নির্মাণের পর সাড়ে পাঁচ বছরে মেরামত হয়নি, ইট বসিয়ে চলছে জোড়াতলির মেরামত। বৃষ্টি এলেই তা উঠে গিয়ে হচ্ছে বড় বড় গর্ত। তা ডিঙিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন।
Published : 09 Jul 2021, 11:35 PM
সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রামের অক্সিজেন-কুয়াইশ (বঙ্গবন্ধু এভিনিউ) সড়কটির এই বেহাল দশা থেকে শিগগিরই মুক্তি মিলছে না।
শুষ্ক মৌসুম এলে তবেই কার্পেটিং করবে সড়ক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।
সাড়ে পাঁচ বছর আগে নির্মাণ কাজ শেষ হলেও সড়কটি এখনো চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) কাছে হস্তান্তর করেনি সিডিএ। ‘বাজেট না থাকায়’ রক্ষণাবেক্ষণও করতে পারছে না তারা।
এর মধ্যেই আবার ৬০ ফুট চওড়া সড়কটি ১২০ ফুটে উন্নীত করতে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছে সিডিএ।
চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়কের অক্সিজেন মোড় থেকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ককে কুয়াইশ অংশে যুক্ত করেছে সড়কটি। উত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা ও পার্বত্য জেলা থেকে নগরীতে প্রবেশ না করে উত্তরের অন্যান্য উপজেলা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামে যাতায়াতের জন্য সড়কটি বাইপাস হিসেবে ব্যবহার হয়।
সড়কের অক্সিজেন মোড়, কয়লার ঘর, নয়াহাট, ওয়াজেদিয়া ও কুয়াইশ অংশে বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অনন্যা আবাসিক এলাকা, এভায়কেয়ার হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। সড়কের দুপাশে জনবসতি আছে।
কয়লার ঘর এলাকার রিডার্স স্কুল এন্ড কলেজের কর্মকর্তা ইশতিয়াক আল মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই সড়কে ফ্রোবেল একাডেমি, লিবারেল আর্টস, হলি চাইল্ড, অফবিট, অক্সিজেন স্কুলসহ প্রায় ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। রাস্তাটি নির্মাণের পর থেকেই শুরু হয় বিভিন্ন সরকারি সংস্থার খোঁড়াখুঁড়ি।
“এখন বর্ষায় সড়কের কার্পেটিং উঠে গিয়ে খুব খারাপ দশা। করোনার কারণে হয়ত স্কুল বন্ধ। কিন্তু স্কুল যখন খোলা ছিল তখন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা খুব ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করত। এখন এলাকার মানুষ ভোগান্তিতে আছে। সড়কের বেশিরভাগ অংশে ড্রেন না থাকায় আশেপাশের প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে পানি ঢুকে যায়।”
২০১৬ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধন হওয়া সড়কটি ২০১৮ ও ২০১৯ সালে দুবার কাটে চট্টগ্রাম ওয়াসা। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পানি শোধনাগার থেকে নগরীতে পাইপ লাইন নিতে সড়কটি কাটা হয়।
“রাস্তার পাশে নালা থাকলেও পানি নামার ব্যবস্থা নেই। একারণে বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমে। তারপর গর্ত হয়ে যায়। প্রতি বর্ষায় এরকম দেখছি।”
অনন্যা আবাসিক এলাকাসংলগ্ন সড়কের উভয় পাশ তুলনামূলক ভালো। তবে সেখানেও গর্ত দেখা গেছে। আর কুয়াইশ অংশে পূর্ব পাশের পুরো সড়কটিই ভেঙে গেছে।
“এই রাস্তা দিয়ে বালি, কয়লা, লোহাসহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে ভারি গাড়ি চলে। তাই এ অবস্থা।”
সড়কের দুর্দশা নিয়ে জানতে চাইলে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাস্তাটি নির্মাণের পর সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। এটা সেসময়ের চেয়ারম্যান মহোদয়ের সিদ্ধান্ত। এর মধ্যে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে দুবার ওয়াসা পাইপ লাইন নিতে রাস্তার দুপাশেই কেটেছে। আমরা মেরামতও করেছি। সড়কটি ধরে উভমুখী পণ্যবাহী ভারি যানবাহনও চলাচল করে নিয়মিত।
নগরীর আটটি সড়ক সম্প্রসারণে সিডিএ উদ্যোগ নিচ্ছে জানিয়ে কাজী হাসান বিন শামস জানান, একটি প্রকল্পের অধীনে সবগুলো রাস্তা সম্প্রসারণ করা হবে। এজন্য সম্ভাব্যতা যাচাই চলছে। এই সড়কটি চওড়ায় দ্বিগুণ অর্থাৎ ১২০ ফুট করা হবে। তখন পুরো সড়কের দুপাশে নালা রাখার বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে।