পুতিনের ‘সেনাসমাবেশের’ ঘোষণার পর রুশ নাগরিকদের দেশ ছাড়ার হিড়িক

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেইনে আরও সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেওয়ার পর বহু রুশ নাগরিক বিশেষত, যুদ্ধে যাওয়ার বয়সী তরুণরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2022, 03:59 PM
Updated : 22 Sept 2022, 03:59 PM

ইউক্রেইনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযানের’ জন্য চাই আরও সেনা। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাই দেশের তিন লাখ রিজার্ভ সেনাকে ডেকে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। 

বুধবার পুতিনের ওই নির্দেশ জারির খবর প্রকাশের পরপরই রাশিয়ার নাগরিকরা দেশ ছাড়তে শুরু করেছে। বিশেষত, যুদ্ধে যাওয়ার বয়সী তরুণদের দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার খবর বেশি পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ক্রেমলিন। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে দেখা যায়, জর্জিয়া-রাশিয়া সীমান্তে আপার লারস চেকপয়েন্টে রাশিয়ার নম্বরপ্লেট লাগানো অনেক গাড়ি লাইন ধরে সীমান্ত পার হচ্ছে। প্রচুর গড়ি জমে যাওয়ায় যেখানে রীতিমত দীর্ঘ যানজট দেখা দিয়েছে। 

সম্প্রতি সীমান্ত পার হয়েছেন এমন দুইজন বিবিসি-কে বলেন, রাশিয়ার দিকে সীমান্তে গাড়ির অন্তত ৫ কিলোমিটার লম্বা লাইন পড়ে গেছে। 

পুতিনের ঘোষণার পরপরই রাশিয়া থেকে বাইরের দেশে যাওয়ার ফ্লাইটগুলোর টিকিট্ও দ্রুত বিক্রি হয়ে যায় বলে জানিয়েছে বিবিসি।

গুগলে ‘কীভাবে রাশিয়া ছাড়ব’ এমন প্রশ্ন লিখেও সার্চ করছেন প্রচুর মানুষ। 

বিবিসি-র খবরে বলা হয়, রাশিয়ার স্তাভরোপোল নগরী থেকে একটি মিনিভ্যানে করে সীমান্তে যাওয়া একদল তরুণ গাড়িতে ঝিমুচ্ছে। তারা সাত ঘণ্টা ধরে সীমান্তে অপেক্ষা করছে আর মরিয়া হয়ে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়ার চেষ্টা করছে। যাতে প্রিয়জনদের জানাতে পারে তারা নিরাপদে সীমান্তে পৌঁছে গেছে। 

সীমান্তে জড়ো হওয়া এইসব মানুষদের অধিকাংশই বয়সে তরুণ। তারা বলেন, পুতিনের ঘোষণার পরপরই তারা বাড়ি ছাড়েন। এমনকি ব্যাগটা পর্যন্ত ঠিকমত গোছানোর সময় পাননি। কোনমতে পাসপোর্ট হাতে তারা দ্রুত বাড়ি ছেড়েছেন। 

রাশিয়ার নাগরিকরা ভিসা ছাড়া যে অল্প কয়েকটি দেশে ভ্রমণ করতে পারে জর্জিয়া তার একটি। ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রায় দেড় লাখ রুশ নাগরিক জর্জিয়া প্রবেশ করেছেন। 

রাশিয়ার নাগরিকদের গণহারে প্রবেশ আটকাতে জর্জিয়ার বিরোধী দল থেকে সরকারের কাছে ভিসার নিয়ম চালু করার দাবিও জানানো হয়েছে। শুধু জর্জিয়া নয়, রাশিয়া থেকে নাগরিকরা ফিনল্যান্ডেও প্রবেশ করছে।

বিবিসি জানায়, রাশিয়া থেকে ‘প্রচুর মানুষ’ রাতারাতি ফিনল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলের সীমান্তে জড়ো হয়েছে। যদিও ফিনল্যান্ডের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বলেছে, পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণেই আছে। 

ওদিকে, তরুণদের দেশত্যাগের হিড়িকের খবর প্রকাশের পর ক্রেমলিনের মুখপাত্র বলেন, সেনাসমাবশের অংশ হিসেবে রিজার্ভ সেনাদের ডাকার নির্দেশ নিয়ে প্রকাশিত খবর ‘অতিরঞ্জিত’। 

রিজার্ভ সেনাদের ডেকে পাঠানো নিয়ে খবর প্রকাশের পর রাশিয়া জুড়ে এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভও হয়েছে।বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশ ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছে।

রাশিয়ার স্বতন্ত্র মানবাধিকার সংস্থা ওভিডি-ইনফো’র হিসাবমতে, নিরাপত্তা বাহিনী তেরশ’র বেশি মানুষকে বুধবার বিক্ষোভ মিছিল থেকে আটক করেছে।