গাইবান্ধায় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি আব্দুল কাদের খানসহ সাত আসামির সবার ফাঁসির রায় দিয়েছে আদালত।
Published : 28 Nov 2019, 11:02 AM
গাইবান্ধার জেলা ও দায়রা জজ দিলীপ কুমার ভৌমিক বৃহস্পতিবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
এরা হলেন- তার একান্ত সহকারী মো. শামছুজ্জোহা, গাড়িচালক আবদুল হান্নান, গৃহকর্মী মেহেদি হাসান, দূর সম্পর্কের ভাগ্নে ও বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক শাহীন মিয়া, সাবেক পোশাকশ্রমিক আনোয়ারুল ইসলাম রানা ও পলাতক চন্দন কুমার রায়।
মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত অপর আসামি কসাই সুবল চন্দ্র রায় কারাগারে অসুস্থ হয়ে মারা যান।
মামলার বাদি লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকলী বুলবুল রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তা দ্রুত কার্যকর করার দাবি জানান।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর শফিকুল ইসলাম বলেন, দ্রুত এই রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে এই রকম একটি জঘন্য ঘটনার কলঙ্কমুক্ত হতে চায় সুন্দরগঞ্জবাসী।
“বাকি ছয় আসামি ‘গরিব হওয়ায়’ তারা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আপিল করবেন।”
২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের শাহবাজ গ্রামের মাস্টারপাড়ার বাড়িতে লিটনকে গুলি করা হয়।
আশংকাজনক অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। সেখানেই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মারা যান তিনি।
এঘটনায় অজ্ঞাত পাঁচ-ছয়জনের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন লিটনের বড় বোন ফাহমিদা কাকলী। তদন্ত শেষে কাদেরসহ আটজনের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
সেখানে বলা হয়, ২০১৫ সালের শেষ দিকে এমপি লিটনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আব্দুল কাদের খান। লিটনকে সরিয়ে ভোটের রাজনীতির পথ সুগম করতেই এমন চক্রান্ত করেন সাবেক সাংসদ কাদের।
বিভিন্ন দফায় ভাড়াটে খুনিদের ১০ লাখ টাকা দেন কাদের খান। হত্যাকাণ্ডে তিনটি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে দুটি অস্ত্র অবৈধ।
এরপর কয়েক দফা তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। প্রথম রিমান্ডে থাকা অবস্থার চতুর্থ দিনের মাথায় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে লিটন হত্যার দায় স্বীকার করেন আব্দুল কাদের খান।
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়। মামলার বাদী, নিহতের স্ত্রী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ মোট ৫৯ জন এ মামলায় সাক্ষ্য দেন।
বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার পর বেলা ১২টার দিকে আদালতে উপস্থিত ছয় আসামিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। রায় শেষে আবার তাদের নিয়ে যাওয়া হয় কারাগারে।
একই ঘটনায় অস্ত্র মামলার রায়ে গত ১১ জুন আব্দুল কাদের খানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। এছাড়া অস্ত্র মামলায় পৃথক এক ধারায় তাকে ১৫ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পুরনো খবর