চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে বৃহস্পতিবার এই অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ধারায় এটি দেওয়া হয়েছে বলে তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (দক্ষিণ) মো. কামরুজ্জামান জানিয়েছেন।
গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান খান, কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন) এ কে আজাদ ও মোস্তফা কামালকে আসামি করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।
অন্য আসামিরা হলেন সূর্যমুখী তেল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল, সিঅ্যান্ডএফ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, আইটি বিশেষজ্ঞ মেহেদী আলম, যুক্তরাজ্যের নাগরিক ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া।
এদের মধ্যে যুক্তরাজ্যের নাগরিক ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া পলাতক এবং সাইফুল ইসলাম বুধবার উচ্চ আদালতের জামিন নিয়ে কারাগার থেকে ছাড়া পান।
তদন্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলীর মালিক নূর মোহাম্মদের জড়িত থাকার প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ৭ জুন চট্টগ্রাম বন্দরে থাকা একটি কনটেইনার আটক করে সিলগালা করে দেয় শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তর। পরে পরীক্ষা করে এতে তরল কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
বন্দর কর্মকর্তারা জানান, বলিভিয়া থেকে আমদানি করা সূর্যমুখী ভোজ্যতেলবাহী কনটেইনারটি জাহাজীকরণ হয় উরুগুয়ের মন্টিভিডিও বন্দর থেকে। সেখান থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে গত ১২ মে কনটেইনারটি এসে পৌঁছায় চট্টগ্রাম বন্দরে।
এ ঘটনায় ২৮ জুন চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানায় খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর ও কর্মকর্তা সোহেলকে আসামি করে মাদক আইনে একটি মামলা করে পুলিশ ।
পরে আদালত মামলায় চোরাচালানের ধারা যুক্ত করার নির্দেশ দেয়। তবে এই ধারায় অভিযোগপত্র এই দফায় দেওয়া হয়নি।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) নির্মলেন্দু বিকাশ চক্রবর্ত্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মামলায় প্রায় ৪০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
“মাদক আইনে ৯০ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকায় প্রথমে এই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। অধিকতর তদন্ত শেষে চোরাচালান আইনে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে,” বলেন তিনি।
বাংলাদেশে এভাবে কোকেন আনার ঘটনা এটাই প্রথম বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এই কোকেন ভারতে যাচ্ছিল বলে তাদের ধারণা।