Published : 29 Apr 2025, 05:05 PM
কানাডার জাতীয় নির্বাচনে জয় পেয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নেতৃত্বাধীন মধ্য-বাম লিবারেল পার্টি। মঙ্গলবার জয় ঘোষণার পরই কার্নি বলেছেন, তার দেশ ‘কখনও’ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নতি স্বীকার করবে না।
বিজয়ী ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেছেন কার্নি। তিনি বলেন, “ট্রাম্প আমাদেরকে (কানাডা) 'ভাঙার' চেষ্টা করছেন, যাতে যুক্তরাষ্ট্র আমাদেরকে দখলে নিয়ে নিতে পারে। তবে এমনটি কখনওই হবে না।
“আমি কয়েক মাস ধরেই এ বিষয়ে সতর্ক করে আসছি যে, যুক্তরাষ্ট্র আমাদের ভূমি, সম্পদ, আমাদের পানি, আমাদের দেশ নিয়ে নিতে চায়। এগুলো কেবল নিষ্ক্রিয় কোনও হুমকি নয়,” বলেন কার্নি।
“যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার সংহতিসাধনের যে পুরোনো সম্পর্ক ছিল তাও এখন শেষ”, উপস্থিত জনতার উদ্দেশে ভাষণে বলেন তিনি। একে তিনি এক ট্র্যাজেডি বলে বর্ণনা করেন।
বিভক্ত জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বার্তা দিয়ে কার্নি বলেন, যেসব মানুষ কানাডাকে নিজেদের বাড়ি মনে করেন, তাদের সবার নেতা হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বাসঘাতকতায় কানাডা বিস্মিত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদেরকে এখন একে অপরের যত্ন নিতে হবে।”
সোমবার কানাডায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কার্নির লিবারেল দলের জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কানাডা দখলের হুমকি ও বাণিজ্য যুদ্ধ।
ট্রাম্পের শুল্কের ধাক্কা সামলাতে এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১ তম ‘রাজ্য’ বানানোর হুমকি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি নির্বাচনের আগে জাতির কাছে 'শক্তিশালী ম্যান্ডেট' চেয়েছিলেন।
ট্রাম্প যতই কানাডার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন, ততই কার্নি নিজেকে কানাডার ত্রাতা হিসাবে তুলে ধরেছিলেন। ভোটারদের তিনি বুঝিয়েছিলেন যে, ট্রাম্পের হুমকি থেকে কানাডার জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে পারেন তিনিই।
কানাডার টালমাটাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতিও সামলে নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন সাবেক ব্যাংকার কার্নি। ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, টালমাটাল পরিস্থিতিতে কার্নি ও তার দল লিবারাল পার্টির কথাতেই আস্থা রেখেছে কানাডার ভোটাররা।
তারা এবার নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো কানাডার ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়েছে লিবারেল পার্টিকে। তবে কার্নির দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছেন কিনা, নাকি তাকে জোট সরকার গঠনের পথে হাঁটতে হবে সেটি এখনও দেখার বাকি।
কানাডায় হাউজ অব কমন্সের মোট আসনসংখ্যা ৩৪৩। দেশটির নির্বাচনে কোনও দলকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ১৭২ আসনে জিততে হয়। লিবারেল পার্টি ১৬০টির বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে। তবে তারা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
অন্যদিকে, প্রতিপক্ষ কনজারভেটিভ পার্টি পাচ্ছে অন্তত ১৪৭ টি আসন। ইতোমধ্যেই পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা পিয়েল পয়েলিভার। তিনি বলেন, “কার্নি একটি সূক্ষ্ম ব্যবধানের সংখ্যালঘু সরকার গড়ার জন্য যথেষ্ট আসন পেয়েছেন।”