তাকে গ্রেপ্তারের পর রোববার রাতে তুরস্কজুড়ে এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অস্থিরতা দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীদের ওপর ছোড়া হয়েছে কাঁদুনে গ্যাস, রাবার বুলেট।
Published : 24 Mar 2025, 12:56 PM
প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়িপ এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনে তাকে গ্রেপ্তারের পর তুরস্কজুড়ে বিক্ষোভে লাখো মানুষ অংশ নিয়েছে।
রোববার প্রধান বিরোধীদল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) সদস্যরা ভোট দিয়ে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলের প্রার্থী হিসেবে ইস্তাম্বুলের মেয়র ইকরাম ইমামোগলুকে মনোনীতও করেছেন, বলছে বিবিসি।
তাকে গ্রেপ্তারের পর রোববার রাতে তুরস্কজুড়ে এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অস্থিরতা দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীদের ওপর ছোড়া হয়েছে কাঁদুনে গ্যাস, রাবার বুলেট।
ইমামোগলু তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন।
“কখনোই মাথা নত করবো না,” রিমান্ডে নেওয়ার আগে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এমনটাই বলেছেন তিনি।
এরদোয়ান বিক্ষোভের নিন্দা জানিয়ে সিএইচপির বিরুদ্ধে ‘শান্তি বিঘ্ন ও জনগণকে বিভক্ত করার’ অভিযোগ এনেছেন।
ইমামোগলুকে আটক করার পর রোববার নিয়ে টানা পাঁচ রাত বিক্ষোভ দেখল তুরস্ক। এদিন সন্ধ্যার দিকে ইস্তাম্বুলের সিটি হলের কাছে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের অনেককে তুরস্কের পতাকা দোলাতে এবং সারিবদ্ধ দাঙ্গা পুলিশের সামনে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
বিক্ষোভ দমনে পুলিশ কর্মকর্তারা জলকামান ব্যবহার করেছেন, ছুড়েছেন পিপার স্প্রে।
সিটি হলের বাইরে জড়ো হওয়া বিপুল জমায়েতের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন ইমামোগলুর স্ত্রী দিলেক কায়া। বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, তার স্বামী যে ‘অবিচারের’ সম্মুখীন হয়েছেন তা ‘প্রতিটি বিবেকবান মানুষের মনে দাগ কেটেছে’।
ইমামোগলুকে জেলে পাঠানের প্রতিক্রিয়ায় তুরস্কজুড়ে যে বিক্ষোভ চলছে, তাকে ২০১৩ সালের গাজি বিক্ষোভের পর সবচেয়ে বড় বলা হচ্ছে। এক যুগ আগে স্থানীয় একটি পার্ক গুড়িয়ে দেওয়ার পর ওই বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল।
রোববার পর্যন্ত তুরস্কের ৮১টি প্রদেশের অন্তত ৫৫টিতে ইমামোগলুর পক্ষে সমাবেশ হয়েছে বলে প্যারিসভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে।
দুর্নীতির তদন্তের অংশ হিসেবে বুধবার ইমামোগলুর পাশাপাশি রাজনীতিক, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীসহ শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করে তুর্কি কর্তৃপক্ষ।
রোববার তুরস্কের মেয়রকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয় ও তার বিরুদ্ধে ‘অপরাধমূলক সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা, ঘুষ গ্রহণ, চাঁদাবাজি, বেআইনিভাবে ব্যক্তিগত তথ্য রেকর্ড এবং টেন্ডার জালিয়াতির’ অভিযোগ আনা হয়।
এরপর আদালত তাকে রিমান্ডে পাঠায়। তাকে সিলিভ্রির একটি কারাগারে রাখা হয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ইমামোগলুকে মেয়র পদ থেকেও বরখাস্ত করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তুরস্কের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে ইমামোগলুকে তাকে গ্রেপ্তারের কড়া সমালোচনা করে একে ‘তুরস্কের গণতন্ত্রে কালো দাগ’ অভিহিত করেছেন। বলেছেন, তাকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
এর প্রতিবাদে জনসাধারণকে রাস্তায় নামারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ইস্তাম্বুলের মেয়র ইমামোগলুকে জেলে পাঠাল তুরস্কের আদালত
ইস্তাম্বুলের মেয়র গ্রেপ্তার নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট, তুরস্কে আটক ৩৭
তুরস্কে 'এরদোয়ানের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী' ইস্তাম্বুলের মেয়র আটক