এই রণতরী পানিতে ভেসেছে আগেই। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে এটি নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী শুক্রবার কেরালায় সেই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করবেন।
Published : 01 Sep 2022, 09:54 PM
সামরিক শক্তিতে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে ভারত। দেশটির নৌবাহিনীর পরিষেবায় নিযুক্ত হতে চলেছে নিজেদের তৈরি প্রথম বিমানবাহী রণতরী ‘আইএনএস বিক্রান্ত’।
এই রণতরী পানিতে ভেসেছে আগেই। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে এটি নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার সকালে সেই আনুষ্ঠানিকতাটুকই সম্পন্ন করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
বিবিসি জানায়, ভারতের দক্ষিণের রাজ্য কেরালায় হবে আইএনএস বিক্রান্তের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। রণতরী কমিশন করতে মোদী এরই মধ্যে কেরালায় পৌঁছেও গেছেন। বিক্রান্ত উদ্বোধনের পাশাপাশি নৌবাহিনীর নতুন পতাকাও উন্মোচন করবেন তিনি।
দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে তৈরি হয়েছে বিক্রান্ত। নির্মাণ কাজ শেষের পর ২০২১ সালের অগাস্টের শুরুতে সমুদ্রে বিক্রান্তকে পরীক্ষা করা শুরু হয়। কয়েকদফা পরীক্ষা তরীটি সফলভাবেই উৎরেছে বলে জানায় নৌবাহিনী। তারপরই এটিকে কমিশন করা হচ্ছে।
বিবিসি জানায়, ৮৬০ ফুট লম্বা এবং ১৯৭ ফুট উচ্চতার এ নৌযানটি ভারতের নকশা করা এবং ভারতে তৈরি প্রথম বিমানবাহী রণতরী। এটি ৩০টি যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন।
রাশিয়া থেকে কেনা ভারতের আরেকটি রণতরী আইএনএস বিক্রমাদিত্য ৩০টির বেশি বিমান বহন করতে পারে।
আইএনএস বিক্রান্ত তৈরিতে ভারতের ২০ হাজার কোটি রুপি খরচ হয়েছে। এটির ২০১৭ সালেই ভারতের নৌবাহিনীতে যুক্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রণতরীটির দ্বিতীয় ধাপের কাজ নানা কারণে পিছিয়ে যায়।
তারপরও আইএনএস বিক্রান্ত ভারতের ইতিহাসে নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বিশ্বে হাতে গোণা মাত্র কয়েকটি দেশের রণতরী তৈরির সক্ষমতা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী দেশের প্রতিরক্ষা খাতের উৎপাদনে আরও উন্নতি সাধনের যে পরিকল্পনা করেছেন, আইএনএস বিক্রান্ত তার বাস্তব রূপ।
১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তানের যুদ্ধজাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছিল আইএনএস বিক্রান্ত। পুরোনো ওই রণতরীকেই ভারত ফিরিয়ে এনেছে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি করে।
পরাক্রমী সেই রণতরীটি ভারত কিনেছিল যুক্তরাজ্য থেকে। পঞ্চাশের দশকে ভারত ব্রিটিশ নৌবাহিনীর জন্য তৈরি করা বিমানবাহী রণতরী ‘হারকিউলিস’ কিনে এর নাম দিয়েছিল ‘আইএনএস বিক্রান্ত’।
বিক্রান্ত শব্দের অর্থ সাহস। রণতরীটি ১৯৬১ সালে ভারতের নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়, যা দেশটির গর্বের প্রতীক ছিল। বহু গুরত্বপূর্ণ সামরিক অভিযানেই সেটি উজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছে।
প্রায় ৪ দশক কাজ করার পর ১৯৯৭ সালে বিক্রান্তকে অবসরে নেওয়া হয়। ভেঙে ফেলা হয় জাহাজটি। কিন্তু সেটিরই নকশা দেখে পরে দেশীয়ভাবে তৈরি করা হয়েছে ‘আইএনএস বিক্রান্ত’।
এভাবেই পুনর্জন্ম হয়েছে রণতরীটির। নতুন আইএনএস বিক্রান্ত ‘কমিশন’ পাওয়ার পর সেটি ভারত এবং আন্তর্জাতিক জলসীমায় চলাচল করবে।