হরিবংশ রাই বচ্চন হিন্দি ভাষার কবি (২৭ নভেম্বর ১৯০৭- ১৮ জানুয়ারি ২০০৩)। তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক পদ্মভূষণ সম্মাননা পান। তার কবিতার কিছু বই হলো- ‘মধুশালা’, ‘মধুকলস’, ‘হলাহল’, ‘নিশা নিমন্ত্রণ’ ও ‘আকুল অন্তর’ ইত্যাদি।
Published : 31 Dec 2022, 01:08 PM
সচরাচর, মাটিতেই বসে পড়ি
কারণ, আমি বিলক্ষণ জানি
মাটিই আমার প্রকৃত আসন।
সমুদ্রের কাছ থেকে শিখেছি
আমার যাপন-শৈলী
নিঃশব্দে মনের আনন্দে বয়ে চলা।
এমন নয় যে আমার মধ্যে কোনো ত্রুটি নেই
তবে সত্যি বলছি, আমার মধ্যে
কোনো কপটতা নেই।
আমার ধরন দেখে শত্রুরা হিংসেয় জ্বলে যায়
কারণ এক জীবনে আমি আমার
বন্ধু ও ভালোবাসা, কোনোটিই বদলাইনি।
সামান্য একটা ঘড়ি কিনে
মণিবন্ধে বেঁধেছি কি বাঁধিনি
সময় আমাকে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করেছে।
ভেবেছিলাম ঘর বানিয়ে নিশ্চিন্তে বসবাস করবো
নিয়তির পরিহাস এমন, গৃহস্থালীর-প্রয়োজন
আমাকে পথিক বানিয়ে ছেড়েছে।
শান্তির কথা আর বলো না হে গালিব
সেই ছেলেবেলার মতো অমল ‘রোববার’
আর কখনোই আসবে না।
শখ আহ্লাদ তো কেবল
মা-বাবার টাকাতেই মেটানো সম্ভব
নিজের টাকায় শুধু, প্রয়োজনটুকুই মেটে।
প্রাত্যহিক ব্যস্ততায় জীবনের রং উড়ে যায়
একদিন আনন্দমুখর জীবনও
ক্রমে নিস্তরঙ্গ হয়ে যায়।
একটা সময় ছিল যখন
ঠোঁটে হাসি নিয়েই ঘুম ভাঙত, আর এখন
কতদিন না হেসেই পার হয়ে যায়।
সম্পর্কের উদযাপনে এতদূর চলে এসেছি
স্বজনকে পেতে গিয়ে,
নিজেকেই হারিয়ে ফেলেছি।
লোকে বলে, আমি নাকি আমুদে ভারি
আসলে কি জানো, যন্ত্রণা লুকোতে গিয়ে
আমি বড় ক্লান্ত হয়ে পড়ি।
বন্ধু, পারলে তো এ দুনিয়াই বদলে দিই
কিন্তু দুবেলার রুটিরুজির জোগাড়েই
দিন ফুরিয়ে যায়।
দামি থেকে আরও দামি ঘড়ি পরে দেখেছি
এ সময় কখনোই আমার
মনমতো চলেনি।
এমনই মানুষ মন পরিষ্কার রাখার কথা বলে
জানতাম না, দাম যদি কিছুর থাকে
তো সে কেবল চেহারারই।
যদি ঈশ্বর বলে আদৌ কিছু নেই, তাহলে
তার কথা বলাই বা কেন! আর
যদি তিনি থাকেন, তাহলে আর ভাবনা কিসের!
দুটি বিষয় মানুষকে নিজের কাছেই পর করে দেয়,
এক তার অহঙ্কার আর অন্যটি
তার ভ্রান্তি।
বন্ধু, টাকা দিয়ে কখনো সুখ কেনা যায় না
আর দুঃখ এমনই যে
তার কোনো খদ্দেরই হয় না।
জীবন সম্পর্কে তেমন কোনো
গভীর অনুভব আমার নেই, তবে শুনেছি,
মানুষ মানুষকে সহজতায় বাঁচতে দেয় না।
অন্যের ভুলভ্রান্তির হিসাব করতে যেয়ো না
মাথার ওপর সৃষ্টিকর্তা আছেন,
তুমি আর হিসাব করতে যেয়ো না।
ঈশ্বর তো আছেনই
তুমি আর খামোকা
হিসাব করো না।
কিডজ ম্যাগাজিনে বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা [email protected] সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!