সূর্যমুখী তেল ঘোষণা দিয়ে প্রায় পাঁচ বছর আগে বলিভিয়া থেকে আনা ৩৭০ লিটার কোকেন ধ্বংস করা হয়েছে।
Published : 05 Feb 2020, 03:06 PM
বুধবার পতেঙ্গায় র্যাব-৭ এর সদর দপ্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের উপস্থিতিতে এই কোকেন মাটিচাপা দেওয়া হয়।
র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক মাশকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রায় নয় হাজার কোটি টাকা মূল্যের ৩৭০ লিটার কোকেন মাটিচাপা দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
“আদালতের নির্দেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পরিবশে অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে কোকেনগুলো ধ্বংস করা হয়।”
বলিভিয়া থেকে মেসার্স খান জাহান আলী লিমিটেডের নামে আমদানি করা সূর্যমুখী তেলবাহী কনটেইনারটি জাহাজে তোলা হয় উরুগুয়ের মন্টেভিডিও বন্দর থেকে। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে ২০১৫ সালের ১২ মে পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে।
আদালতের নির্দেশে ওই চালানের কন্টেইনারটি খুলে ১০৭টি ড্রাম থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। প্রথমে বন্দরের পরীক্ষায় এসব নমুনায় কোকেনের উপস্থিতি না মেলায় ঢাকার বিসিএসআইআর এবং বাংলাদেশ ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবরেটরিতে তরলের নমুনা পুনরায় পরীক্ষা করা হয়। দুই পরীক্ষাগারেই নমুনায় তরল কোকেনের অস্তিত্ব ধরা পড়ে।
বন্দরে আটক ১০৭টি ড্রামের মধ্যে ৫৯ ও ৯৬ নম্বর ড্রামে পরীক্ষায় তরল কোকেন পাওয়া যায়। দুটি ড্রামে ১৮৫ লিটার করে মোট ৩৭০ লিটার কোকেন ছিল।
“তারপরও এটা আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী এবং কাস্টম সবাই মিলে চালানটি জব্দ করা হয়। চালানটি শনাক্ত করা হয়। এতে যে কোকেন মিশ্রিত রয়েছে সেটাও প্রমাণ হয়। হওয়ার পরে যথারীতি মামলা শুরু হয়।”
কোকেন উদ্ধারের ঘটনায় র্যাবের ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি।
কোকেন চেরাচালানের ঘটনায় জড়িত বেশিরভাগকেই শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে জিানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “তাদের উপযুক্ত শাস্তি তারা পাবেন এই মাদক চালানের জন্য।”
কোকেনের চালান আনায় জড়িতদের বিষয়ে অনুষ্ঠানে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমদ বলেন, “দেশিয় চক্র এবং বিদেশি চক্র উভয়েই চিহ্নিত। তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হবে। এরমধ্যে দুজন আছে প্রবাসী যুক্তরাজ্য অধিবাসী। তারা ওখানেই থাকে।
“ওই দুইজনকেও আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সাকসেসফুল হতে পারিনি। এটা আন্ত:রাষ্ট্রীয় প্রটোকলের বিষয়। এ দুজন ছাড়া বাকিদের আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তারা সবাই জেলে আছে।”
“কোকেনের নমুনা আদালতের মালখানায় সংরক্ষণ করা আছে। মামলার কার্যক্রম পরিচালনায় কোনো অসুবিধা হবে না। সিএমএম আদালতের নির্দেশে আমরাও কোকেন ধ্বংস প্রক্রিয়ায় উপস্থিত হয়েছি।”
শুদ্ধি অভিযান চলবে
দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন শুদ্ধি অভিযান চলবে এবং অব্যাহতভাবেই চলবে, যে পর্যন্ত আমরা আমাদের টার্গেটে না যেতে পারি।
“তবে শুদ্ধি অভিযান চালানোর আগে আমরা সুনিশ্চিত হয়ে সে অভিযান পরিচালনা করছি। ভবিষ্যতে যে শুদ্ধি অভিযানের আওতায় আসবে সুনিশ্চিতভাবে আইডেনটিফাই করেই তাকে আমরা ধরব।”
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী মাদকবিরোধী অভিযানও চলবে বলে জানান তিনি।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান, ফরিদুল হক খান, পীর ফজলুর রহমান ও এম এ লতিফ, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান।
উপস্থিত ছিলেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের পক্ষে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু ছালেহ মোহাম্মদ নোমান, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মজিবুর রহমান পাটোয়ারী।