“৪২ হাজার কেন্দ্র, তিন লাখ বুথে একজন মানুষের পক্ষে বিভাজিত হয়ে কোটি কোটি হয়ে যেটা ফেরেস্তারা পরে, আমরা পারব না।”
Published : 13 Oct 2023, 12:09 AM
ভোটের মাঠে ভারসাম্য আনতে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা চান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল; তার ভাষায়, নির্বাচন হচ্ছে ‘খেলা’। এখানে ভালো না খেলে জেতার আশা করা কঠিন।
প্রার্থীদের ভোটকক্ষে পোলিং এজেন্ট দেওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, “সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতে কমিশন মনিটরিং করবে এবং অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবে। আমি কিন্তু ওখানে বসে আপনার ঘর পাহারা দিতে পারব না।
“৪২ হাজার কেন্দ্র, তিন লাখ বুথে একজন মানুষের পক্ষে বিভাজিত হয়ে কোটি কোটি হয়ে যেটা ফেরেস্তারা পরে, আমরা পারব না। আমাদের সেই ঈশ্বরিক শক্তি নেই, মানবিক শক্তি নিয়ে যতটা আমাদের পক্ষে সম্ভব আমরা মনিটর করব, পর্যবেক্ষণ করব, পরিবীক্ষণ করব।”
বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে তৃণমূল বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে কথা বলছিলেন সিইসি।
তিনি বলেন, “আপনারা জানেন, (নির্বাচনের সময়) সরকার ক্ষমতায় থাকবে। অনেকে দুঃশ্চিন্তায় থাকে, সরকার কি আসলে নিরপেক্ষ হবে কি না। না; সাংবিধানিকভাবেই সরকার সেই নিরপেক্ষ সহায়তা দিতে বাধ্য। আমাদেরকে লার্জলি ডিপেন্ড করতে হবে জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা বাহিনীর উপর।”
রাজনীতিবিদ, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের কাছে ইসির প্রত্যাশার কথাও জানান হাবিবুল আউয়াল।
তিনি বলেন, “আপনাদের দায়িত্বের কথা আগে বলব- ইটস আ গেইম। ইফ ইউ ডোন্ট প্লে ওয়েল, তাহলে কিন্তু জেতার প্রত্যাশা করা কঠিন। আপনাদের সকলকে, যারাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, অবশ্যই আপনার সেখানে এজেন্ট দিতে হবে।”
রাজনীতির মাঠে নিজের অভিজ্ঞতা দেখানোর পরামর্শ দিয়ে সিইসি বলেন, “যারা রাজনীতিবিদ, রাজনীতি বিষয়ে আপনাদের অভিজ্ঞতা বেশি। কি করে রাজনীতির মাঠে নিরপেক্ষতা সৃষ্টি করতে হয়, কীভাবে প্রতিপক্ষকেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়, নিশ্চয় সেই অভিজ্ঞতা আছে, না থাকলে থাকতে হবে।”
আর সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরির বিষয়ে তিনি বলেন, “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ভঙ্গ করছেন অভিযোগ এলে প্রশয় দেব না, সে আশ্বাস দিচ্ছি। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতিটি ভোটকক্ষে এজেন্ট থাকবে। এজেন্ট যদি ঠিকভাবে নিয়োগ করা হয়, তারা সাহসী ও শক্ত হয়ে দাঁড়ান, আপনার বিপক্ষে অনাচার করা কঠিন হয়ে পড়বে।
“অনেক সময় অভিযোগ আসে একেবারেই এজেন্ট নেই। তাড়িয়ে দেওয়া হলে নির্ভরযোগ্য এভিডেন্সহ প্রিজাইডিং ও রিটার্নিং অফিসার হয়ে আমাদের নলেজে সেটা আসতে হবে। এক্ষেত্রে প্রার্থীকে ভূমিকা রাখতে হবে।”
প্রার্থীর এজেন্টকে কেন্দ্র না ছাড়ার পরামর্শ দেন সিইসি। তিনি বলেন, “পেশী শক্তিকে যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে জনগণের যে ভোটাধিকার, সেটা অবশ্যই ব্যহত হতে পারে। কিন্তু আমরা বলব, সাহসিকতার সাথে চেষ্টা করতে হবে পোলিং এজেন্টেদের, নিজেদের পোলিং এজেন্টদের নিয়োগ দেবেন, কঠিনভাবে ট্রেনিং দেবেন। পোলিং এজেন্ট এক মুহূর্তর জন্য সেন্টার ছেড়ে যাবে না। সে কলা চিড়া কিনে ভেতরে ঢুকবে। দুপুরে আরেকটা পানির বোতল কিনে কেন্দ্রে ঢুকবে। ক্ষুধা লাগলেও সেখানে থাকবে, মুহূর্তের জন্য সেন্টার ছেড়ে যেতে পারবে না।”
আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনীর টহলও ভোটে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন সিইসি।
তিনি বলেন, “আপনারা আর্মির কথা বলেছেন। এর আগে যে ডায়ালগগুলো হয়েছে সেখানে প্রতিটা দলই আর্মির কথা বলেছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, সেনাবাহিনির উপস্থিতি একান্তই কাম্য। জনগণ আর্মির উপর আস্থা রাখতে চায়। তারা যে দায়িত্ব পালন করেন, ডমিনেশন ইয়ে (টহলের মাধ্যমে) করেন. সেটারও ইতিবচাক দিক থাকবে।”