২০২৫ সালের মধ্যে ১০ লাখ ৬৫ হাজার আর্সেনিকমুক্ত পানির উৎস স্থাপন করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
Published : 11 Jun 2024, 07:57 PM
দেশের ১১ ভাগ মানুষ আর্সেনিক দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ইউনিসেফের যৌথ জরিপ প্রতিবেদন মাল্টিপল ইনডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে, ২০১৯ এর তথ্য উল্লেখ করে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।
সোমবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তরে নোয়াখালী-২ আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের প্রশ্নে এ তথ্য জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।
আর্সেনিকের কবল থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর আওতায় ২০২৫ সালের মধ্যে ১০ লাখ ৬৫ হাজার আর্সেনিকমুক্ত পানির উৎস স্থাপন করা হবে।
“এক্ষেত্রে গভীর নলকূপ ছাড়াও পাইপের মাধ্যমে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা এবং পুকুর খনন ও পুনঃখননসহ সৌরচালিত পন্ড স্যান্ড ফিল্টার স্থাপন করা হবে। এতে ২০২৫ সালের মধ্যে আর্সেনিক দূষণ ঝুঁকি ৫-৬ ভাগে নেমে আসবে।”
সংরক্ষিত মহিলা আসনের সরকার দলীয় এমপি ফরিদুন্নাহার লাইলীর প্রশ্নে তাজুল ইসলাম ‘ঢাকা মশক নিবারণী দপ্তরের’ বিদ্যমান সাংগঠনিক কাঠামো সংশোধন করে একটি পূর্ণাঙ্গ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানান।
তিনি বলেন, ঢাকা মশক নিবারণী দপ্তরের বিদ্যমান সাংগঠনিক কাঠামো পরিবর্তন করে নতুন জনবল সৃষ্টি, যন্ত্রপাতি ও মানসম্মত কীটনাশক কেনার পাশাপাশি কীট পরীক্ষার জন্য একটি স্থায়ী ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হবে।
স্বতন্ত্র এমপি খসরু চৌধুরীর প্রশ্নে মন্ত্রী জানান, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের কারণে ড্রোনের মাধ্যমে মশার প্রজনন কেন্দ্র চিহ্নিত করে কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে।
“সিটি করপোরেশনের সকল ওয়ার্ডে প্রতিদিন লার্ভিসাইডিং এবং এডাল্টিসাইডিং করা হয়। এছাড়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর বাড়ি পরিদর্শন ও এর চারপাশে লার্ভিসাইডিং এবং এডাল্টিসাইডিং করা হয়ে থাকে। ড্রোনের মাধ্যমে মশার প্রজনন ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিত করে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়।”
তিনি জানান, ডেঙ্গুর হটস্পটগুলোতে বিশেষভাবে নজরদারি করা হয়। মশক নিধন কর্মীদের নিয়মিত উপস্থিত নিশ্চিত করার জন্য বায়োমেট্রিক হাজিরা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, স্কাউট, জনপ্রতিনিধি ও ইমামগণকে সম্পৃক্ত করে বিশেষ মশক নিধন অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সরকার দলীয় এমপি শফিউল আলম চৌধুরীর প্রশ্নে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী জানান, দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনে এডিপির ডেঙ্গু মোকাবেলা ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের জন্য এ অর্থবছরে ৩২ কোটি এবং পৌরসভায় ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন সহায়তা খাতের আওতায় ইউনিয়নের অনগ্রসরতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলার জন্য ১০০ কোটি টাকা সংস্থান রাখা হয়েছে।
শফিউল আলম চৌধুরীর আরেক প্রশ্নে তাজুল ইসলাম বলেন, শিশুর জন্মের পরপরই জন্ম নিবন্ধন দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। এছাড়া, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন-২০০৪ (সংশোধিত, ২০১৩) এর ধারা-৮। (১) অনুযায়ী শিশুর পিতা বা মাতা বা অভিভাবক বা নির্ধারিত ব্যক্তি শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম সংক্রান্ত তথ্য নিবন্ধকের কাছে দিতে বাধ্য থাকবেন।
তিনি জানান, হাসপাতালে শিশুর জন্মের পরপরই হাসপাতাল থেকে নিবন্ধকের কার্যালয়ে জন্ম নিবন্ধনের জন্য ই-নোটিফিকেশন দেওয়া হয়। প্রাপ্ত তথ্য এবং ই-নোটিফিকেশন অনুযায়ী নিবন্ধক (সিটি করপোরেশনের মেয়র, পৌরসভার মেয়র বা তদ্বীয়কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ক্যান্টনমেন্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) নিবন্ধন শেষ করেন।
শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে কোনো ফি ছাড়াই জন্ম নিবন্ধন করা হয় থাকে বলে জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।