দাবি পূরণ না হলে সারা দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়াসহ ঢাকা অভিমুখে লং মার্চ করার হুমকি দিয়েছে পল্লী বিদ্যুতের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন।
Published : 17 Oct 2024, 07:52 PM
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অপসারণ এবং সমিতির চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাদের পুনর্বহালসহ তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন আন্দোলনরত কর্মীরা।
ওই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে সারা দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়াসহ ঢাকা অভিমুখে লং মার্চ করার হুমকি দিয়েছে তারা।
ওই কর্মসূচি শুরুর আগেই বৃহস্পতিবার নেত্রকোণাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার খবর এসেছে। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দলের বৈঠক চলছে।
বৃহস্পতিবার সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পল্লী বিদ্যুতের আন্দোলনকারী কর্মীদের তরফে বলা হয়, চলতি বছরের শুরু থেকে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং সকল চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের দুই দফা দাবি আদায়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আন্দোলন চলছে।
“আন্দোলনের যৌক্তিকতা বুঝে সরকারের বিদ্যুৎ বিভাগ আরইবি সংস্কারকে সময়ের দাবি হিসেবে উল্লেখ করে সমস্যার যৌক্তিক সমাধানের জন্য গত ১ অগাস্ট ১৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দেয়। ইতোপূর্বে ওই কমিটির চারটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে দফায় দফায় সভা হলেও সরকারের সংস্কার উদ্যোগে আরইবির প্রত্যক্ষ অসহযোগিতার কারণে কমিটি চূড়ান্ত সুপারিশ প্রণয়ন করতে সক্ষম হয়নি।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দাবি আদায়ে পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা নানা কর্মসূচি পালন অব্যাহত রেখেছেন। এর মধ্যে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি উপস্থাপন, গ্রাহক সেবা ও বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রেখে গত মে মাসে পাঁচ দিন এবং জুলাই মাসে ১০ দিন কর্মবিরতি, অগাস্টে ‘লং মার্চ টু আরইবি’ এবং এরপর ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটামে ‘গণছুটি ঘোষণা’র পর জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনায় কর্মসূচি প্রত্যাহারও করা হয়।
এরপরে সারাদেশে একযোগে ডিসি অফিস ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন, স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিতকরণের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বরাবর একাধিকবার স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলমান প্রেক্ষাপটে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে, ওই মামলায় বৃহস্পতিবার কয়েকজন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার এবং ১০ জন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়।
“এ অবস্থায় দায়িত্ব গ্রহণের পর একটি নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন না করে আরইবির চেয়ারম্যান (আরইবির প্রতি) পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে দেশের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে ভুল তথ্য উপস্থাপন এবং সেনাবাহিনীর ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে অস্থিতিশীল করাতে প্রত্যক্ষ মদদ দিচ্ছে।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অপসারণ ও সমিতির কর্মকর্তাদের চাকরি অবসানের আদেশ ও মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
“অন্যথায় ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণাসহ দুই দফা দাবি আদায়ে ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ঢাকা অভিমুখে লং মার্চ করতে বাধ্য হবে।”
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন পল্লী বিদ্যুতের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চার সমন্বয়ক। তারা হলেন- এজিএম (ওঅ্যান্ডএম) আব্দুল হাকিম, এজিএম (ওঅ্যান্ডএম) মো. সালাহউদ্দিন, ডিজিএম আসাদুজ্জামান ভুঁইয়া এবং প্রকৌশলী রাজন কুমার বিশ্বাস (এজিএম- ইঅ্যান্ডসি)।
তাদের অভিযোগের বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এস এম জিয়া-উল-আজিমের বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।