ঈদযাত্রার তৃতীয় দিন ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ বঙ্গের জেলাগুলোর যাত্রীদের ভিড় থাকলেও উত্তর-পূর্বের জেলাগুলোর যাত্রীদের তেমন চাপ দেখা যায়নি।
Published : 19 Aug 2018, 12:56 PM
রোববার সকালে রাজধানীর সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল এবং গোলাপবাগ ও মানিকনগরের কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা যায়, চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন গন্তব্যের বাস যাত্রী নিয়ে ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে।
বাস কাউন্টারগুলোর ব্যবস্থাপকরা বলছেন, সরকারি-বেসরকারি অফিস ছুটি হলে আগামী সোমবার বিকাল থেকে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীর চাপ থাকবে সবচেয়ে বেশি।
গোলাপবাগে কিশোরগঞ্জগামী অনন্যা পরিবহনের কাউন্টার ব্যবস্থাপক মোশতাক আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত তাদের নয়টি বাস ছেড়ে গেছে। তবে যাত্রী তুলনামূলকভাবে কম।
যাতায়াত পরিবহনের ছয়টি নন এসি এবং একটি এসি গাড়ি ছেড়ে গেলেও ভিড় এখনও তেমন বাড়েনি বলে জানালেন ব্যবস্থাপক করিম।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাগামী রয়েল, তিশা ও সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার ব্যব্স্থাপকরা জানান, যাত্রী তুলনামূলকভাবে কম থাকায় তাদের বাসও গেছে কম। এনা, শ্যামলী, হানিফ, মামুন, ইউনিক পরিবহনের ব্যবস্থাপকরা জানান, যাত্রী না থাকলেও তারা নির্দিষ্ট সময় অন্তর বাস ছাড়ছেন।
শ্যামলী পরিবহনের এজিএম শরীফ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখনো অফিস ছুটি হয়নি। তাছাড়া সড়কে যানজট, সড়কের ভাঙাচোরা দশায় বিরক্ত হয়ে যাত্রীরা ট্রেনে যাতায়াত করতে চায়। অন্যবারের চেয়ে কোরবানির ঈদের এ সময়টায় যাত্রী অনেক কম।”
হানিফ পরিবহনের ব্যবস্থাপক আসলাম আলী জানান, সকালে চট্টগ্রামের দিকে তাদের আটটি গাড়ি ছেড়ে গেলেও সিলেটের দিকে ছেড়েছে মাত্র চারটি গাড়ি।
“কক্সবাজার, চট্টগ্রামের দিকে যাত্রীর চাপ আছে। তবে সিলেটের দিকে এখনো সেভাবে নেই। তবে গাড়ি ছেড়ে দিচ্ছি আধা ঘন্টা পর পর।”
ইউনিক পরিবহনের ব্যবস্থাপক শাহের আলী বলেন, “চট্টগ্রামের সবগুলো গাড়ি যাত্রী পূর্ণ থাকলেও সিলেটের গাড়িগুলো অনেকটা ফাঁকাই যাচ্ছে।”
কিশোরগঞ্জগামী যাত্রী মোস্তাফা মাহমুদ বলেন, “সকাল সকাল চলে এসেছি। ভেবেছিলাম, টিকিট পেতে বেশ ঝামেলা হবে। কিন্তু এসে দেখি বাস একেবারেই ফাঁকা। মনের মত আসনও পেয়েছি। এখন সড়কে যানজট না থাকলেই হয়।”
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে আড়াইহাজারের ভুলতা এলাকায় নির্মিত হচ্ছে ফ্লাইওভার। সেখানে দীর্ঘ যানজট পেরিয়ে গেলে পরে আর সমস্যা থাকে না বলে জানান হানিফ পরিবহনের চালক সুমন মিয়া।
সিলেটের পথের যাত্রী কম থাকলেও সায়েদাবাদে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর জেলার বাস কাউন্টারে বেশ ভিড় দেখা যায়। এই পথে যাতায়াত করা এনা, স্টার লাইন, জোনাকি, সেবা, হিমাচল, ঢাকা এক্সপ্রেসের বাসগুলোকে যাত্রী পূর্ণ করে টার্মিনাল ছাড়তে দেখা যায়।
ঢাকা এক্সপ্রেসের ব্যবস্থাপক আশরাফ বলেন, “দুদিন ধরেই যাত্রীর চাপ বেশি। আজকে সকাল থেকে আামদের সবগুলো গাড়ি প্যাসেঞ্জার ভর্তি কইরা যাচ্ছে।”
ফেনীর যাত্রী ফারুক আহমেদ বলেন, “সকাল সাড়ে ৭টায় সায়েদাবাদ কাউন্টারে এসেছিলাম। কিন্তু টিকিট পেতে বেশ সময় লেগেছে। দুটি গাড়ি ছেড়ে যাওয়ার পর বাসে উঠতে পারলাম।”
মাওয়া রুটে খুলনাগামী ফাল্গুনী পরিবহনের যাত্রী ইমা মাহমুদ বলেন, “দৌলতদিয়াতে শুনেছি পদ্মার স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল ঠিকমতো হচ্ছে না। তাছাড়া ওদিকে জ্যাম অনেক বেশি। এদিকে একটু কম। তাই মাওয়া দিয়ে যাওয়া।”
পিরোজপুরের নাজিরপুরের যাত্রী সিদ্ধার্থ সমাদ্দার বলেন, “ঈদ উপলক্ষে ভাড়া বাড়ানো হয়নি এখনো। টিকিট পেয়েছি। আশা করি, নির্বিঘ্নে যেতে পারব।”
ফাল্গুনী পরিবহনের ব্যবস্থাপক আবদুল খালেক বলেন, “আমাদের বাসে যাত্রীর চাপ আছে। সবগুলো গাড়ি খুলনার দিকে যাচ্ছে। ফেরি পারাপারে সময় বেশি লাগছে। তাই মাওয়ায় লঞ্চ পারাপার করাচ্ছি যাত্রীদের।
কনক পরিবহনের ব্যবস্থাপক সৈয়দ মাহবুবুর বলেন, “যাত্রী কালও বেশ ভালো ছিল। আমরা লঞ্চে নয়, ফেরিতেই বাস পারাপার করব।”
সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে বিআরটিএর ভিজিলেন্স বুথে দায়িত্বরত বিআরটিএর কর্মী মো. আবুল হাসান মিটু বলেন, “সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। বিআরটি প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৪২ পয়সা ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে। কেউ এর বাইরে ভাড়া আদায় করলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”