দশ সদস্যের তদন্ত সংস্থায় সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাজহারুল হককে।
Published : 18 Sep 2024, 10:36 PM
পুলিশের সাবেক দুইজন ও চাকরিরত আটজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা পুনর্গঠন করা হয়েছে।
দশ সদস্যের তদন্ত সংস্থায় সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাজহারুল হক। সহ সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার শহিদুল্যাহ চৌধুরী।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে অবসরে যাওয়া দুই কর্মকর্তাকে দুই বছরের জন্য এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
অপরদিকে প্রেষণে নিয়োজিত কর্মকর্তারা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তদন্ত সংস্থায় কর্মরত থাকবেন।
এ প্রজ্ঞাপনে মাধ্যমে তদন্ত পুনর্গঠনের মাধ্যমে এটির ‘জনবল নিয়োগ, অন্তর্ভূক্তকরণ ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের বিষয়ে’ আগের সব আদেশ বাতিল করা হয়েছে।
নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত দুইজন হলেন- অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাজহারুল হক ও পুলিশ সুপার শহিদুল্যাহ চৌধুরী।
আর বর্তমানে কর্মরত কর্মকর্তারা হলেন-পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আলমগীর, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহা. মনিরুল ইসলাম, পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জানে আলম খান, ট্রাফিক অ্যান্ড ড্রাইভিং স্কুলের সহকারী পুলিশ সুপার সৈয়ফ আব্দুর রউফ, সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. ইউনুস, রাজশাহীর চারঘাট থানার পরিদর্শক মো. মাসুদ পারভেজ, ঢাকার আরআরএফ এর পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ আলমগীর সরকার ও সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. মশিউর রহমান।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্টের অধীনে পরিচালিত বিচার অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে তদন্ত কাজ সম্পাদন ও প্রসিকিউশনকে সহায়তা করবেন।
ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে গঠিত এ ট্রাইব্যুনালেও পরিবর্তন আসছে।
শেখ হাসিনার সময়ে নিয়োগ পাওয়া প্রধান প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলীসহ ট্রাইব্যুনালের ১৩ জন প্রসিকিউটর পদত্যাগ করেন অগাস্টের তৃতীয় সপ্তাহে। ট্রাইব্যুনালও পুনর্গঠন করা হবে বলে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানিয়ে রেখেছেন।
পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নতুন করে ঢেলে সাজানোর অংশ হিসেবে ৫ সেপ্টেম্বর প্রধান প্রসিকিউটরের দায়িত্ব দেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলামকে।
তার সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আরও চার আইনজীবীকে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ দেয়। তারা হলেন-মো. মিজানুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ ও আব্দুল্লাহ আল নোমান।
স্বাধীনতার ৩৯ বছর পর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়; আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০১০ সালের ২৫ মার্চ।
২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুটিকে একীভূত করে আবার একটি ট্রাইব্যুনাল করা হয়। এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ নামে একটি ট্রাইব্যুনালে বিচারকাজ চলছে।
এ আদালত থেকে এ পর্যন্ত ৫১ মামলার রায় এসেছে; দণ্ডিত ১৩১ আসামির মধ্যে ৯১ জনকে দেওয়া হয়েছে মৃত্যুদণ্ড।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কয়েকশ মৃত্যুর ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ কয়েক ডজন মানুষের বিরুদ্ধে বিচারের জন্য এ ট্রাইব্যুনালে এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম