চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) বেহাত সম্পত্তি উদ্ধার করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
Published : 13 Aug 2020, 10:17 PM
বৃহস্পতিবার অস্থায়ী নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে সিসিসির রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই নির্দেশনা দেন।
সভায় সুজন বলেন, “দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান আমার। নগরীতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে সিসিসির বেহাত সম্পত্তি উদ্ধার করুন।
“আমার মেয়াদকালীন সময়ে কেউ দুর্নীতি করে পার পাবে না। আমি যদি নিজে দুর্নীতি করি তাহলে আমাকে কেন আপনারা সুযোগ দেবেন। আপনাদেরও দায়িত্ব আছে।”
চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের চিত্র দেখে প্রশাসক অসন্তোষ প্রকাশ করে আগামী এক মাসের মধ্যে রাজস্ব আদায় বাড়াতে এবং নগরীর সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন।
এরআগে বুধবারই রাজস্ব বিভাগের ২৪ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি করেন সুজন।
বৃহস্পতিবার সভায় রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনাদের উপরই সিসিসির আর্থিক সঙ্গতি নির্ভরশীল। বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্সসহ আয় সংশ্লিষ্ট খাতসমূহকে শক্তিশালী করতে রাজস্ব বিভাগে কর্মরতদের ভূমিকা অপরিসীম।”
রাজস্ব আদায়কারীদের মধ্যে যারা লক্ষ্য অর্জন ও আয়বর্ধক কাজে অবদান রাখবেন, তাদের পুরস্কৃত করা হবে বলেও জানান তিনি।
সভায় সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দোহা, সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম, প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, রাজস্ব কর্মকর্তা সাহেদা পারভীন, সহকারী এস্টেট অফিসার আবদুল্লাহ আল মামুন, কর কর্মকর্তা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার নগরীর প্রবেশপথ সিটি গেট থেকে অলংকার মোড় পর্যন্ত এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে সিসিসির স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) জাহানারা ফেরদৌস ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলীর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানে অলংকার মোড়ে অবৈধ দুটি দোকান ও নির্মাণাধীন স্থাপনা উচ্ছেদ করে রাস্তা ও ফুটপাতের জায়গা অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়।
ওই সড়কে থেকে যাওয়া আরও কিছু অবৈধ দোকানপাট ২৫ অগাস্টের মধ্যে সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
তা না করলে সিসিসি উচ্ছেদ করবে এবং উচ্ছেদের সমস্ত ব্যয়ভার জরিমানা হিসেবে আদায় করা হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয় স্থাপনা মালিকদের।
ওয়ার্ড তদারকে ৩ কর্মকর্তা
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডের দাপ্তরিক কাজ ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তদারকির জন্য উপ-সচিব মর্যাদার তিন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা এই আদেশের বিষয়টি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেন।
দায়িত্ব প্রাপ্ত তিন কর্মকর্তা হলেন, সিসিসি’র সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া এবং প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম।
আদেশে বলা হয়, সিসিসির পঞ্চম পরিষদের মেয়াদ ৫ অগাস্ট শেষ হওয়ায় ওয়ার্ড সমূহে নির্বাচিত কাউন্সিলর দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নসহ যাবতীয় কাজ তদারকি এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সনদ প্রদান করবেন এই তিন কর্মকর্তা।
এতে সিসিসি পরিচালনায় সহায়ক পরিষদ নিয়োগের সম্ভবনা কমল।
তবে সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সহায়ক পরিষদ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে যে চিঠি লেখা হয়েছিল তার নির্দেশনা আসলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আপাতত এই তিনজন দায়িত্ব পালন করবেন।”
এদের মধ্যে সচিব আবু শাহেদ চৌধুরী ২৯ থেকে ৪১ নম্বর ওয়ার্ড, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সুমন বড়ুয়া ১৫ থেকে ২৮ নম্বর ওয়ার্ড এবং প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মুফিদুল আলম ১ থেকে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কার্যক্রম তদারকি করবেন।