আসামের নিষিদ্ধ সংগঠন উলফার এক যোদ্ধাকে ভালোবেসে কয়েক বছর আগে জন্মভূমি ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছিলেন বাংলাদেশি তরুণী সান্ত্বনা।
Published : 21 Sep 2014, 07:48 PM
তবে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আসাম পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এখন কারাগারে দিন কাটছে তার।
আইনি জটিলতার কারণে ভীনদেশি তরুণের সঙ্গে সান্ত্বনার ঘর বাঁধার স্বপ্নও এখন হুমকির মুখে। তাকে মুক্ত করতে প্রেমিক বাবরুবাহান রাবহা আদালতের দ্বারস্থ হয়েও ব্যর্থ হয়েছেন।
আসাম পুলিশ জানায়, সান্ত্বনা মুক্ত হয়ে দেশে ফিরতে চাইলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ নিয়ে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।
আসামের যুবক রাবহা রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আসাম লিবারেশন আর্মির (উলফা) যোদ্ধা। আসামের পশ্চিমাঞ্চলীয় গোয়ালপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাবহা ২০১০ সালে নিষিদ্ধ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফায় যোগ দেন। এর পরেই প্রশিক্ষণের জন্য যান বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে।
সেখানে সান্ত্বনার সঙ্গে তার পরিচয়-প্রেম গড়ে উঠে। গত বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে প্রশিক্ষণ শেষে ফেরার সময় প্রেমিকা সান্ত্বনাকে আসামের গোয়ালপাড়ায় নিয়ে যান রাবহা।
সীমান্ত পাড়ি দেয়ার কিছুদিন পরই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে প্রেমিক যুগল। তাদেরকে রাখা হয় কোকড়াঝাড়ের একটি কারাগারে।
অবৈধ অনুপ্রবেশের ঘটনায় সান্ত্বনার বিরুদ্ধে গোয়ালপাড়া জেলার কৃষ্ণাই থানায় মামলা দায়ের করে পুলিশ।
ওই বাংলাদেশি তরুণী ১৯৫০ সালের পাসপোর্ট আইন ভঙ্গ করে ভারতে প্রবেশ করেছেন বলে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
অবশ্য নিষিদ্ধ সংগঠন উলফার সঙ্গে সান্ত্বনার কোনো যোগাযোগ নেই বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
প্রেমিকার মুক্তি চেয়ে সম্প্রতি গোহাটির উচ্চ আদালতে আবেদন করেন ওই উলফা যোদ্ধা। তবে সেই আবেদন নাকচ করে সান্ত্বনাকে বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠাতে গত বছরের ১৪ জানুয়ারি আসাম সরকারকে নির্দেশ দেয় আদালত।
সান্ত্বনার বাড়ি চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলার বোওয়াসারি গ্রামে। পার্বত্য ওই এলাকায় ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর কর্মীদের আসা-যাওয়া রয়েছে।
সান্ত্বনার পরিচয় নিশ্চিত করতে বাংলাদেশে তার শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসাম পুলিশ। ওই তরুণীকে ফেরৎ নিতে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে অনুরোধও পাঠায় তারা।
তবে পুলিশ এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে জানা গেছে। আসাম সরকারের একজন কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি এখন সরকারেরও মাথাব্যথার কারণ। ঢাকার পক্ষ থেকে সান্ত্বনাকে ফিরিয়ে নেয়ার আগ্রহ কম থাকায় আদালতের ওই নির্দেশ বাস্তবায়নও কঠিন হয়ে পড়েছে।