“অনেকে ভাবছে, বেনজীর আহমেদের বাড়ি তো টুঙ্গীপাড়া, সে ক্ষমা পেতে পারে। অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হবে।”
Published : 28 May 2024, 07:56 PM
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ দুদকের তদন্ত করার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দুদক সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগও তদন্ত করতে পারে।
মঙ্গলবার বিকালে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ বিরুদ্ধে দুদক তদন্ত করছেন। আরো তদন্ত হবে। মামলা হলে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। কোনো অপরাধী শাস্তি ছাড়া পার পাবে না।
“অনেকে ভাবছে, বেনজীর আহমেদের বাড়ি তো টুঙ্গীপাড়া, সে ক্ষমা পেতে পারে। অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হবে। বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুদক স্বাধীন তদন্ত করেছে। দুদককে এই স্বাধীনতা শেখ হাসিনা সরকার দিয়েছে।”
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “যিনি সেনাবাহিনীর প্রধান ছিলেন, তিনিও যদি অপরাধী হন, তার বিরুদ্ধেও দুদক তদন্ত করতে পারে। অপরাধী হলে শাস্তি পেতে হবে।”
দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় আছেন সাবেক পুলিশ প্রধান বেনজীর আহমেদ ও সোবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ।
দুর্নীতির অভিযোগে আজিজ আহমেদের ওপর নিষেদ্ধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর বেনজীরের বিরুদ্ধে বিপুল সম্পদ অর্জনের খবর প্রকাশের পর অনুসন্ধানে নামে দুদক। পরে তার ও পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা বিপুল জমি, ফ্ল্যাট জব্দ এবং ব্যাংক ও বিও হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেয় আদালত।
মঙ্গলবারের সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, “আজিজ, বেনজীর ইস্যুতে সরকার বিব্রত নয়। কারণ, সরকারের বিচার করার সৎ সাহস আছে। সরকার তাদের অপরাধ অস্বীকার করে পার পেয়ে যাবার সুযোগ দেয়নি। দুর্নীতি রোধের ব্যাপারে সরকারপ্রধান আপসহীন।
“প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা সারাবিশ্বে একজন সৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত এবং বাংলাদেশে তার জনপ্রিয়তার মূলে তার সততা ও পরিশ্রম। সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবসময় ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।”
কাদের বলেন, “ফখরুল এবং বিএনপি নেতারা এখন কথায় কথায় সাবেক আইজিপির দুর্নীতির কথা বলেন। তাদের আমলে সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা, তার বিচার কি করেছে তারা? রফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার প্রাণনাশের সঙ্গে জড়িত, এর বিচার কি বিএনপি করেছে? এসপি কহিনূর, যার হাতে কত রাজনৈতিক কর্মী নির্যাতিত হয়েছে, অন্তঃসত্ত্বা নারী পর্যন্ত রাজপথে মিছিল করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তার নির্যাতন, দুর্নীতির কথা ঢাকা শহরের মানুষের মুখে মুখে। তার বিচার কি হয়েছে? তাদের আমলে যেসব নেতাকর্মী দুর্নীতি করেছে, হাওয়া ভবনের দুর্নীতি- এসবের বিচার কি তারা করেছে?”
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এদেশে পঁচাত্তর পরবর্তীকালে একমাত্র ক্ষমতাসীন রাজনীতিক, যিনি অপরাধীকে নিজের দলের লোক হলেও ক্ষমা করেন না। এর প্রমাণ তিনি রেখেছেন। বুয়েটে আবরার হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছাত্রলীগের কর্মীদের কি ছাড় দেয়া হয়েছে? বিশ্বজিতের কথা সবার জানা আছে।”
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিএনপি নিজেদের অপরাধকে ঢাকার জন্য অপপ্রচার করছে এবং অপরাধীদের ক্ষমা করেছে। তাদের আমলে অপরাধীদের কোনোদিন শাস্তি পেতে হয়নি।”
এ সময় উপকূলীয় এলাকায় বাঁধ ভাঙা এবং টেকসই বাঁধ নির্মাণ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, “জলোচ্ছ্বাসের মুখে সব জায়গায় বাঁধ টিকে থাকবে সেটার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে না। যুক্তরাষ্ট্রের চারটি অঙ্গরাজ্যে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। ইচ্ছা হলেই কি এটিকে রোখা যায়?
“জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝড় এবং ঝড়ের গতির মাত্রাও বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরশু (আগামী বৃহস্পতিবার) ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকা পটুয়াখালী পরিদর্শনে যাবেন। সময় পেলে খুলনায়ও যেতে পারেন।”
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, উপ প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম ও উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।