ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা অনুপাতে মেয়র প্রার্থীরা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা করে ব্যয় করতে পারবেন। আর কাউন্সিলর প্রার্থীদের ব্যয়সীমা হবে এক লাখ থেকে সর্বোচ্চ ছয় লাখ টাকা।
Published : 07 Jan 2020, 10:13 AM
সিটি নির্বাচন: যেসব বিধি মানতে হবে প্রার্থীদের
ঢাকা উত্তর-দক্ষিণে ভোট ৩০ জানুয়ারি
পোস্টার ছাপানোর পাশাপাশি প্রচার, পরিবহন, পথসভা-ঘরোয়া সভা, নির্বাচনী ক্যাম্প, এজেন্ট ও কর্মীদের খরচ, আবাসন ও প্রশাসনিক ব্যয় বাবদ এই খরচ করতে পারবেন প্রার্থীরা।
তবে ওই ব্যয়সীমা কখনোই মানা হয় না বলে সাধারণ একটি ধারণা রয়েছে জনগণের মধ্যে। আইন মেনে ব্যয় হচ্ছে কি না, তা নির্বাচন কমিশনও কখনও যাচাই করতে যায় না।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলামের ভাষ্য, বাস্তবসম্মতভাবে নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব যাচাই-বাছাই করা কষ্টসাধ্য।
“প্রার্থীরা কে কোথায় খরচ করছে তার সত্যতা যাচাই করতে যে পরিমাণ লোকবল দরকার, সে পরিমাণ দক্ষ জনবলের সঙ্কট রয়েছে। এখন প্রার্থীরা অন্তত নির্ধারিত সময়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে ব্যয়ের তথ্য দেয়। নির্বাচনী ব্যয় যেন আইনের মধ্যে হয়, তা তদারকির নির্দেশনা আমাদের থাকবে।”
ভোটতথ্য >> উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪ ওয়ার্ডে ভোটার ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৬২১ জন। দক্ষিণে ৭৫টি ওয়ার্ডে ভোটার ২৩ লাখ ৬৭ হাজার ৪৮৮ জন। >> উত্তরে সাধারণ ওয়ার্ড ৫৪টি, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৮টি। ভোটকেন্দ্র ১৩৪৯টি, ভোটকক্ষ ৭৫১৬টি। >> দক্ষিণে সাধারণ ওয়ার্ড ৭৫টি, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ২৫টি। ভোটকেন্দ্র ১১২৪টি, ভোটকক্ষ ৫৯৯৮টি। >> দুই সিটিতে সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্র ২ হাজার ৪৭৩টি; ভোটকক্ষ ১৩ হাজার ৫১৪টি। |
কোন নির্বাচনে কোন এলাকায় কোন পদের প্রার্থী কত টাকা ব্যয় করতে পারবেন, তা ঠিক হয় বিধিমালা অনুযায়ী ভোটার সংখ্যার অনুপাতে।
ঢাকা উত্তরে ৩০ লাখের বেশি এবং দক্ষিণের ২৩ লাখের বেশি ভোটারের বিপরীতে ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ের সীমা রয়েছে মেয়র প্রার্থীদের।
কাউন্সিলর পদে ১৫ হাজার ভোটারের জন্য এক লাখ টাকা ও ৫০ হাজার ভোটারের ক্ষেত্রে ৬ লাখ টাকা ব্যয় করার সুযোগ রয়েছে।
মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিধি মেনে ব্যয় করছেন কিনা- সে বিষয়ে নজরদারি করে ওই কমিটি ইসিতে প্রতিবেদন পাঠায়।
ভোটার সংখ্যা | নির্বাচনী ব্যয় | ব্যক্তিগত ব্যয় |
| মেয়র প্রার্থী |
|
ভোটার সংখ্যা ২০ লাখের বেশি | সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা | সর্বোচ্চ ২ লাখ টাকা |
| সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী |
|
১৫ হাজার- ৩০ হাজার ভোটার | ২ লাখ টাকা | ২০ হাজার টাকা |
৩০ হাজার-৫০ হাজার | ৪ লাখ টাকা | ৩০ হাজার টাকা |
৫০ হাজার-১ লাখ | সর্বোচ্চ ৬ লাখ টাকা | সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা |
নির্বাচনী আইনে বলা হয়েছে, প্রার্থীরা একাধিক রঙের কিংবা নির্ধারিত আকারের চেয়ে বড় পোস্টার ছাপাতে পারবেন না। এ কাজে আমদানি করা কাগজ ব্যবহার করা যাবে না। ৪০০ বর্গফুটের চেয়ে বড় আকারের প্যান্ডেল, গেট বা তোরণ নির্মাণ চলবে না। জনসভা ছাড়া একসঙ্গে তিনটির বেশি মাইক ব্যবহার করা যাবে না। ভোটারদের আপ্যায়ন কিংবা গাড়িভাড়া, মিছিলে কোনো গাড়ি বা নৌযান ব্যবহার ও আলোকসজ্জা করা চলবে না।
প্রার্থীকে সব অর্থ খরচ করতে হবে এজেন্টের মাধ্যমে।
নির্বাচনের ফল ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে ব্যয়ের হিসাব কমিশনে দাখিল করতে হবে। কোনো অনিয়ম ধরা পড়লে প্রার্থিতা বাতিল করা হবে।
উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেম জানান, এ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ-বিএনপি প্রার্থীসহ ছয়জনের মনোনয়নপত্র বৈধ এবং একজনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর পদে বৈধ হয়েছেন ৩৫৯ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে বৈধ হয়েছে ৮৭ জনের মনোনয়নপত্র।
দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন জানান, দক্ষিণ সিটিতে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টিসহ সাতজন মেয়র প্রার্থীই বৈধ হয়েছেন। সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৪৩৪ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে, আর সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১০০ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৯ জানুয়ারি, প্রতীক বরাদ্দ হবে ১০ জানুয়ারি। প্রচার শেষে ভোট হবে ৩০ জানুয়ারি।