“তিনটি দাবির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। কোনো নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়নি। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরব না,” বলেন মুজাহিদুল।
Published : 10 Feb 2025, 12:53 AM
শূন্য পদে নিয়োগ ও সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নতুন পদ তৈরিসহ কয়েকটি দাবিতে আন্দোলনে নামা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।
সোমবার দুপুর ১২টার মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে তারা অনশনে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে রোববার রাতে সাধারণ ম্যাটস শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, রাতেও তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে থাকবেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে তিন দিন সময় নিয়েছে। তবে অন্য তিনটি দাবির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। কোনো নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়নি।
“তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে যাব না। রাতেও শহীদ মিনারে অবস্থান করব এবং সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করব। যদি এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হয়, তাহলে আমরা আমরণ অনশনে যাব।”
দাবিদাওয়া নিয়ে রোববার বেলা ১১টার দিকে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনের সড়কে অবস্থান নেন ম্যাটস শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হওয়ার সড়কটি বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুরে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা তুহিন ফারাবি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে শাহবাগে যান। পরে আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নিয়ে সচিবালয়ে আলোচনার জন্য যান।
সেখান থেকে প্রতিনিধিরে ফেরার আগেই শাহবাগে অবস্থানরত অন্য শিক্ষার্থীরা লংমার্চ নিয়ে সচিবালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। শিক্ষাভবন এলাকায় গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
আন্দোলনকারীদের নেতা মুজাহিদুল ইসলামের ভাষ্য, পুলিশের আক্রমণে সবমিলিয়ে ১২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন ৬০ জন।
হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, “পুলিশ আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।”
দেশে ১৬টি সরকারি ম্যাটসে প্রতি বছর ১ হাজার ৮২ জন এবং ৫১টি বেসরকারি অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলে ৪ হাজার ৪৯০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পান। এসব ট্রেনিং স্কুল থেকে তিন বছরের কোর্স সম্পন্ন করলে শিক্ষার্থীরা ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি ডিগ্রি পান। পরে তারা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান।
ম্যাটস শিক্ষার্থীরা সরকারি/বেসরকারি পর্যায়ে নতুন পদ তৈরি, অবিলম্বে দশম গ্রেডে শুন্য পদে নিয়োগ, চার বছরের অ্যাকাডেমিক কোর্স বহাল রেখে কারিকুলাম সংশোধন ও ভাতাসহ এক বছরের ইন্টার্নশিপ, প্রস্তাবিত ‘অ্যালায়েড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড’ বাতিল করে ‘মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ নামে বোর্ড গঠন এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও বিএমঅ্যান্ডডিসি স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষার সুযোগের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন।
দাবি আদায়ে এর আগে গত ২২ জানুয়ারি তারা শাহবাগে সড়ক অবরোধ করেন।
আরও পড়ুন-
ম্যাটস শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ