ঈসার মৃত্যু নিশ্চিত হলে তিনি হবেন গাজায় পাঁচ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় নিহত হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতা।
Published : 12 Mar 2024, 02:21 PM
গাজায় বিমান হামলায় হামাসের দ্বিতীয় শীর্ষ সামরিক নেতা মারওয়ান ঈসা নিহত হয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে ইসরায়েল।
সোমবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) একথা জানিয়েছে।
রোজা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার সম্ভাবনা জাগলেও তা ম্লান হতে সময় লাগেনি, পাশাপাশি ইসরায়েলের হামলায়ও কোনো ছেদ পড়েনি।
ঈসার মৃত্যু নিশ্চিত হলে তিনিই হবেন গাজায় পাঁচ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় নিহত হামাসের শীর্ষস্থানীয় নেতা।
রয়টার্স জানিয়েুছে, ঈসা তার চোখের আড়ালে থাকার সামর্থ্যের কারণে ‘ছায়া মানব’ নামে পরিচিত। হামাসের যে তিনজন শীর্ষ নেতা ইসরায়েলে ৭ অক্টোবর চালানো নজিরবিহীন হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি তাদের একজন। ওই হামলা গাজা যুদ্ধের সূচনা করে আর তারপর থেকে হামাসের সামরিক অভিযান এই তিনজনই পরিচালনা করে আসছেন বলে ধারণা করা হয়।
এক ব্রিফিংয়ে আইডিএফের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল দানিয়েল হ্যাগারি জানান, হামাসের সামরিক শাখা ইজ আল-দ্বীন আল-কাসাম ব্রিগেডের ডেপুটি কমান্ডার ঈসার অবস্থানের বিষয়ে গোয়েন্দা সূত্রে খবর পাওয়ার পর শনিবার রাতে ইসরায়েলি বাহিনী গাজার মধ্যাংশের আল-নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা চালায়। গাজায় হামাসের অস্ত্রের দায়িত্বে থাকা ঈসা ও আরেকজন কমান্ডার শিবিরটির ভূগর্ভস্থ কম্পাউন্ড ব্যবহার করেছিল, সেখানেই বোমাবর্ষণ করে ইসরায়েলি জঙ্গি বিমানগুলো।
এই যৌথ অভিযানে ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতও অংশ নিয়েছে বলে জানান হ্যাগারি।
“সেখানে তাদের সঙ্গে অন্য সন্ত্রাসীরাও ছিল,” বলেন তিনি; তবে ঈসা নিহত হয়েছে কি না, তা পরিষ্কার নয় বলে জানিয়েছেন।
একজন ফিলিস্তিনি রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ঈসা লুকিয়ে ছিলেন মনে করে ইসরায়েল এক জায়গায় বোমার্ষণ করেছে। তবে ঈসার কিছু হয়েছে কি না, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার সদস্য চিলি ট্রপার দেশটির চ্যানেল ১৩ টেলিভিশনকে বলেছেন, “এখনও নিশ্চিত কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। যদি সত্যি মারাওয়ান ঈসা নির্মূল হয়ে থাকে তাহলে এটি আইডিএফ ও শিন বেতের বড় ধরনের অর্জন হবে। ঈসা হামাসের সামরিক বাহিনীর প্রধান।”
ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার, আল-কাসাম ব্রিগেডের কমান্ডার মোহাম্মদ দেইফ ও ঈসা ইসরায়েলের ‘মোস্ট ওয়ানটেড’ তালিকার শীর্ষে আছে।
গাজা শাসনকারী হামাসের যোদ্ধারা ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে প্রায় ১২০০ জনকে হত্যা করে বলে ভাষ্য তেল আবিবের। এর পাশাপাশি হামলা চলাকালে হামাস যোদ্ধারা ২৫৩ জনকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে রাখে বলেও জানিয়েছে ইসরায়েল।
এরপর থেকে পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে ঘনবসতিপূর্ণ গাজায় অবিরাম হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। তাদের নির্বিচার হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপের পরিণত হয়েছে, ৩১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও ৭১ হাজারের বেশি আহত হয়েছে এবং গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: