযোগ হল, (তারা) ন্যাশনাল আইডি কার্ড নিয়েছেন। এগুলোর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য দুই ডিপার্টমেন্টে পাঠিয়ে দিয়েছি।”
সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ‘দুর্নীতির’ বিষয়ে অনুসন্ধান চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান সম্প্রতি দুদকে আবেদন করেছেন।
এতে লেখা হয়, “আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। এতে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে।
“জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। দেশের সাধারণ জনগণের সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস ক্ষুণ্ন করেছে।”
এ আইনজীবী বলছেন, “এত বড় অভিযোগ প্রকাশিত হওয়ার পরও দুর্নীতি দমন কমিশন অনুসন্ধানের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি; এটি দুদকের নিষ্ক্রিয়তা।”
আইনজীবী সালাহ উদ্দিন রিগ্যান সাংবাদিকদের বলেন, “পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তিনি (আজিজ) ভুয়া তথ্য দিয়ে ই পাসপোর্ট করতে সহায়তা করেছেন এবং জাল এনআইডি তৈরি করতে প্রভাব বিস্তার করেছেন।
“আমরা বলছি না যে উনি দুর্নীতি করেছেন কী করেননি। বলেছি বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হউক আসলে ঘটনা কী। তখন সত্যিটা বেরিয়ে আসবে।”
২০১৮ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত তিন বছর বাংলাদেশের চিফ অব আর্মি স্টাফ ছিলেন জেনারেল আজিজ আহমেদ। তার আগে ২০১২ সাল থেকে চার বছর বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির নেতৃত্ব দেন।
গত ২০ মে এক মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জেনারেল আজিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানিয়ে বলা হয়, দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে আজিজ আহমেদ এবং তার পরিবারের সদস্যরা সাধারণভাবে ‘যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অযোগ্য’ বিবেচিত হবেন।
দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির ওই অভিযোগ ‘অসত্য’ বলে পরদিন দাবি করেন আজিজ আহমেদ। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধান হিসেবে বা সেনাপ্রধান হিসেবে তিনি কোনো দুর্নীতি করেছেন- এমন প্রমাণ করতে পারলে ‘যে কোনো পরিণতি’ তিনি মেনে নেবেন।
এর মধ্যে দৈনিক প্রথম আলো বেশ কিছু প্রতিবেদন ছাপে। এতে বলা হয়, আজিজ আহমেদের দুই ভাই হারিছ আহমেদ ও তোফায়েল আহমেদ জোসেফ তাদের নাম পাল্টে জাতীয় পরিচয়পত্র করেছেন। পাশাপাশি তাদের ছবিও পাল্টেছেন। এসব পরিচয়পত্রে বাবার নামও পাল্টানো হয়েছে। এরপর সেই ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ই পাসপোর্ট নিয়েছেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী ছবি পাল্টানোর আবেদনে সুপারিশ করেছেন আজিজ আহমেদ নিজেই। তবে পত্রিকাটির প্রশ্নে তিনি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
প্রতিবেদনে পরে বলা হয়, আজিজের দুই ভাইয়ের মতো তার স্ত্রীরাও একইভাবে ভুয়া তথ্যে ই পাসপোর্ট নিয়েছেন।
আরও পড়ুন...
আজিজ আহমেদের ভাইদের 'এনআইডি জালিয়াতি' তদন্তে কমিটি
আজিজ আহমেদের নিষেধাজ্ঞা'ব্যক্তিগত দায়ে':পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জেনারেল আজিজের ওপর নিষেধাজ্ঞা:যা বললেন দুই মন্ত্রী
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে'পরিণতি'মেনে নেব:জেনারেল আজিজ
আজিজ আহমেদের'দুর্নীতির'অনুসন্ধান চেয়ে দুদকে আইনজীবী
আজিজ ও বেনজীরকে নিয়ে যা বললেন ওবায়দুল কাদের
বেনজীরের বিষয়ে তদন্ত করছে দুদক,আজিজেরও করতে পারে:কাদের
বঙ্গবন্ধুর খুনি মোসলেমের সন্তানদের বাবার নামবদল,তদন্ত শুরু
হারিছ চৌধুরীর রেড নোটিশ সরাতে'মৃত'প্রমাণের দায়িত্ব পরিবারের:সিআইডি