প্রায় ১১ বছর পর টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়ে ফাওয়াদ আলম কাজে লাগাতে পারেননি মোটেও। তার পরও হতাশ নন পাকিস্তানের এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। বরং টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরির চেয়েও তাকে বেশি তৃপ্তি দিয়েছে এতদিন পর দলে ফিরতে পারাটাই।
Published : 15 Sep 2020, 11:01 AM
২০০৯ সালে টেস্ট অভিষেকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৬৮ রানের দারুণ ইনিংস খেলেছিলেন ফাওয়াদ। ওই সিরিজে পরের টেস্টে ভালো করতে পারেননি। পরে ওই বছরের নভেম্বরে নিউ জিল্যান্ড সফরে এক টেস্টে সুযোগ পেয়ে পারফর্ম করতে না পারায় জায়গা হারান দলে। অভিষেকের দুর্দান্ত ইনিংসের পরও তিন টেস্টে থমকে যায় তার ক্যারিয়ার।
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করতে থাকেন ফাওয়াদ। মৌসুমের পর মৌসুম ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্টে রানের বন্যা বইয়ে দেন। সুযোগ তবু আসে না। তিনি হাল না ছেড়ে পারফর্ম করে যান। অবশেষে আবার টেস্ট খেলার সুযোগ পেলেন গত মাসে, ইংল্যান্ড সফরে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ততদিনে ১২ হাজারের বেশি রান করে ফেলেছেন প্রায় ৫৭ গড়ে।
এত দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর তার আলোচিত ফেরা স্থায়ী হয় মাত্র ৪ বল। সাউথ্যাম্পটন টেস্টে একমাত্র ইনিংসে ক্রিস ওকসের বলে আউট হয়ে যান শূন্য রানেই। পরের টেস্টে আরেকটি সুযোগ পান। ব্যর্থ এবারও। প্রথম ইনিংসে ২১ রানে বিদায় নেন, দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত শূন্য।
অনেকের মতে, টেস্ট ম্যাচের চাপের সঙ্গে পেরে ওঠেননি ফাওয়াদ। তবে পাকিস্তানের একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই ব্যাটসম্যান দায় দিলেন ভাগ্যকে।
“ ক্রিকেটে সবসময়ই চাপ থাকে, সেটা ক্লাব ম্যাচ হোক বা যে কোনো কিছু। তার মানে এই নয় যে টেস্ট ম্যাচের চাপেই আমি ভেঙে পড়েছি। এটা দূর্ভাগ্যজনক যে পারফর্ম করতে পারিনি। তবে এসব খেলারই অংশ, সবসময়ই মাঠে নেমে রান করা যায় না।”
ইংল্যান্ডে এবার তুমুল আলোচিত হয়েছে ফাওয়াদের ব্যাটিং স্টান্সও। ক্রিকেট ব্যাকরণকে বুড়ো আঙুল দেখানো এই স্টান্স নিয়েই অবশ্য ক্যারিয়ার জুড়ে খেলেছেন এবং অভিষেক টেস্টে ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সফল হয়েছেন। ইংল্যান্ডে বিশেষজ্ঞরা এবার তার ব্যর্থতার পেছনে অপ্রথাগত স্টান্সের দায় নিয়ে কথা বলেছেন অনেক। তবে ফাওয়াদ ওসবে কান দিচ্ছেন না।
“ আমার ব্যাটিং স্টান্স অবশ্যই ভীষণ আলাদা এবং একটা সময় ভাবতেও পারিনি এমন স্টান্স নিয়ে খেলব। তবে এই স্টান্সেই সাফল্য পেয়েছি এবং এজন্যই পরে ধরে রেখেছি।”
“প্রায়ই আমার স্টান্সের তুলনা হয় শিবনারায়ন চন্দরপলের স্টান্সর সঙ্গে। তার সঙ্গে এটা নিয়ে আমি কথাও বলেছি এবং তিনিও পরামর্শ দিয়েছেন, যতক্ষণ এই স্টান্সে রান করছি, ততক্ষণ এটাই ধরে রাখতে। তিনি আমাকে বলেছেন লোকের কথা পাত্তা না দিতে।”
বাদ পড়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রায় প্রতি মৌসুমের পঞ্চাশের বেশি রান করেও আবার টেস্ট খেলতে প্রায় ১১ বছর লেগে গেছে তার। ইংল্যান্ডের ব্যর্থতার পর আরেকটি সুযোগ পাওয়া কঠিনই হওয়ার কথা। তবে ৩৫ ছুঁইছুঁই ব্যাটসম্যানের বিশ্বাস, আরেকটি সুযোগ তার আসবে।
“আমি জানি যে খুব ভালো পারফর্ম করতে পারিনি, তার পরও ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি আশাবাদী। আশা করছি, নিউ জিল্যান্ড সফরের দলে আমার জায়গা হবে।”