বৌভাতের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে রাজশাহীতে পদ্মায় বর-কনেসহ দুটি নৌকা ডুবে এক শিশু নিহত হওয়ার পর আরও পাঁচজনের লাশ পাওয়া গেছে। এছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন তিনজন।
Published : 07 Mar 2020, 08:20 PM
রাজপাড়া থানার ওসি শাহাদত হোসেন জানান, শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এই পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
তারা হলেন মনি খাতুন (৩০), একলাস আলী (২২), রতন আলী (৩০), কনের চাচা শামীম হোসেন (৩৫) ও শামীমের মেয়ে রেশমা খাতুন (৭)।
এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা হলো ছয়। নৌকাডুবির পর মরিয়ম (৫) নামে এক শিশুকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলেও সেখানে তার মৃত্যু হয়।
নিখোঁজরা হলেন পবা উপজেলার ডাইঙ্গেরহাট গ্রামের শাহীন আলীর মেয়ে (বিয়ের কনে) সুইটি খাতুন, পূর্ণিমা (২০), কনের ফুফাত বোন রুবাইয়া খাতুন (১৩) এবং খালা আঁখি খাতুন (২৫)।
এ ঘটনায় আহত আরও পাঁচজনকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় পবা উপজেলার চরখিদিরপুর এলাকায় পদ্মায় ৩৬ জন যাত্রী নিয়ে দুটি নৌকা ডুবে যায়।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলামকে প্রধান করে এই ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।
খবর পেয়ে সিটি মেয়র ও রাজশাহী-৩ আসনের এমপিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান বলে তিনি জানান।
তদন্তে নেমে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আবু আসলাম বলেন, দুই নৌকায় ধাক্কা, নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়া ও ওই সময় ঝড় বাতাসের কারণে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। এতে তারা নড়াচড়া করলে নৌকায় পানি উঠে যায়। এছাড়াও লাফিয়ে এক নৌকার যাত্রী অন্যটিতে উঠতে গেলে দুটি নৌকাই ডুবে যায়।
“তবে ওই সময় ওই দিক দিয়ে একটি বালুবাহী বোর্ড যাচ্ছিল। তারা অনেককে উদ্ধার করেছে। বরসহ বাকিরা সাঁতার কেটে পাড়ে ওঠেন।”
বর-কনের স্বজনদের উদ্ধৃতি দিয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আসলাম জানান, দুই মাস আগে চরখানপুরের মৃত ইনছার আলীর ছেলে আসাদুজ্জামান রুমনের (২৫) সঙ্গে পবা উপজেলার ডাইঙ্গেরহাট গ্রামের শাহীন আলীর মেয়ে সুইটি খাতুন পুর্ণির (২০) (নিখোঁজ) বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়। বৃহস্পতিবার বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। শুক্রবার ছেলের বাড়িতে ছিল বৌভাত। সেখান থেকে অনুষ্ঠান শেষে কনের বাড়ি ফিরছিল তারা।
তিনি বলেন, এই নৌকাডুবির ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সকাল থেকে তদন্ত শুরু করেছে। এছাড়াও পদ্মাপাড়ে নিখোঁজ ও হতাহতের অনুসন্ধান এবং উদ্ধার কার্যক্রম সমন্বয়ে কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
নিহতের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এবং সরকার আহতের চিকিৎসা ব্যয় বহন করবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, ডুবে যাওয়া দুই নৌকায় ৩৬ জন যাত্রী ছিল। এর মধ্যে ১৭ জন নারী ও ছয় জন শিশু। সন্ধ্যায় চরখিদিরপুর ও শ্রীরামপুর এলাকার সীমানায় মাঝ পদ্মায় নৌকা দুটি ডুবে যায়।