বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার লক্ষ্য পূরণে তার দেশের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
Published : 24 May 2015, 11:36 PM
রোববার বাংলাদেশ সফরে এসে সন্ধ্যায় গণভবনে শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী লিও ইয়ানদং।
এসময় শিক্ষা, সংস্কৃতি, দক্ষ শ্রমিক ও মানবসম্পদ তৈরিসহ বিভিন্ন খাতে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য দুই দেশের সরকার ও বেসরকারি খাতের মধ্যে তিনটি সমঝোতা স্মারক, একটি একচেঞ্জ অব নোটস ও সহযোগিতা চুক্তি সই হয়।
“একইসঙ্গে গত ছয় ধরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের উপরে থাকার প্রশংসা এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আরো উন্নতি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী।”
২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছাতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করে এক্ষেত্রে চীনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন উপ-প্রধানমন্ত্রী লিও ইয়ানদং।
এসময় বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ নিয়েও কথা হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব শামীম চৌধুরী।
“চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, চীনের শ্রমঘন উৎপাদন শিল্প বাংলাদেশে পুনঃস্থাপন করলে এখানে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে এবং রপ্তানি বাড়বে; যা দুই দেশের উন্নয়নেই ভূমিকা রাখবে,” বলেন তিনি।
চীনের বিনিয়োগের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দেওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্কের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী এসময় দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ বছর পূর্তি পালনের বিষয়ে বলেন, এতে দুই দেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে এবং অর্থ-বাণিজ্য, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে মনে করেন তিনি।
উপ-প্রধানমন্ত্রী চীনা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে সুবিধাজনক সময়ে চীন সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। শেখ হাসিনাও চীনের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে চীনের রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
এসময় চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী কৃষিক্ষেত্রে যৌথ গবেষণা, বিজ্ঞানীদের চীনে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং বাংলাদেশে একটি উন্নতমানের পরীক্ষাগার স্থাপনের প্রস্তাব দেন।
শিক্ষা সহযোগিতার জন্য দুই দেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক ছাড়া রেডিও, চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন বিষয়ে সহযোগিতার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় এবং চীনের প্রেস, প্রকাশনা, রেডিও, চলচ্চিত্র, টেলিভিশন বিষয়ে রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
রেডিও, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র বিষয়ক সমঝোতা স্মারকে সই করেন বাংলাদেশের তথ্য সচিব মুর্তজা আহমেদ এবং চীনের প্রেস, পাবলিকেশন, রেডিও ও ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী তং গ্যাং।
কন্টেইনার ইন্সপেকশন অ্যান্ড ইক্যুইপমেন্ট প্রজেক্ট বিষয়ে ‘নোটস’ বিনিময় দলিলে সই করে করেন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন এবং বাংলাদেশে নিযু্ক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মা মিং কিয়াং।
বস্ত্র প্রকৌশল বিষয়ে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি ও সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির সঙ্গে আলাদাভাবে দুটি সহযোগিতা চুক্তি হয় চীনের উহান টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটির।
এতে সই করেন সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আনোয়ার হোসেন, বিজিএমইএ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর ইউ সিদ্দিকি এবং উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর উয়েই ই লিয়াং।