যুক্তরাষ্ট্রের হুমকির মুখে ইরান প্রতিবেশী যে দেশগুলোতে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আছে তাদের এতে না জড়ানোর জন্য সতর্ক করেছে।
Published : 06 Apr 2025, 05:19 PM
ইরান প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সরাসরি আলোচনার দাবি প্রত্যাখ্যান করলেও দীর্ঘ দিনের চ্যানেল ওমানের মাধ্যমে পরোক্ষ আলোচনা চালিয়ে যেতে চায়, জানিয়েছেন ঊধ্র্বতন এক ইরানি কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, পারমাণবিক কর্মসূচী নিয়ে সরাসরি আলোচনায় রাজি না হলে ইরানে বোমা মারার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, তাই ইরান প্রতিবেশী যে দেশগুলোতে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আছে তাদের তাদের সতর্ক করে বলেছে, এক্ষেত্রে জড়ালে তারাও গুলির লাইনে পড়ে যেতে পারে।
ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘ দিন ধরেই ওমানের মাধ্যমে বার্তা আদানপ্রদান করে আসছে।
“ইরানের সঙ্গে রাজনৈতিক সমাধানের ব্যাপারে ওয়াশিংটন কতোটা আন্তরিক পরোক্ষ আলোচনা তা মূল্যায়নের একটা সুযোগ দেয়,” বলেন ওই কর্মকর্তা।
তিনি জানান, এই পথ ‘মসৃণ’ নাও হতে পারে, তারপরও এর প্রতি সমর্থন জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বার্তা দিলে এ ধরনের আলোচনা শিগগিরই শুরু হতে পারে।
এই ইরানি কর্মকর্তা আরও জানান, ইরান প্রতিবেশী ইরাক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, তুরস্ক ও বাহরাইনকে বার্তা পাঠিয়ে জানিয়েছে, ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা চলাকালে তারা যদি তাদের আকাশপথ বা ভূখণ্ড মার্কিন বাহিনীকে ব্যবহার করতে দেয় বা যে কোনো ধরনের সমর্থন দেয় তবে তেহরান সেটিকে শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড বলে বিবেচনা করবে।
এ ধরনের কোনো কাজ ‘ওই সব দেশের জন্য গুরুতর পরিণতি বয়ে আনবে’ বলে জানান তিনি। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইরানের সশস্ত্র বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রেখেছেন বলেও জানান তিনি।
এই ইরানি কর্মকর্তা জানান, প্রথম পর্বের পরোক্ষ আলোচনায় ওমানের মধ্যস্থতাকারীরা যুক্ত থাকতে পারেন, তারা ইরানি ও মার্কিন প্রতিনিধি দলের মধ্যে বার্তা বিনিময়ের কাজ করবেন। খামেনি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি অথবা তার ডেপুটি মজিদ তাখত-ই রাভানচিকে মাস্কটে কোনো আলোচনা হলে সেখানে উপস্থিত থাকার অনুমতি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও ওমান সরকারের মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি, জানিয়েছে রয়টার্স
ইরানের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের সামরিক পদক্ষেপের হুমকিতে গাজা ও লেবাননের যুদ্ধ, ইয়েমেনে সামরিক হামলা, সিরিয়ার শাসক পরিবর্তন এবং ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে হামলা-পাল্ট হামলায় ইতোমধ্যেই উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে থাকা মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতিতে নতুন চাপ তৈরি করেছে।
ইরানে বড় ধরনের কোনো হামলা হলে তা পারস্য উপসাগীয় অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। এই অঞ্চলটি বিশ্বের তেল সরবরাহের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের যোগান দেয়।
রয়টার্স জানায়, ইরানের সতর্ক বার্তার বিষয়ে ইরাক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও বাহরাইন সরকারের মুখপাত্র মন্তব্যের জন্য জানানো অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই ধরনের কোনো সতর্কতা জানানো হয়েছে কি না তা তাদের জানা নেই, তবে অন্য চ্যানেলেও এ ধরনের বার্তা দেওয়া যায়।
বুধবার ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, কুয়েত ইরানকে আশ্বস্ত করেছে যে তারা তাদের মাটি থেকে অন্য কোনো দেশের প্রতি আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ পরিচালনার বিষয়টি মেনে নেবে না।
ইরানের মিত্র রাশিয়া বৃহস্পতিবার বলেছে, ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলার হুমকি অগ্রহণযোগ্য। পরদিন শুক্রবার তারা উভয়পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানায়।