মনের মতো মৌসুমের অপেক্ষায় সাকিব

ওয়েলিংটনে অসাধারণ ডাবল সেঞ্চুরি, ক্রাইস্টচার্চে ৪ উইকেট। দেশের শততম টেস্টে কলম্বোয় দুর্দান্ত সেঞ্চুরি, বল হাতে ম্যাচে ৬ উইকেট। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউ জিল্যান্ডকে হারানোর ম্যাচে স্মরণীয় সেঞ্চুরি। গত মৌসুমে পেছন ফিরে তাকিয়ে সাকিব আল হাসান দেখছেন এমন অনেক মণি-মুক্তা। সামনের মৌসুমে ভাণ্ডারে যোগ করতে চান আরও।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 July 2017, 12:35 PM
Updated : 30 July 2017, 12:41 PM

ফিটনেস ক্যাম্পে নিজেকে সেভাবেই প্রস্তুত করেছেন সাকিব। ঝরিয়েছেন ঘাম। আপাতত ফিটনেস ক্যাম্পের পালা শেষ, শুরু হয়েছে স্কিল ট্রেনিংয়ের ঝালাই। অপেক্ষা অস্ট্রেলিয়া সিরিজের।

সাকিব অবশ্য মাঠে নামবেন আগেই। ভিসা পেলেই সিপিএল খেলতে উড়াল দেবেন ক্যারিবিয়ানে। তবে দেশের হয়ে নতুন মৌসুম শুরু হবে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ দিয়ে।

সাকিবের মতে, নতুন মৌসুমের আগে ফিটনেস ক্যাম্পটা দলের সবার জন্যই দারুণ কাজে দেবে।

“প্রতিটি সিরিজের পর যদি দুই-তিন সপ্তাহের বিরতি হয়, কন্ডিশনিং ক্যাম্প করা যায়, তাহলে খেলোয়াড়দের জন্য সেটা ভালো হয়। এতে ফিটনেস নিয়ে বা ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে নানা কাজ করা যায়। একজন খেলোয়াড় তার অনেক ব্যাপারগুলো চিহ্নিত করে কাজ করতে পারে। খেলার মধ্যে থাকলে এগুলো করা যায় না।”

সাকিবও খেটেছেন ফিটনেস নিয়ে। চাওয়া পরের মৌসুমে আরও ভালো করা। এ মৌসুমের শেষটা ভালো কাটছে সাকিবের। বিরতির পর নতুন মৌসুমেও ধরে রাখতে চান ধারাবাহিকতা। ওপরে উঠতে চান উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে।

“নতুন মৌসুমে অবশ্যই উন্নতি চাইব। প্রতিটি ক্ষেত্রেই চাইব শেষ বছরের চেয়ে ভালো করতে। উন্নতির তো শেষ নেই। এ বছর টেস্টে সময়টা ভালো যাচ্ছে। চাইব সেটা আরও ভালো করতে। যে জায়গাগুলো আমার মনের মত ভালো হয়নি, সেখানে চেষ্টা করব মনের মতো করতে।”

এ বছর ৫ টেস্টে ৫৫ গড়ে করেছেন ৫৫০ রান, উইকেট ১৭টি। ১১ ওয়ানডেতে ৩৭ গড়ে রান ৩৩৩। নতুন মৌসুমে সত্যিকারের উন্নতি দরকার ওয়ানডে বোলিংয়ে, এ বছর যেখানে উইকেট মাত্র চারটি। দেশের সফলতম স্পিনার নিশ্চয়ই বের করে ফেলবেন উন্নতির পথ।

তবে সামনে যেহেতু টেস্ট সিরিজ, আপাতত সাকিব ভাবছেন অস্ট্রেলিয়া সিরিজ নিয়েই। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্যও অস্ট্রেলিয়া সিরিজকে মনে করছেন ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।

“আগে অস্ট্রেলিয়া আসুক। বড় একটা বিরতি গেল। তাদের আসার মাধ্যমে মৌসুম শুরু হবে। তারা যদি না আসে, তাহলে সরাসরি দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়ে আমাদের জন্য খেলাটা কঠিন হবে। অস্ট্রেলিয়া আসলেও সহজ হবে, এমন নয়। তবে খেলার মধ্যে থাকলে একটা পরিবেশ সৃষ্টি হবে খেলার। আশা করি, অস্ট্রেলিয়া আসবে এবং ভালো একটা সিরিজ হবে।”

অস্ট্রেলিয়া এলে একটি মাইলফলক স্পর্শ করবেন সাকিব। সিরিজের প্রথম টেস্ট হবে সাকিবের ৫০তম টেস্ট। টেস্ট ক্যারিয়ারের বয়স তার পেরিয়ে গেছে ১০ বছর। ৫০ টেস্ট তাই বেশ কমই। তবে বাংলাদেশ যে পরিমাণ টেস্ট খেলে, ৫০ টেস্টকেও কম মনে করছেন না তিন সংস্করণের সেরা অলরাউন্ডার।

“ঠিক আছে… কয়েক বছর আগে যে অবস্থা ছিল, তাতে মনে হয় এতদিনে ৩০ টেস্ট খেলতাম। সে হিসেবে এখন তবু একটু ভালো! আর সত্যি বলতে, বাংলাদেশের হয়ে প্রতিটি ম্যাচই বড় কিছু। আশা করি অস্ট্রেলিয়া আসবে, আমিও ফিট থাকব এবং ভালো একটা সিরিজ হবে।”

অস্ট্রেলিয়া আসুক বা না আসুক, বরাবরের মতো সামনের মৌসুমেও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভরসা সাকিবই। সত্যি যদি নতুন মৌসুম কাটাতে পারেন তার মনের মত, বাংলাদেশের ক্রিকেটও তাহলে নিশ্চিত উঠবে নতুন উচ্চতায়।