নতুন অর্থবছরের শুরুর দিন বাজেটের নথি ছিঁড়ে তা প্রত্যাখ্যান করলেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা।
Published : 01 Jul 2020, 02:55 PM
দলটির পাঁচজন সংসদ সদস্য বুধবার সংসদ ভবনের বাইরে মানিক মিয়া এভিনিউয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন।
মঙ্গলবার সংসদে পাস হয় ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে দেওয়া এবার বাজেট অধিবেশন ছিল অন্যবারের চেয়ে ভিন্ন।
নির্দিষ্ট সংখ্যক আইনপ্রণেতা তালিকা মেনে সংসদের বাজেট অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন। বাজেট আলোচনাও হয়েছে খুবই সংক্ষিপ্ত। বিএনপির একমাত্র হারুনুর রশীদ বাজেটের বিভিন্ন কার্যক্রমে যোগ দিয়েছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের হারুনুর রশীদ ছাড়াও বগুড়া-৪ আসনের মোশাররফ হাসেন, বগুড়া-৬ আসনের গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের আমিনুল ইসলাম এবং সংরিক্ষত আসনের রুমিন ফারহানা ‘বাজেট প্রত্যাখ্যান’ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
সেখানে লিখিত বক্তব্যে রুমিন ফারহানা বলেন, “বাজেট অধিবেশন সংসদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশন। এই অধিবেশনে দীর্ঘ আলোচনার মাধ্যমে বাজেটের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ জাতির স্বার্থেই খুব জরুরি। করোনাকালীন স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেট অধিবেশন অতি সংক্ষিপ্ত করতে চেয়েছে সরকার। আমাদের পক্ষ থেকে এই অধিবেশন ডিজিটাল বা ভার্চুয়ালি করার প্রস্তাব দিলেও তা গ্রহণ করা হয়নি।”
রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে ভার্চুয়ালি বাজেট অধিবেশন করার প্রস্তাব দেওয়ার কথা জানিয়ে বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন, “গৃহপালিত বিরোধী দল নয়, একটা সত্যিকারের বিরোধী দলের পক্ষ থেকে দেওয়া ভার্চুয়াল সংসদ অধিবেশন চালানোর এ রকম প্রস্তাব গ্রহণ করা সরকারের ফ্যাসিস্ট ইগোকে আহত করে নিশ্চয়, তাই বলা বাহুল্য, আমার দেওয়া প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়নি।
“কিন্তু সরকার যেটুকু জেদ দেখানোর চেষ্টা করেছে, সেটুকুও শেষ পর্যন্ত আর পেরে ওঠেনি। ১৫ জুন অনির্ধারিতভাবে ২৩ জুন পর্যন্ত বর্তমান অধিবেশন মুলতবি করে মাত্র এক দিন (২৩ জুন) বাজেটের সাধারণ আলোচনা করা হয়েছে; এটা অকল্পনীয়।”
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, “আমাদের বিশ্বাস, করোনার মত ভয়ঙ্কর একটা সঙ্কটে যে যাচ্ছেতাই বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে, সেটার সমালোচনা এড়ানোর জন্যই অধিবেশন সংক্ষিপ্ত করে তড়িঘড়ি করে শেষ করতে চেয়েছে সরকার।”
তাদের অভিযোগ, রাষ্ট্রের ৯০ শতাংশ নাগরিকের কল্যাণের কথা, মহামারীতে মানুষকে চিকিৎসা দিয়ে, ভরণপোষণ দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার কথা এ বাজেটে ‘আসেনি’।
“একটা অনির্বাচিত, জনগণের কাছে ন্যূনতম জবাবদিহিতাহীন, আমলাচালিত, ক্রোনি ক্যাপিটালিস্ট সরকারের কাছে এমন বাজেটই প্রত্যাশিত। এই বাজেট আমরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি।”
বিএনপির এমপি হারুনুর রশীদ বলেন, “সংসদে আমাকে খুব অল্প সময় বাজেটের ওপর বক্তৃতার সুযাগ দেওয়া হয়েছিল। বাজেটের শেষ পর্যায়ে স্পিকার আমার মাইক বন্ধ করে দিয়েছিলেন। মাত্র একজন বিরোধী দলের সদস্য, বাকি সবাই মহাজোটের শরিক।
“সত্যিকার অর্থে জনগণের সঙ্কট সংসদে প্রতিফিলিত হয় না। সারা বিশ্ব আজ সঙ্কটে। দেশে যারা সঙ্কট নিরসনে পরামর্শ দিচ্ছেন, তাদের তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা হচ্ছে। এই সংসদে স্বাস্থ্য খাতের বেহাল দশা নিয়ে সর্বপ্রথম আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়েছি।”
সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে সবসময় ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স’ নীতির কথা বলা হলেও বাস্তবে তা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন হারুন।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় একটি ‘রোডম্যাপ’ করার পাশাপাশি আবারও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর অপসারণ করে ‘যোগ্য লোককে’ দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান হারুন।