এই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের তীর ইসরায়েলের দিকে, তবে ইসরায়েল এই হত্যার দায় এখনো পর্যন্ত স্বীকার করেনি।
Published : 02 Aug 2024, 11:28 AM
হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া তেহরানের যে অতিথি ভবনে হামলায় নিহত হয়েছেন সেখানে প্রায় দুই মাস আগে থেকেই বিস্ফোরক পেতে রাখা হয়েছিল।
ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র নিউ ইয়র্ক টাইমস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তেহরানে গিয়েছিলেন হানিয়া।
সেখানের গেস্ট হাউসে নিজের কক্ষে তিনি আছেন, এটা নিশ্চিত হওয়ার পরই দূর থেকে বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটানো হয় বলে জানান জানিয়েছেন ওই ভবনে থাকা মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সাতজন কর্মকর্তা। ওই সাত কর্মকর্তার মধ্যে দুইজন ইরানিয়ান ছাড়াও একজন আমেরিকানও রয়েছেন।
গত বুধবারের ওই হামলায় হানিয়ার এক দেহরক্ষীও নিহত হয়েছেন।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করছে ইরান ও হামাস। তবে ইসরায়েল এই হত্যার দায় এখনো পর্যন্ত স্বীকার করেনি।
ওই হত্যাকাণ্ডের পরই ইসরায়েলি কর্মকর্তারা অভিযান সম্পর্কে মার্কিন কর্মকর্তাদের অবহিত করেন বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
নিউ ইয়র্ক টাইমসই প্রথম হানিয়া হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
হানিয়ার হত্যাকাণ্ড আবারও আশঙ্কা তৈরি করেছে যে, হামাস ও তার মিত্রদের সঙ্গে ইসরাইলের সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যে বহুমুখী ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নিতে পারে।
এর আগে সৌদি গণমাধ্যম জানিয়েছিল, তেহরানে হানিয়ার ব্যক্তিগত বাসভবনে নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত হেনে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
তবে ইরানের প্রতিরক্ষা বিভাগের দুর্বলতা কাজে লাগিয়েছে হত্যাকারীরা। গেস্ট হাউজে কঠোর নিরাপত্তা ফাঁকি দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়।
বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিঙ্কেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এই হত্যার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে আগাম কোনো তথ্য ছিল না।
ইরানিসহ মধ্যপ্রাচ্যের কর্মকর্তাদের মতে, স্থানীয় সময় বুধবার ভোর রাত ২টার দিকে বোমাটি বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের পরপরই একটি মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে গেলে তারা হানিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা চেষ্টা করেও হানিয়ার দেহরক্ষীকে বাঁচাতে পারেননি।
ইরানের দুই কর্মকর্তার বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের নেতা জিয়াদ আল-নাখালাহ হানিয়ার পাশের কক্ষেই অবস্থান করছিলেন। তাদের মতে নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই হানিয়াকে লক্ষ্য করে বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়। কারণ বিস্ফোরণে তার কক্ষের খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। তাই বোঝাই যায় এটা খুব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
দুই কর্মকর্তা আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে বিস্ফোরকগুলো হানিয়ার কক্ষে বিস্ফোরণের কিছু সময় আগে রাখা হয়েছিল।
তাই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দূর থেকে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির সহায়তায় বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়। ঠিক এই একই উপায়ে ২০২০ সালে ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহকে হত্যা করেছিল ইসরায়েল।