বৈঠকে মোদী সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ছিলেন, আরো ছিলেন বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী।
Published : 06 Aug 2024, 01:39 PM
প্রবল গণ আন্দোলন আর সহিংসতার মধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য সর্বদলীয় বৈঠক করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
এনডিটিভি জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভারতের পার্লামেন্টে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সভাপতিত্বে এই বৈঠক হয়।
সেখানে বাংলাদেশের বর্তমান সহিংস পরিস্থিতি এবং এই পরস্থিতি ঘিরে সম্ভাব্য নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ভারত সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো নিয়ে সব দলের নেতাদের অবহিত করেন জয়শঙ্কর।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংসহ অনেকে। এছাড়া বিরোধী দল কংগ্রসের নেতা রাহুল গান্ধী, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়রাও অংশ নেন বৈঠকে।
এনডিটিভি বলছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমর্থন দেওয়ার প্রশ্নে এবং বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে, তা নিয়ে কেন্দ্রের কৌশল ঠিক করতে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
জয়শঙ্কর বলেন, “বিরাজমান এই পরিস্থিতিতে সরকার যথা সময়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।“
ভারত সরকার বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বলেও জানান তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত হয়ে ‘সমর্থন দেওয়ায়’ বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতাদের ধন্যবাদ জানান জয়শঙ্কর।
বৈঠক শেষে এক টুইটে জয়শঙ্কর লিখেছেন, “বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সংসদে একটি সর্বদলীয় বৈঠক হয়েছে।”
Briefed an All-Party meeting in Parliament today about the ongoing developments in Bangladesh.
Appreciate the unanimous support and understanding that was extended. pic.twitter.com/tiitk5M5zn
— Dr. S. Jaishankar (@DrSJaishankar) August 6, 2024
এর আগে সোমবার রাতে বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠক করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন, ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের প্রিন্সিপাল সচিব পিকে মিশ্র, ‘র’-এর প্রধান রবি সিনহা এবং গোয়েন্দা বিভাগের (আইবি) পরিচালক তপন ডেকা।
বৈঠকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি বিষয়ে মোদীকে অবহিত করা হয়।
বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের পর সোমবার সীমান্তে সতর্কতা জারি করেছে ভারত। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ট্রেন চলাচলও বন্ধ রয়েছে।
এদিকে সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে আন্দবাজার লিখেছে, পদত্যগোর পর শেখ হাসিনা যে বিমানে করে সোমবার ভারতে পৌঁছেছিলেন, মঙ্গলবার সকালে তা পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশে উড়ে গিয়েছে।
সকাল ৯টা নাগাদ বিমানটি দিল্লির কাছে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের হিন্ডন এয়ারবেস থেকে উড়োজাহাজটি রওনা দেয়। কিন্তু সেটি কোথায় গিয়েছে, সেখানে শেখ হাসিনা ছিলেন কী না, তা স্পষ্ট নয়।
The C-130J transport of the Bangladesh Air Force took off from the Hindon air base in the morning today around 9 AM and is moving towards its next destination. Indian security agencies are monitoring it closely: Sources
— ANI (@ANI) August 6, 2024
তবে সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স লিখেছে, শেখ হাসিনা এখনও ভারতেই আছেন।
পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যাওয়া শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়েছেন বলে সোমবার খবর দেয় ভারতের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম।
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে সোমবার দুপুরে পদত্যাগ করে ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে একটি সামরিক বিমানে চড়ে ভারতে যান শেখ হাসিনা।
সোমবার ভারতের স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ৩৬ মিনিটে দিল্লির ৩১ কিলোমিটার দূরে হিন্ডন বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান।
বিমানঘাঁটিতে শেখ হাসিনাকে গ্রহণ করেন বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা এয়ার অফিসার কমান্ডিং (এওসি) সঞ্জয় চোপড়া। সেখানে ভারতের বিমান বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় এয়ার কমান্ড চিফ এয়ার মার্শাল পিএম সিনহাও দেখা করেন শেখ হাসিনার সঙ্গে।
আনন্দবাজার লিখছে, শেখ হাসিনা লন্ডনে যেতে চাইলেও সেখান থেকে এখনও সবুজ সংকেত মেলেনি। ব্রিটেন ‘না’ করে দিলে ইউরোপে থাকতে চান তিনি। অন্য কোন দেশে আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে, আপাতত ভারতে থেকেই তা বিবেচনা করে দেখছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।
পুরনো খবর