এতক্ষণে তিনি থাকতেন হয়ত আকাশে। সিপিএল খেলতে ক্যারিবিয়ানের পথে উড়াল দেওয়ার কথা ছিল শনিবার রাতে। কিন্তু ভিসা লাগানো পাসপোর্ট হাতে পাননি রোববার দুপুর পর্যন্তও। সাকিব আল হাসান তাই মিরপুরে। জাতীয় দলের ক্যাম্পের নিয়মিত অনুশীলনে।
Published : 30 Jul 2017, 05:30 PM
মিরপুরে আসা বা ক্যারিবিয়ানে যাওয়া, সাকিবের কাছে ফারাক নাকি খুব একটা নেই। ক্রিকেটের অলিগলি হোক বা রাজপথ, পথচলার প্রতিটি পদক্ষেপই তার কাছে রোমাঞ্চকর!
এই তো, সিপিএল খেলতে যাচ্ছেন তৃতীয়বারের মতো। তিন সংস্করণের সেরা অলরাউন্ডার টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের বিশ্বে বাংলাদেশের দূত। ছুটে বেড়ান ক্রিকেট দুনিয়ার এ মাথা থেকে ও মাথা। স্রেফ কি পেশাদারিত্বই থাকে, নাকি রোমাঞ্চও দোলা দেয় মনে?
সাকিব আল হাসান হাসেন। শুধু এসব লিগ কেন, ক্রিকেটের একটি দিনও তার কাছে গড়পড়তা নয়। রোমাঞ্চ আর মজায় ডুবে থাকেন। এই অমোঘ আকর্ষণই তাকে টেনে আনে মাঠে।
মজার ধরণ অবশ্য ভিন্ন হয়। সময় থেকে সময়ে, লিগ থেকে লিগে, দেশ থেকে দেশে বদলে যায় রকম। যেমন ক্যারিবিয়ানের প্রকৃতি আর জীবন দর্শনের কারণে সিপিএলটা সাকিবকে টানে অন্যভাবে।
“অন্য টুর্নামেন্টের চেয়ে এটার পরিবেশ-আবহ অন্য রকম। জায়গাগুলো খুব সুন্দর। খেলার সিরিয়াসনেসটা মাঠেই বেশি। মাঠের বাইরে তেমন কোনো ব্যাপার নেই। সবাই রিলাক্স থাকতে পছন্দ করে। সে দিক থেকে বলতে গেলে অনেক বেশি উপভোগ করি।”
দেশের বাইরের লিগের মধ্যে আইপিএলে খেলেছেন সবচেয়ে বেশি বার। ২০১১ থেকে টানা খেলছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সে। সিপিএলে তিনবার হয়ে যাচ্ছে। আকার-পরিসর-আয়োজনের ব্যপ্তিতে আইপিএল অনেক বড়। তবে সাকিবের কাছে পার্থক্য স্রেফ একট জায়গাতেই।
একই দলে না হলেও সিপিএলে এবার দেশের একজনকে পাচ্ছেন সাকিব। তামিম ইকবাল খেলেছেন আগে, এবার সুযোগ পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সাকিবের দাবি, বাংলাদেশ দলের খেলার সূচি যদি চূড়ান্ত থাকত, তাহলে আরও কজন সুযোগ পেত সিপিএলে।
“আমি তো নিশ্চিত যে, এ বছর যদি পুরো টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ থাকত, তাহলে আরও দুই-একজন যেতে পারত। দুই-একজনের নামও বলাবলি হচ্ছিল। কিন্তু আমাদের তো খেলা আছে। টাইমিং চূড়ান্ত থাকে না। ওখানকার দলগুলির জন্য আমাদেরকে নিতে তাই ঝামেলা হয়ে যায়। কারণ পরে যদি বলা হয়, কোনো দল আসবে, আমাদের ফিরতে হবে। আমাদের জন্য দল পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।”
“এখন তো অন্য রকম কথাবার্তা হয়। আমাদের খেলোয়াড়দের সম্পর্কে জানতে চায়। অনেক ক্রিকেটারের কথা জিজ্ঞেস করে। ‘অমুক কেমন করছে’ এসব জানতে চায়।। দল হিসেবে আমরা কিভাবে এত ভালো করছি, এত ওপরে ওঠার কারণ কী, সে বিষয়ে প্রশ্ন করে। আমরাও সেভাবেই কথা বলতে পারি। মনে হয় যে, বড় দলের খেলোয়াড়ের মত কথা বলার সুযোগ আছে।”
দিনশেষে তাই পারফরম্যান্সই সব। পারফরম্যান্সের জন্যই সাকিবের ডাক পড়ে সারা বিশ্ব থেকে। তাকে দিয়েই একসময় পরিচিত হতো বাংলাদেশের ক্রিকেট। এখন বাংলাদেশের পারফরম্যান্সে বদলে গেছে সাকিবের প্রতি অন্যদের দৃষ্টিভঙ্গিও। সবচেয়ে বেশি কথা বলে পারফরম্যান্সই!