চীনে ভূমিকম্পের ১৭ দিন পর একজনকে জীবিত উদ্ধার

গত ৫ সেপ্টেম্বর চীনের সিচুয়ান প্রদেশে শক্তিশালী ৬.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৯৩ জন নিহত এবং চারশ’র বেশি মানুষ আহত হয়।

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিকম্পের পর ১৭ দিন ধরে পাহাড়ে নিখোঁজ একজনের সন্ধান মিলেছে। স্থানীয় এক গ্রামবাসী বুধবার তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন।

গত ৫ সেপ্টেম্বর চীনের সিচুয়ান প্রদেশে শক্তিশালী ৬ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৯৩ জন নিহত এবং চার শতাধিক মানুষ আহত হয়।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গান ইউ নামের ওই ব্যক্তি সিচুয়ানের ‘ওয়াংডং জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মী। ভূমিকম্পের দিন তিনি তার আহত সহকর্মীদের উদ্ধারের কাজে হাত লাগিয়েছিলেন।

গান ও তার সহকর্মী লুও ইয়ং মিলে আহত সহকর্মীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়াসহ বাঁধ থেকে পানি ছেড়ে দিয়ে বন্যা প্রতিরোধে সহায়তা করেছিলেন।

পরে তারা ওই এলাকা ছেড়ে নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার জন্য জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের আশপাশে প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকায় হাঁটেন।

কিন্তু গান চোখে কম দেখেন এবং ভূমিকম্পের সময় তার চশমা হারিয়ে যাওয়ায় উঁচুনিচু পাহাড়ি এলাকা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার জন্য তাকে রীতিমত সংগ্রাম করতে হয়েছে।

বিবিসি জানায়, এক সময়ে অনেক দূরে তারা উদ্ধারকারীদের দেখতে পেয়েছিলেন। লুও জানিয়েছেন, তারা তাদের জামা খুলে উড়িয়ে বিভিন্ন ভাবে উদ্ধারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।

শেষে গানকে সেখানেই রেখে দিয়ে সাহায্যের আশায় বেরিয়ে পড়েন লুও। বাঁশের পাতা দিয়ে তৈরি একটি বিছানায় গানকে রেখে যান তিনি। এ সময় গানকে পাহাড়ি কিছু ফল এবং বাঁশের অঙ্কুর খেতে দিয়ে যান তিনি।

গত ৮ সেপ্টেম্বর আগুন জ্বালিয়ে উদ্ধারকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন লুও। সেই আগুনের সূত্র ধরে তিনি উদ্ধার পান। এর তিনদিন পর ১১ সেপ্টেম্বর গান ইউয়ের সেই অস্থায়ী আবাসের খোঁজ মিলেছিল।

কিন্তু সেখানে গানের কিছু পোশাক এবং পায়ের ছাপ ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি। আশঙ্কা করা হয়েছিল, হাইপোথার্মিয়ায় গানের মৃত্যু হয়েছে।

চলতি সপ্তাহে ওয়াংডং জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় বাস করা এক কৃষক তার স্থানীয় অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে গানের খোঁজ শুরু করেন। কয়েক ঘণ্টা পর তিনি গানের কান্নার শব্দ শুনতে পেয়ে একটি গাছের নিচে তাকে খুঁজে পান।

পরে উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়; সেখানে তার ভেঙে যাওয়া হাড়ের চিকিৎসা চলছে।