অয়েল জায়ান্ট বিপি সোমবার লোহিত সাগর দিয়ে অপরিশোধিত তেলবাহী তাদের সব জাহাজের চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
Published : 19 Dec 2023, 03:28 PM
লোহিত সাগরে চলাচল করা বাণিজ্যিক জাহাজে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের হামলার জেরে অনেক বড় বড় শিপিং কোম্পানি ওই সমুদ্র পথে পণ্য পরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা বিশ্ব বাজারে তেলসহ অন্যান্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির শঙ্কা বাড়াচ্ছে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্লেষকরা।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শিপিং কোম্পানি মেয়ার্স্ক বলেছে, তারা উত্তমাশা অন্তরীপ (দ্য কেপ অব গুড হোপ) এর চারপাশ দিয়ে তাদের কিছু জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করবে।
গাজায় ইসরায়েলের হামলার জেরে হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগরে চলাচল করা কয়েকটি বাণিজ্যিক জাহাজে হামলা চালিয়েছে। এর কারণে সৃষ্টি হওয়া বিশৃঙ্খলা দমনে এবং লোহিত সাগর নৌপথে বাণিজ্যিক জাহাজের চলাচল সুরক্ষিত করতে যুক্তরাষ্ট্র একটি আন্তর্জাতিক নৌ অভিযান শুরু করেছে।
যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, বাহরাইন, নরওয়ে ও স্পেনসহ আরও কয়েকটি দেশ ওই নিরাপত্তা অভিযানে যুক্ত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, “সম্প্রতি ইয়েমেন থেকে হুতিদের বাড়তে থাকা বেপরোয়া আক্রমণের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যের অবাধ গতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, হুমকিতে পড়েছে নিরীহ নাবিকদের জীবন এবং লঙ্ঘিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক আইন।”
তেল ও তরল গ্যাস পরিবহনে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ নৌপথগুলোর একটি লোহিত সাগর। এই পথে প্রচুর পরিমাণে ভোগ্যপণ্যও পরিবাহিত হয়।
বিবিসি জানায়, অয়েল জায়ান্ট বিপি সোমবার লোহিত সাগর দিয়ে অপরিশোধিত তেলবাহী তাদের সব জাহাজের চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।
লোহিত সাগরের বিকল্প পথ হিসেবে কেপ অব গুড হোপ এর চারপাশ ব্যবহার করা যেতে পারে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন ইন্সটিটিউট অব এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড এর মহাপরিচালক মার্কো ফর্গিওনা। তবে সেই পথে বেশ খানিকটা ঘুরতে হয় এবং জাহাজগুলোকে গন্তব্যে পৌঁছাতে সপ্তাহ দুই বেশি সময় লাগতে পারে।
“বাড়তি সময় মানেই জ্বালানি ও বিমার পেছনে বাড়তি খরচ। শুধু তাই নয়, আপনাকে আরো অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে যখন আপনি শুনতে পাবেন জাহাজগুলি ভুল জায়গায় রয়েছে, কন্টেইনারগুলো ভুল জায়গায় রয়েছে, বন্দরে যানজট এবং এসব কারণে আরও বেশি বিলম্বের আশঙ্কাও আছে।
“তাই বৈশ্বিক পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় এর ঠিক কি কি প্রভাব পড়বে তা আপনি আগে থেকে অনুমান করতে পারবেন না।”
এস অ্যান্ড পি গ্লোবাল মার্কেট ইন্টেলিজেন্স বলেছে, এশিয়া ও উপসাগরীয় দেশগুলো থেকে আমদানি করা প্রায় ১৫ শতাংশ জন্য ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় যায় সমুদ্র পথে। যেগুলোর মধ্যে সাড়ে ২১ শতাংশ পরিশোধিত তেল এবং ১৩ শতাংশের বেশি অপরিশোধিত তেল।
এখন যদি বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে যায় তবে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতিও বেড়ে যাবে।