তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক চুকিয়ে চীনের হাত ধরলো হন্ডুরাস

সম্পর্ক ছিন্নের আগে হন্ডুরাস কোটি কোটি ডলারের আর্থিক সহায়তা চেয়েছিল বলে দাবি তাইওয়ানের।

রয়টার্স
Published : 26 March 2023, 08:55 AM
Updated : 26 March 2023, 08:55 AM

চীনের সঙ্গে রোববার থেকে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক যাত্রা শুরু করেছে হন্ডুরাস। তার আগে মধ্য আমেরিকার দেশটি তাইওয়ানের সঙ্গে তাদের কয়েক দশক পুরনো সম্পর্ক ছিন্ন করে।

চীনের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া তাইওয়ানের স্বাধীনতায় স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোর একটি ছিল হন্ডুরাস।

তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ, বেইজিংয়ের দ্বারা প্রলুব্ধ হয়ে সে দলে ভেড়ার আগে হন্ড‍ুরাস তাদের কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থ দাবি করেছিল। ১৯৪০ এর দশক থেকে তাইওয়ানের সঙ্গে হন্ডুরাসের মিত্রতার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।

তাইওয়ানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে হন্ডুরাস যে চীনের হাত ধরতে যাচ্ছে তার ইঙ্গিত বেশ কিছুদিন ধরেই পওয়া যাচ্ছিল। গত সপ্তাহে হন্ডুরাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী চীন সফরে যান। তার আগে হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট সিওমারা কাস্ত্রো বলেছিলেন, তার সরকার বেইজিংয়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক শুরু করতে যাচ্ছে।

চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুইন গাং এবং হন্ডুরাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এদুয়ার্দো এনরিক রেইনা বেইজিংয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের স্বীকৃতি স্বরূপ একটি চুক্তিতে সই করেছেন।

Also Read: তাইওয়ানের হাত ছেড়ে চীনের বন্ধু হচ্ছে হন্ডুরাস?

শনিবার একটি সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে হন্ডুরাসের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, তারা পিপুলস রিপাবলিক অব চায়নাকে একমাত্র বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দিচ্ছে। যারা সমগ্র চীনের প্রতিনিধিত্ব করে এবং তাইওয়ানকে ‘চীনা ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ’ মানে।

তাইওয়ান নিজেদের স্বাধীন ঘোষণা করলেও চীন দ্বীপটিকে তাদের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ভূখণ্ড মনে করে, যারা একদিন পুনরায় মিলিত হবে। এজন্য প্রয়োজনে বলপ্রয়োগের হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছে বেইজিং।

চীনের পররাষ্ট্রনীতি অনেকটাই তাইওয়ানের সঙ্গে বাকি বিশ্বের সম্পর্কের উপর নির্ভর করে। যা ‘ওয়ান-চায়না পলিসি’ বা এক চীন নীতি নামে পরিচিত।

তাইওয়ান চীনের এই দাবি জোরাল ভাবে প্রত্যাখান করে বলেছে, একমাত্র তাইওয়ানের জনগণ দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে, অন্য কেউ নয়।

এদিকে, তাইপেতে এক সংবাদ সম্মেলনে তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেপ উ বলেছেন, কাস্ত্রো এবং তার সরকার চীনকে নিয়ে ‘সবসময়ই বিভ্রমের মধ্যে ছিলেন’ এবং চীন হন্ডুরাসকে ‘প্রলুব্ধ’ করা কখনো বন্ধ রাখেনি।

‘‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং দূতাবাস প্রাসঙ্গিক তথ্যগুলি সংগ্রহ করেছে এবং যত্ন সহকারে সেগুলো পরিচালনা করেছে।

‘‘যদিও, কাস্ত্রো সরকার আমাদের কাছেও কোটি কোটি ডলারের অর্থনৈতিক সহায়তা চেয়েছিল এবং তারা চীন ও তাইওয়ানের সহায়তা প্রকল্পের আর্থিক মূল্য তুলনা করে দেখেছে।”

তাইওয়ান চীনের সঙ্গে ‘অর্থহীন’ অর্থ সহায়তার বিনিময়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রতিযোগিতায় নামবে না বলে এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন।

তাইওয়ান আর্থিক সহায়তার প্রসঙ্গ টানলেও চীন বা হন্ডুরাস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।