কক্সবাজারে পাহাড়ি টিলায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে আবাস গাঁড়া রোহিঙ্গাদের সমতল ভূমিতে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান।
Published : 18 Mar 2018, 08:29 PM
রোববার মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে একথা জানান তিনি।
গত বছরের অগাস্টে মিয়ানমারে দমন অভিযানের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের টেকনাফে আশ্রয় নিয়ে আছেন।
টিলার উপর গাছ কেটে অনেক রোহিঙ্গা বসতি স্থাপন করায় বনভূমি যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি বর্ষায় এসব টিলা কিংবা ছোট পাহাড়ে ভূমিধসের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের নিরাপদে সরিয়ে আনার পরিকল্পনার বিষয়ে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারের কাছে জানতে চান নজিবুর রহমান।
মান্নান বলেন, “রোহিঙ্গারা যেসব স্থানে বাস করছে, সেগুলো নরম মাটির পাহাড়ি টিলা। তাদের সমতল ভূমিতে সরিয়ে আনতে জেলা প্রশাসকদের বলা হয়েছে এবং কাজ শুরু হচ্ছে।”
ভিডিও কনফারেন্সের মুখ্য সচিবের সঙ্গে আলাপের পাশাপাশি বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা নাগরিকদের চিহ্নিতকরণ সংক্রান্ত বিভাগীয় কমিটির সভাও অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে চট্টগ্রামের উপ-বন সংরক্ষক জগলুল হোসেন জানান, রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য ৫ হাজার ১৩ দশমিক ১০ একর জায়গা ব্যবহার করা হচ্ছে।
“রোহিঙ্গাদের আবাসস্থল তৈরির কারণে টাকার অঙ্কে ২১৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকার সামজিক বনায়ন, ১৯৭ কোটি ৪০ লাখ টাকার প্রাকৃতিক বনায়ন ও ৪১১ কোটি ৬৮ লাখ টাকার জীব বৈচিত্র্য ক্ষতি হয়েছে।”
বিভাগীয় কমিশনার মান্নান বলেন, বিদেশি এনজিওগুলোর কারণে রোহিঙ্গারা বেশি বনভূমি উজাড় করছে।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর উপরও প্রশাসন নজর রাখছে বলেও মুখ্যসচিবকে জানান তিনি।
মান্নান সভায় বলেন, “দেশি এনজিওগুলোর চেয়ে বিদেশি এনজিওগুলো বেশি তৎপর। তারা রোহিঙ্গাদের স্থান দেখিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু তারা আমাদের স্থানীয় লোকজন ও ভূমির যে ক্ষতি হচ্ছে, তা দেখছে না।”
বৈঠকে চট্টগ্রামে দায়িত্বরত স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-পরিচালক আবুল কাশেম রোহিঙ্গাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন রোগ বালাই এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান।
মুখ্য সচিবের সঙ্গে আলোচনায় রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর ভাসানচরে স্থানান্তরের বিষয়ে কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন বিভাগীয় কমিশনার।
নজিবুর দুটি কমিটির গঠনে আগ্রহ প্রকাশ করেন। কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য যাচাই-বাছাই করতে একটি এবং ভাসানচরে তাদের গ্রহণ করার জন্য আরেকটি কমিটি গঠনের কথা বলেন তিনি।