রান তাড়ার শুরুতেই নেই তিন উইকেট। সাকিব আল হাসান ও সৌম্য সরকার আশা জাগালেও খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। শেষে মেহেদী হাসান মিরাজের অর্ধশতক কেবল কমিয়েছে ব্যবধান।তার পরও হার বেশ বড় ব্যবধানেই। বাংলাদেশকে ৭০ রানে হারিয়ে শ্রীলঙ্কা সিরিজ শেষ করল সমতায়।
Published : 01 Apr 2017, 09:55 AM
টপাটপ শেষ দুই
নবম জুটির লড়াইয়ের পর শেষটা হলো খুব দ্রুত। মিরাজকে ফেরানোর এক বল পর তাসকিনকেও ফিরিয়ে কুলাসেকারা গুটিয়ে দিলেন বাংলাদেশকে।
শুরুতে দুই উইকেট নিয়ে কুলাসেকারা বাংলাদেশকে দিয়েছলেন জোর ধাক্কা। শেষ দুটিও নিয়ে টানলেন ইতি। ৪৪.৩ ওভারে বাংলাদেশ অলআউট ২১০ রানে।
প্রথম ম্যাচে হারের পর দলে ফেরানো হয়েছিল কুলাসেকারারে। অভিজ্ঞ পেসার চার উইকেট নিয়ে প্রতিদান দিলেন আস্থার।
পঞ্চাশের পরই শেষ মিরাজ
ক্যারিয়ারের প্রথম ইনিংসেই অর্ধশতকের পর আর বেশিক্ষণ টিকলেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। কুলাসেকারার স্লোয়ারে ক্যাচ দিলেন কাভারে। ফিরলেন ৫১ রানে।
ভাঙল নবম উইকেটে ৫৪ রানের জুটি। বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ২০৯।
প্রথম ইনিংসেই মিরাজের অর্ধশতক
দলের আশা শেষ। তবু হাল ছাড়েননি মেহেদী হাসান মিরাজ। ওপরের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় চালিয়ে গেছেন লড়াই। ওয়ানডেতে নিজের প্রথম ইনিংসেই করলেন দারুণ এক অর্ধশতক।
আগের দুই ম্যাচ বল করলেও ব্যাটিং পাননি মিরাজ। প্রথমবর ব্যাট করতে নেমে পঞ্চাশ ছুঁলেন ৬৯ বলে।
বাংলাদেশের হয়ে এর আগে প্রথম ইনিংসেই অর্ধশতক করেছিলেন নাসির হোসেন ও ফরহাদ রেজা। দুজনেরই ছিল অভিষেক ম্যাচ।
শুরুতে মাশরাফিকে কিছুক্ষণ সঙ্গী পেয়েছেন মিরাজ। পরে মিরাজের লড়াইয়ের সঙ্গী তাসকিন। নবম উইকেটে অর্ধশত রানের জুটি গড়ে অপেক্ষায় রেখেছেন শ্রীলঙ্কাকে।
নবম উইকেটে বাংলাদেশের এটি সপ্তম অর্ধশত রানের জুটি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম।
ফিরতি ক্যাচে ফিরলেন মাশরাফি
ম্যাচ জয়ের আশা শেষ আগেই। চেষ্টা কেবল ব্যবধান কমানোর। মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে কিছুক্ষণ লড়াইয়ের পর ফিরলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা।
প্রসন্নর ফ্লাইটে বেশ জোরেই ড্রাইভ করেছিলেন মাশরাফি। কিন্তু ফিরতি বল হাতে জমিয়ে ফেলেন প্রসন্ন। দুই চারে ১৬ রান করে ফিরলেন মাশরাফি। ৩৩.১ ওভারে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে ১৫৫।
ফাঁদে পা মাহমুদউল্লাহর
বাংলাদেশের আশা অনেকটা শেষ সাকিবকে হারিয়েই। দেখার ছিল মাহমুদউল্লাহ কতটা টানতে পারেন দলকে। পারলেন না অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানও। আউট হলেন ফাঁদে পা দিয়ে।
মাঠ সাজানো দেখেই বোঝা যাচ্ছিলো শর্ট বল আসছে। লেগ স্লিপ ছিল, ফিল্ডার ছিল স্কয়ার লেগে। সুরাঙ্গা লাকমল করলেন শর্ট বলই। মাহমুদউল্লাহ করলেন পুল। বল গ্লাভসে ছুঁয়ে জমা পড়ল কিপারের হাতে।
৭ রানেই বিদায় মাহমুদউল্লাহর। ২৫.৪ ওভারে বাংলাদেশ তখন ৭ উইকেটে ১২৭।
ডুবল সাকিব-ভেলাও
মাত্রই মোসাদ্দেককে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ভরসা ছিল সাকিবের ব্যাটে। কিন্তু অর্ধশতকের পর তিনিও ফিরলেন উইকেট বিলিয়ে!
জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়েছিলেন মোসাদ্দেক। জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে সকিব দিলেন ক্যাচ। দিলরুয়ান পেরেরাকে ইনসাইড আউট খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পার করতে পারলেন না কাভার ফিল্ডারকে। দুবারের চেষ্টায় ক্যাচ নিলেন গুনাথিলাকা।
৫৪ রানে আউট সাকিব। ২৩.২ ওভরে বাংলাদেশ তখন ৬ উইকেটে ১১৮।
Dilruwan dismisses Shakib, Bangladesh six down for 120 after 24 overs. Bangladesh need 161 runs #SLvBAN pic.twitter.com/gRthS4r4E9
— Sri Lanka Cricket (@OfficialSLC) April 1, 2017
সাকিবের আরেকটি
নেমেছিলেন দলের বিপর্যয়ে। তার ব্যাটিংয়ে অবশ্য সেই চাপের প্রতিফলন দেখা যায়নি। আরও একবার টানছেন দলকে। আরও একবার দল তাকিয়ে তার দিকে। সাকিব আল হাসান করলেন আরও একটি অর্ধশতক।
৫৫ বলে সাকিব স্পর্শ করেছেন অর্ধশতক। ওয়ানডেতে তার ৩৪তম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পঞ্চম।সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে সাকিব করেছিলেন ৭২। ব্যাট করার সুযোগ হয়নি দ্বিতীয় ম্যাচে।
সৌম্য আরও একবার
আরও একবার থিতু হয়ে আউট সৌম্য সরকার। শেষ হলো সম্ভাবনাময় এক জুটি।
দিলরুয়ান পেরেরার ড্রিফট যেন সম্মোহিতের মতো বাইরে বের করে আনল সৌম্যকে। ব্যাটের পাশ দিয়ে বল কিপারের কাছে। বেলস তুলতে ভুল করলেন না কিপার। ৩৮ রানে স্টাম্পড সৌম্য।
ভাঙল সাকিবের সঙ্গে ৭০ বলে ৭৭ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি। ১৫.১ ওভারে বাংলাদেশ তখন ৪ উইকেটে ৮৮।
ঘুরে দাঁড়ানো জুটি
দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর সৌম্য ও সাকিব জুটির শুরু ছিল সাবধানে। তবে চাপে নুইয়ে পড়েননি দুজন। সময়ের সঙ্গে দুজনই খেলেছেন দারুণ সব শট। প্রতি আক্রমণে চাপে ফেলেছেন লঙ্কানদেরই।
দুজনের জুটির পঞ্চাশ এসেছে ৪০ বলে। দলের রান রেটও ছাড়িয়েছে ছয়। সৌম্যর চার-ছক্কা ও ওয়াইড চারে দিলরুয়ান পেরেরার এক ওভার থেকেই এসেছে ২০ রান।
১১ ওভার শেষে বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ৬৭। ৩৫ বলে ৩৩ রানে খেলছেন সৌম্য, ২১ বলে ২৪ রানে সাকিব।
টিকলেন না মুশফিকও
তামিম ও সাব্বিরকে হারানোর ধাক্কা না সামলাতেই আরও একটি জোর ধাক্কা। এবার বিদায় মুশফিকুর রহিমের।
সুরাঙ্গা লাকমলের ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডব্লিউ মুশফিক। রিভিউ নিয়েছিলেন। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায় বল লাগত বেলসে। থেকে যায় মাঠের আম্পায়রের সিদ্ধান্ত।
সাব্বিরের মত রানের খাতা খুলতে পারেননি মুশফিকও। ২০১১ সালের ডিসেম্বরের পর ওয়ানডেতে শূন্য রানে আউট হলেন প্রথমবার। ৩.৩ ওভারে বাংলাদেশ তখন ৩ উইকেটে ১১।
Kulasekara picked up the scalps of Tamim and Sabbir while Lakmal dismissed Rahim. BAN 11/3 (3.3 Ovs) chasing 281. #SLvBAN pic.twitter.com/LkjOyVlU6o
— Sri Lanka Cricket (@OfficialSLC) April 1, 2017
নুয়ান কুলাসেকারকে যে কারণে ফিরিয়েছিল শ্রীলঙ্কা, অভিজ্ঞ পেসার দিচ্ছেন সেটিরই প্রতিদান। নিজের প্রথম দুই ওভারেই দুই উইকেট!
তামিম ইকবালের পর কুলাসেকরা ফেরালেন সাব্বির রহমানকেও। দায় যদিও ব্যাটসম্যানেরই বেশি। অনেক বাইরের বলে ব্যাট চালালেন সাব্বির, পা নড়েনি জায়গা থেকে একটুও। উইকেটের পেছনে ক্যাচ।
সাব্বির ফিরলেন শূন্য রানে। ৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ২ উইকেটে ১০।
তামিমকে হারিয়ে শুরু
রান তাড়ার শুরুতেই বড় ধাক্কা। প্রথম ওভারেই বাংলাদেশ হারাল তামিম ইকবালকে।
চতুর্থ বলেই তামিমের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে কিপার ও স্লিপের মাঝ দিয়ে হয়েছে চার। এক বল পরই তামিম ফিরতি ক্যাচ দিলেন কুলাসেকারাকে। বল হাতে জমিয়ে উল্লাসে আকাশে ছুঁড়তে চেয়েছিলেন বোলার। কিন্তু হাত থেকে বল গেল ফসকে!
মাঠের আম্পায়াররা সিদ্ধান্ত পাঠালেন টিভি আম্পায়ারের কাছে। সফট সিগনাল ছিল আউট। টিভি রিপ্লেতেও দেখা গেল হাত থেকে ছোটার আগে বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পেরেছিলেন কুলাসেকারা।
৪ রানে বিদায় তামিমের। প্রথম ওভারে দলের রানও ৪।
বাংলাদেশের লক্ষ্য ২৮১
এক পাশে উইকেট পড়েছে নিয়মিত। আরেক পাশে থিসারা পেরেরার ছিল রুদ্রমূর্তি। শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে করেছেন ৪০ বলে ৫২।
এক সময় মনে হচ্ছিলো ২৫০-২৬০ হতে পারে শ্রীলঙ্কার রান। কিন্তু পেরেরার ঝড়েই শ্রীলঙ্কা ৫০ ওভারে তুলেছে ৯ উইকেটে ২৮০।
Sri Lanka finished on 280/9 with Kusal Mendis 54, Thisara Perera 52 : Mashrafe Mortaza 3/62 - Target 281 #SLvBAN pic.twitter.com/JZfOyDhSqy
— Sri Lanka Cricket (@OfficialSLC) April 1, 2017
শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হতে আজকেও নির্ধারিত সময়ের চেয়ে লেগেছে অনেক বেশি। এমনিতেই সতর্কতা শুনেছেন মাশরাফি। বাংলাদেশ অধিনায়ক এবার পড়তে পারেন নিষেধাজ্ঞার খাড়ায়। সেই ভাবনা অবশ্য পরে। আপাতত অধিনায়কের ভাবনা নিশ্চয়ই ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিয়েই।
ঝড় তুলে থিসারার বিদায়
দিলরুয়ান পেরেরার পর শেষ ওভারে আউট হলেন থিসারা পেরেরাও। স্কুপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ তুলে দেন থিসারা। আউট হওয়ার আগে অবশ্য লঙ্কানদের এনে দিয়েছে কাঙ্ক্ষিত স্কোর। করেছেন ৪০ বলে ৫২। মাশরাফির এটি তৃতীয় উইকেট।
প্রথম ম্যাচে থিসারা করেছিলেন ৩৫ বলে ৫৫। ক্যারিয়ারে এই প্রথম সিরিজে একাধিক অর্ধশতক করলেন এই অলরাউন্ডার।
Thisara Perera gets his fifty off 37 balls, that's his 7th ODI fifty. Sri Lanka 270/7 (48.4 ov) #SLvBAN pic.twitter.com/p6PyjnZbbj
— Sri Lanka Cricket (@OfficialSLC) April 1, 2017
শেষ ওভারে আউট দিলরুয়ান
শেষ ওভার মাশরাফি শুরু করলেন রাউন্ড দা উইকেটে। প্রথম বলে দিলরুয়ান পেরেরার ব্যাটের কানায় লেগে চার কিপারের পাশ দিয়ে। পরের বলে আবার হাঁকালেন পেরেরা। এবার বল শুধু উঠল ওপরে। কাভারে ক্যাচ নিলেন তামিম ইকবাল।
১১ বলে ১৫ রানে ফিরলেন দিলরুয়ান পেরেরা। তবে তার আগে থিসারা পেরেরার সঙ্গে জুটিতে ভুগিয়েছেন বাংলাদেশকে। দুই পেরেরার জুটি ২৭ বলে ৪৫।
এই উইকেট নিয়ে আব্দুর রাজ্জাককে ছাড়িয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট মাশরাফির (২০)।
শুরুতেই শেষ প্রসন্ন
শেষ দিকে ঝড় তোলার সামর্থ্য ভালো রকমই আছে সিকুগে প্রসন্নর। তবে এবার তাকে সেই সুযোগ দিলেন না মুস্তাফিজুর রহমান। অফ কাটারে উড়িয়ে মেরেছিলেন প্রসন্ন। মিস টাইমিংয়ে বল ওঠে আকাশে। লং অফে ক্যাচ নেন মাহমুদউল্লাহ।
ওভারে থিসারা পেরেরার হাতে জোড়া চার খেয়েছেন মুস্তাফিজ। অল্পের জন্য নিতে পারেননি পেরেরার ফিরতি ক্যাচ। শেষ পর্যন্ত আউট করলেন প্রসন্নকে। দলে ফেরা অলরাউন্ডার করেছেন ১ রান। ৪৪.৫ ওভারে শ্রীলঙ্কা তখন ৭ উইকেটে ২৩০।
মাশরাফির প্রথম
উইকেটে আসার পর থেকে দারুণ খেলছিলেন আসেলা গুনারত্নে। শেষের ওভারগুলোয় ঝড় তোলার জন্য তার ব্যাটেই তাকিয়ে ছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু ঝড়ের আগেই তাকে ফেরালেন বাংলদেশ অধিনায়ক।
আগের কয়েক ওভারের ভালো বোলিংয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। গুনারত্নে চেষ্টা করলেন বড় শট খেলার। বেরিয়ে এসে উড়িয়ে মারতে চাইলেন। কিন্তু মাশরাফি বল দিলেন একটু টেনে। বেরিয়েও যাচ্ছিল বল। মিড অন ফিল্ডার ভেতরেই রেখেছেন মাশরাফি। সেখানেই ক্যাচ মাহমুদউল্লাহর হতে। মাশরাফি পেলেন ম্যাচে প্রথম উইকেট।
গুনারত্নে ফিরলেন ৩৪ রানে। তখন ৪৩.৩ ওভারে শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেটে ২১৬।
অবশেষে মুস্তাফিজ
প্রথম দুই স্পেলে বিবর্ণ ছিলেন মুস্তাফিজ। তৃতীয় স্পেলে মিলল সাফল্য। বাংলাদেশের সামনে বাধা হয়ে ছিলেন কুসল মেন্ডিস। সেই বাধা সরলেন বাঁহাতি এই পেসার।
কয়েকটি ডট বলে মেন্ডিসের ওপর একটু চাপ সৃষ্টি করেছিলেন মুস্তাফিজ। সেটিই হয়তো এনে দিল উইকেট। অফকাটারে থার্ডম্যানে পাঠিয়ে রান নিতে চেয়েছিলেন মেন্ডিস। বল ব্যাটে চুমু দিয়ে গেল মুশফিকের গ্লাভসে!
আগের ম্যচের সেঞ্চুরিয়ান মেন্ডিস এবার ফিরলেন ৫৪ রানে। ৩৭ ওভারে শ্রীলঙ্কা ৫ উইকেটে ১৯৪।
মেন্ডিস আবার
আগের ম্যাচের করেছিলেন সেঞ্চুরি। এবার কুসল মেন্ডিস ছুটছেন পঞ্চাশ ছুঁয়ে।
শুরুর ২৪ বলে রান ছিল ৭। সেখান থেকে মেন্ডিস অর্ধশত করলেন ৬৬ বলে। ২৫ ওয়ানডেতে তার নবম অর্ধশতক, পাশাপাশি সেঞ্চুরি একটি। ৩৪ ওভারে শ্রীলঙ্কা ৪ উইকেটে ১৭৮।
Fifty, off 66 balls, for Kusal Mendis! Can he lead Sri Lanka past 300? SL are 178/4 after 34 overs. #SLvBAN @KusalMendis1 pic.twitter.com/pM066FrIkh
— Sri Lanka Cricket (@OfficialSLC) April 1, 2017
আরেকটি রান আউট
পয়েন্টের দিকে ঠেলেই রান নিতে চেয়েছিলেন মিলিন্দা সিরিবর্দনা। অপর প্রান্তে কুসল মেন্ডিসের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি। দ্রুত ছুটে এসে অতিরিক্ত ফিল্ডার শুভাগতর থ্রো। বল ধরে চোখের পলকে বেলস উড়িয়ে দিলেন মুশফিক।
আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করেই উদযাপন শুরু করেছিলেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। মুশফিক নিশ্চিত ছিলেন। টিভি রিপ্লেও সেটিকে সত্যি প্রমাণ করল। রান আউট সিরিবর্দনা, ফিরলেন ১২ রানে।
৩০.৩ ওভারে ১৬১ রানে শ্রীলঙ্কা হারাল চতুর্থ উইকেট। অন্য পাশে মেন্ডিস খেলছেন ৪৩ রানে।
বিস্ময়কর রান আউট!
দুই ওপেনারকে হারানোর পর শ্রীলঙ্কাকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন কুসল মেন্ডিস ও দিনেশ চান্দিমাল। তৃতীয় উইকেটে দুজনের রান যখন পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই, তখনই অবাক করা এক রান আউটে ভাঙল জুটি।
সীমানা থেকে তাসকিনের থ্রো ছিল দারুণ। মুশফিকও বল ধরে বেলস উড়িয়ে দেন দ্রুত। কিন্তু রান হতে পারত অনায়াসেই। চান্দিমাল ক্রিজে যাচ্ছিলেন হালকা দৌড়ে। কিন্তু বেশি সহজভাবে নিয়েই হয়ত ক্রিকেট ব্যাট ঠিকমত ছোঁয়াননি চান্দিমাল। আলসে ভঙ্গিতে যান ক্রিজে।
টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, ঠিক বেলস ওঠার সময়টাতেই চান্দমালের পা ও ব্যাট ছিল বাতাসে! অনেকবার রিপ্লে দেখে নিশ্চিত হয়েই আউট দেন তৃতীয় আম্পায়ার।
চান্দিমালের চোখেমুখে তখন রাজ্যের বিস্ময়। বিশ্বাস করতে পারছিলেন না বাংলাদেশের ফিল্ডাররাও। সবাই ছিলেন নিজেদের ফিল্ডিং পজিশনে। উইকেট উপহার পেয়ে ছুটে এসে উদযাপনে মাতেন সবাই।
চান্দিমাল ফিরলেন ২১ রানে। শ্রীলঙ্কার রান তখন ২৫.৫ ওভারে ৩ উইকেটে ১৩৬।
এর আগ পর্যন্ত এই জুটিতে দুজন খেলছিলেন আস্থায়। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মেন্ডিস ইনিংস গড়েছেন ঠিক আগের ম্যাচের মতোই। শুরুতে অনেক দেখেশুনে খেলেছেন সাবধানে। ২৪ বলে ছিল ৭ রান। এরপর সাকিবকে সুইপ ও পুল করে পরপর দুই বলে চার মেরে কাটান জড়তা। সাকিবের পরে ওভারে মারেন আরেকটি চার।
চান্দিমাল শুরু দিকেই তাসকিনকে টানা দুটি চার মেরেছেন কাভার ড্রাইভ ও ফ্লিকে। এরপর খেলছেন এক দুই করে। কিন্তু রান আউটে ভাঙল ৪৯ রানের জুটি।
উড়ল থারাঙ্গার বেলস
অসাধারণ এক ডেলিভারিতে উপুল থারাঙ্গাকে বোল্ড করে দিলেন তাসকিন আহমেদ। গুনাথিলাকার পর সরল থারাঙ্গা-বাধাও।
পরিকল্পিতভাবে থারাঙ্গাকে আউট করেছেন তাসকিন। কয়েকটি শর্ট বল করে ব্যাক ফুটে নিয়ে যান বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে। এরপর দারুণ গতির একটি ফুল লেংথ বল। সিম পজিশন ছিল দারুণ। গতিতে পরাস্ত থারাঙ্গা, ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বল উড়িয়ে দিল বেলস।
১৩.৪ ওভারে শ্রীলঙ্কা ২ উইকেটে ৮৭। থারাঙ্গা ফিরলেন ৩৫ রানে।
অবশেষে সাফল্য
মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়ানো উদ্বোধনী জুটি অবশেষে থামালেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আগের দুই ওভারে ১৬ রান দিয়েছিলেন, তবু এই অফ স্পিনারে ভরসা রাখেন মাশরাফি। পেলেন প্রতিদানও।
মিরাজের ফ্লাইটেই বিভ্রান্ত হন গুনাথিলাকা। ড্রাইভটায় তাই বল মাটিতে রাখতে পারেননি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ক্যাচ অনুশীলন করান কাভারে মাহমুদউল্লাহকে।
নিজ ক্লাবের মাঠে দারুণ শুরু করেও গুনাথিলাকা ফিরলেন ৩৪ রানে। শ্রীলঙ্কা প্রথম উইকেট হারাল ৭৬ রানে।
মিরাজ নিলেন উইকেট মেডেন। ১১ ওভারে শ্রীলঙ্কা ১ উইকেটে ৭৬।
লঙ্কার ঝড়ো শুরু
প্রথম ওভারে উদ্বোধনী জুটি ভেঙেছে প্রথম ওভারে। পরের ম্যাচে ১৮ রানে। ওই উদ্বোধনী জুটিই সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে এনে দিলেন দারুণ শুরু।
মাশরাফি ও মুস্তাফিজের পর শুরুটা ভালো করতে পারেননি তাসকিন ও মিরাজও। ১০ ওভারে তাই কোনো উইকেট না হারিয়েই শ্রীলঙ্কা তুলে ফেলেছে ৭৬ রান! ৩৩ বলে ৩৪ রানে খেলছেন দানুশকা গুনাথিলাকা, ২৭ বলে ৩০ উপুল থারাঙ্গা।
Sri Lankan openers off to a solid start, SL 51/0 after 7 overs. Tharanga on 28*, Gunathilaka on 19* #SLvBAN pic.twitter.com/9jsYNFoX3G
— Sri Lanka Cricket (@OfficialSLC) April 1, 2017
শ্রীলঙ্কার এবার উল্টো শুরু
আগের দুই মাচে শুরুতেই উইকেট হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। দুবারই শুরুতে আঘাত হেনেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। এবার মাশরাফির শুরুটা একটু বিবর্ণ। তাই শ্রীলঙ্কার শুরুও হলো ভালো।
দুটি বড় ওয়াইডে শুরু করেছিলেন মাশরাফি। প্রথম ওভারে আসে ৮ রান। আরেক প্রান্তে সিরিজে প্রথমবার নতুন বলে শুরু করেছেন মুস্তাফিজ। তার প্রথম ওভারে এসেছে দুটি চার!
৫ রানে গুনাথিলাকার ফিরতি ক্যাচ হাতে জমাতে পারেননি মাশরাফি। শটে অবশ্য জোর ছিল প্রচণ্ড। মাশরাফির পরের ওভারে শর্ট বলে ছক্কা মেরেছেন থারাঙ্গা। লঙ্কান অধিনায়ক মুস্তাফিজের পরের ওভারে মেরেছেন তিনটি চার!
৬ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান বিনা উইকেটে ৪৫। ৩ ওভারে মাশরাফি দিয়েছেন ১৯ রান, মুস্তাফিজ ২৫!
বাংলাদেশের একই একাদশ
বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়া আগের ম্যাচের একাদশ ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার একাদশে পরিবর্তন একটি। পেসার নুয়ান প্রদিপের বদলে এসেছেন লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার সিকুগে প্রসন্ন।
বাংলাদেশ দল: মাশরাফি বিন মুর্তজা, তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, মেহেদী হাসান মিরাজ।
অবশেষে টস জয়!
অবশেষে টস জয়! দুই টেস্ট, দুই ওয়ানডের পর শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথমবার টস ভাগ্য পক্ষে পেল বাংলাদেশ। সিরিজ জয়ের হাতছানির ম্যাচে টস জিতলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। নিয়েছেন বোলিং।
3rd ODI: Mashrafe Mortaza won the toss and elected to bowl first on this track. #SLvBAN pic.twitter.com/LILFZQfzD4
— Sri Lanka Cricket (@OfficialSLC) April 1, 2017
রৌদ্রোজ্জ্বল শুরু
কলম্বোতে শনিবার সম্ভাবনা আছে বৃষ্টির। বিশেষ করে পরের দিকে। তবে দিনের শুরুটা ক্রিকেটের জন্য দারুণ। রোদ ঝলমলে সকাল।
এই সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠ এখন মূলত শ্রীলঙ্কার মূল টেস্ট ভেন্যু। এখানে ওয়ানডে হচ্ছে ৬ বছর পর। ফ্লাডলাইট নেই। তাই দিনের ম্যাচ। বাংলাদেশ অবশ্য গত নিউ জিল্যান্ড সফরে দিনের ম্যাচ খেলে এসেছে।
সিরিজ জয়ের হাতছানি
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জয়। দেশের বাইরে সিরিজ জয়। প্রথমটি কখনোই পারেনি বাংলাদেশ। দ্বিতীয়টি পেরেছে কমই। শেষ ওয়ানডেতে দুটিরই হাতছানি বাংলাদেশের সামনে। সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব (এসএসসি) মাঠে শনিবার জিতলে বা টাই হলে, এমনকি খেলা পরিত্যক্ত হলেও সিরিজ বাংলাদেশের।
দেশের বাইরে বাংলাদেশের সবশেষ সিরিজ জয় ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়েতে। এবার জিতলে তাই এই দলটির এগিয়ে যাওয়ার পথে রচনা হবে নতুন অধ্যায়ের।
গত ৩১ বছরে দেশের মাটিতে কেবল দুটি সিরিজেই শ্রীলঙ্কা কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি। ২০০৬ সালে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। একই বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরেছিল দুই ম্যাচ, এক ম্যাচ ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে।