এসব হাটবাজার, স্থাপনা ও নসিমন-করিমনের মত যানবাহন অপসারণে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ নয়, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করা হয়েছে।
Published : 16 Jan 2024, 12:10 PM
জনসাধারণের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে সারাদেশে মহাসড়কের লাগোয়া হাটবাজার ও স্থাপনার পাশাপাশি নসিমন-করিমনের মত যানবাহন তিন মাসের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
সেই সঙ্গে এসব হাটবাজার, স্থাপনা ও নসিমন-করিমনের মত যানবাহন অপসারণে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ নয়, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে।
এক আইনজীবীর করা রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রুল জারি করে।
জনস্বার্থে রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম বদরুল ইসলাম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, সারা দেশে মহাসড়কগুলোতে নানা প্রকার স্থাপনা থাকায়, চলমান নির্মাণ ও সংস্কার কাজ ঠিক সময়ে শেষ না হওয়ায় জনগণের ভোগন্তি চরমে পৌঁছেছে।
“মহাসড়ক-সড়কে থাকা এসব অবৈধ স্থাপনা, হাটবাজার, ভটভটি, নসিমন-করিমনের মত যানবাহন তিন মাসের মধ্যে অপসারণ করে আদালতে ‘কমপ্লায়েন্স’ দিতে বলেছে।
“একই সঙ্গে এসব অপসারণে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না তা জানতে রুল জারি করে চার সপ্তাহের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিআরটিএ ও হাইওয়ে পুলিশের প্রধানকে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।”
রিটকারী পক্ষে এদিন শুনানি করেন আইনজীবী এস এম বদরুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ ও আনিচ উল মাওয়া।
২০২১ সালের মহাসড়ক আইন অনুযায়ী, মহাসড়কের ওপর বা নিয়ন্ত্রণ রেখার মধ্যে হাটবাজারসহ কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণের সুযোগ নেই। কিন্তু বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে সারা দেশেই মহাসড়কের ওপর এবং নিয়ন্ত্রণ রেখার মধ্যে গড়ে উঠেছে অসংখ্য হাটবাজার।
হাটবাজারগুলো ইজারা দেওয়া হয় মহাসড়ক থেকে ২০০-৩০০ ফুট দূরে বসানোর শর্তে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, এসব হাটবাজার ক্রমেই মহাসড়কের কাছে চলে আসে। আবার কোথাও কোথাও হাটবাজারগুলো মহাসড়ক থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরত্বে স্থাপনের জন্য ইজারা নিলেও সেগুলো বসানো হয় মহাসড়কের সংরক্ষণ রেখার মধ্যে।
হাইওয়ে পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বিভিন্ন মহাসড়কে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা স্থায়ী ও অস্থায়ী হাটবাজারের সংখ্যা আড়াইশর বেশি। এসব হাটবাজারে আসা নসিমন, করিমন ও পণ্যবাহী বিভিন্ন যানবাহনের কারণে যানজট তীব্র আকার ধারণ কর। মাঝেমধ্যেই ঘটে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।
মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণ রেখা কতটুকু তা ২০২১ সালের মহাসড়ক আইনে নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে। সেখানে বলা হয়েছে, মহাসড়কের দুই পাশের ভূমির প্রান্তসীমা থেকে ১০ মিটার বা সরকার কর্তৃক গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নির্ধারিত রেখাই হবে নিয়ন্ত্রণ রেখা।
মহাসড়ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ সম্পর্কিত একটি উপধারায় বলা হয়েছে, সরকারের অনুমোদন ব্যতীত মহাসড়কের সংরক্ষণ রেখার মধ্যে কোনো অবকাঠামো নির্মাণ, হাটবাজার বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে মহাসড়কের কোনো অংশ ব্যবহার করা যাবে না।
মহাসড়কে নসিমন, করিমন ভাটভটিসহ তিনচাকার যান চলাচল বন্ধের জন্য উচ্চ আদালত এরআগে বহুবার নির্দেশনা দিয়েছে, কিন্তু রাস্তা থেকে সেগুলো সরানো যায়নি। বাংলাদেশে মহাসড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে এসব তিন চাকার বাহনকে দায়ী করা হয়।
পুরনো খবর
২০২৩ সালে সড়কে ঝরেছে ৭,৯০২ প্রাণ
কুমিল্লা অঞ্চলে সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনার যত কারণ