পর পর দুটো শক্তিশালী ভূমিকম্প এবং অসংখ্য পরাঘাত তুরস্ক ও সিরিয়ায় প্রায় আট হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে, ওই এলাকায় ঘটিয়েছে বিপুল ধ্বংসযজ্ঞ।
তীব্র শীত ও তুষারপাতে উদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যাহত হচ্ছে, এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে বহু মানুষ।
দুটি বড় ভূমিকম্পের মধ্যে ৭ দশমিক ৮ মাত্রায় প্রথম কম্পনটির উৎপত্তিস্থল তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় গাজিয়ানতেপ শহর; কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে মাত্র ১০০ কিলোমিটার উত্তরে কাছাকাছি ৭ দশমিক ৫ মাত্রায় আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। ফলে মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে আশেপাশের অঞ্চলগুলো পরিণত হয় ধ্বংসস্তূপে।
জোড়া ভূমিকম্প কোথায়
প্রথম কম্পনটির উৎপত্তিস্থল সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে বহু বহুতল ভবন ও সরকারি স্থাপনা ধসে পড়ে। পাশের দেশ সাইপ্রাস ও লেবাননেও অনুভূত হয় সেই কম্পন।
প্রথম ভূমিকাম্পের উপকেন্দ্র ছিল গাজিয়ান্তেপ শহরের কাছে, যেখানে ২০ লাখের বেশি মানুষের বসবাস। ভোরে ভূমিকম্পের শুরুতে যখন বিল্ডিংগুলো কাঁপতে শুরু করে, অনেককেই তখন প্রাণ বাঁচাতে রাস্তায় নেমে আসেন
ভূমিকম্পের আগের ও পরের ছবি একসঙ্গে রেখে ধ্বংসযজ্ঞের ভয়াবহতা বোঝার চেষ্টা করা হয়েছে বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
গাজিয়ান্তেপের বিধ্বস্ত ভবন
গাজিয়ান্তেপের প্রায় দুই হাজার বছরের পুরনো একটি দুর্গ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোমান শাসনামলে তৈরি ‘দ্য হিলটপ কাসল’ নামের দুর্গটি বর্তমানে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
গাজিয়ান্তেপ কাসলের ধসে পড়া দেয়াল
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল থেকে প্রায় ১০০ মাইল দূরে মালাতিয়া শহরের ঐতিহাসিক ইয়েনি কেমি মসজিদটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মারাত্মক কম্পনে এর গম্বুজগুলো ধসে পড়েছে। ১৮৯৪ সালে এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে মসজিদটি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। নতুন করে গড়ে তোলার পর ১৯৬৪ সালের ভূমিকম্পে আবারও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।
ঐতিহাসিক ইয়েনি মসজিদ
তুরস্কের হতাই প্রদেশের ভূমধ্যসাগরীয় বন্দর শহর ইস্কেন্দেরুনের ভবনগুলো পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে।
ইস্কেন্দেরুনের ধসে পড়া ভবন
ইস্কেন্দেরুনের ধসে পড়া গির্জা
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় বেসনায়া-সেইনেহ গ্রামের আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনগুলোও পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তুপে। এছাড়া গত এক দশক যুদ্ধে বিধ্বস্ত আলেপ্পোর প্রাচীন একটি দুর্গ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিরিয়ার ধ্বংসচিত্র