ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলে ২০১৪ সালে যুদ্ধ চলার সময় মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ দেশটির আকাশে গুলি করে ভূপাতিত করার ঘটনায় রাশিয়ার দুই সাবেক গোয়েন্দা ও ইউক্রেইনের বিচ্ছিন্নতাবাদী এক নেতাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে নেদারল্যান্ডসের একটি আদালত।
সাজা প্রাপ্তরা হলেন, রাশিয়ার সাবেক দুই গোয়েন্দা ইগর গিরকিন ও সের্গেই দুবিনস্কি এবং ইউক্রেইনের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নেতা লিওনিদ খারচেঙ্ক।
ওই তিনজনের বিরুদ্ধেই রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর বিইউক ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেইনে নিয়ে যেতে সহায়তা করার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। মালয়েশিয়ার উড়োজাহজটি ওই ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ভূপাতিত করা হয়। যদিও তাদের কেউই নিজেরা সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়েননি।
সাজা পাওয়া তিন জনের মধ্যে সবচেয়ে বড় নাম ইগর গিরকিন। তিনি রাশিয়ার এফএসবি গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক কর্নেল। পূর্ব ইউক্রেইনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত শহর দোনেৎস্কে তাকে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদমর্যাদা দেওয়া হয়েছিল।
তিনিই সম্ভবত ওই এলাকায় সর্বোচ্চ পদমর্যাদার সেনা কর্মকর্তা ছিলেন যার সঙ্গে রাশিয়া সরকারের সরাসরি যোগাযোগ ছিল।
রায় ঘোষণার সময় বিচারক বলেন, ‘‘অভিযুক্তরা যা করেছেন তার সাজা হিসেবে শুধুমাত্র সবচেয়ে কঠিন শাস্তিই তাদের প্রাপ্য। তাদের কারণে এত মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং তাদের স্বজনদের এত কষ্ট পেতে হয়েছে।”
২০১৪ সালের ১৭ জুলাই পূর্ব ইউক্রেইনের দোনেৎস্কের আকাশ দিয়ে উড়ে যাওয়ার সময় ভূমি থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মালয়েশিয়ার উড়োজাহাজটি ভূপাতিত হয়ে ২৯৮ আরোহীর সবাই মারা যান। উড়োজাহাজটি আমস্টার্ডাম থেকে কুয়ালালামপুর যাচ্ছিল।
ওই ঘটনার প্রায় ছয় বছর পর ২০২০ সালে উড়োজাহাজটি ভূপাতিত করার অভিযোগে বিচার শুরু হয়।
এ মামলায় আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া চতুর্থ ব্যক্তি রাশিয়ার ওলেগ পুলাতভ বেকসুর খালাস পেয়েছেন বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বৃহস্পতিবার এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্তদের কেউই আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। তারা সবাই পলাতক এবং রাশিয়ায় অবস্থান করছে বলে ধারণা করা হয়। রাশিয়া থেকে তাদের বহিঃসমর্পন বলতে গেলে অসম্ভব।
যাবজ্জীবন সাজা প্রদাণের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে দোষীদের কাছ থেকে এক কোটি ৬০ লাখ ইউরো আদায় করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদি তারা সেটা না করেন তবে নেদারল্যান্ড সরকার ওই অর্থ প্রদাণ করবে।