আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি বরাবর অভিযোগ তিনটি দাখিল করা হয় বলে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম তথ্য দিয়েছেন।
Published : 17 Sep 2024, 10:32 PM
আন্দোলনের মধ্যে গুলিতে হত্যা ও আহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১১০ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তিনটি অভিযোগ জমা পড়েছে।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি বরাবর অভিযোগ তিনটি দাখিল করার তথ্য দেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম।
শেখ হাসিনাসহ ৬০ জনকে আসামি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন আন্দোলনের সময় নিহত মোহাম্মদ সাব্বির ইসলাম সাকিবের বাবা মো. শহিদুল মল্লিক।
সাকিবের মৃত্যুর বিষয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “সাকিব খুলনা থেকে ঢাকায় আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছিল। বাইরে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে সে ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেয়। ১৯ জুলাই উত্তরা-৭ নম্বর সেক্টরে সে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়।”
আরেকটি অভিযোগ দায়ের করেছেন গুলিতে আহত মোহাম্মদ মমিনুল ইসলাম মারজান।
অভিযোগে মারজান বলেছেন, গত ১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়েতে উত্তরা-পূর্ব থানার বিএনএস সেন্টারের সামনে তাকে গুলি করা হয়। এতে তিনি মারাত্মক আহত হন এবং তার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এই ঘটনায় তিনি শেখ হাসিনাসহ ২৭ জনকে আসামি করে অভিযোগটি দায়ের করেছেন।
তৃতীয় অভিযোগটি দায়ের করেন মোহাম্মদ হায়াতুল্লাহর বাবা মো. সিরাজুল ইসলাম।
অভিযোগে তিনি বলেন, ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর বিকাল ৪টায় গাজীপুরের কালিয়াকৈরের শফিপুর আনসার ভিডিপি একাডেমির সামনে মোহাম্মদ হায়াতুল্লাহ তার বড় ভাই সোহাগ মিয়ার সঙ্গে আনন্দ মিছিল করছিলেন। তখন ওই আনন্দ মিছিলে পুলিশ এবং আনসার বাহিনী গুলি করলে মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। গুলিতে সেখানে অনেক হতাহত হয়। তখন ভিকটিমকে পাওয়া যায়নি।
ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের সহায়তায় ঢাকায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে হায়াতুল্লাহর লাশ গত ১৬ অগাস্ট পাওয়া যায় বলে অভিযোগে বলা হয়।
ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে শেখ হাসিনাসহ ২৩ জনকে আসামি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দিয়েছেন সিরাজুল ইসলাম।
জুলাইজুড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ধারায় সরকার পতন আন্দোলন শুরু হয়; ৫ অগাস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যা পরিণতি পায়। পালিশে যায় শেখ হাসিনা, উল্লাসে ফেটে পড়ে আন্দোলনকারীরা। সেদিন বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, থানায় হামলা হয়; গুলি চালায় পুলিশ, যাতে ছাত্র-জনতার অনেকে নিহত হন।