ভিয়েতনামে হাজির হওয়া টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে গত সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকেই মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টি ও বন্যা শুরু হয়।
Published : 14 Sep 2024, 12:31 PM
টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে ভারি বৃষ্টির পর মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদো ও এর আশপাশে দেখা দেওয়া বন্যায় অন্তত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
দেশটির দমকল বাহিনী জানিয়েছে, উদ্ধারকারীরা বাস্তুচ্যুত ৩৬০০ মানুষকে নৌকাযোগে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে এক ফেইসবুক পোস্টে দমকল বাহিনী বলেছে, “বন্যা কবলিত ৩০টি এলাকা থেকে মোট ৩৬০২ জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।”
এখনও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন, আরও অনেকে বাড়ির ছাদে ও গাছে আটকা পড়ে আছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ইরাবতী।
ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপিদো, মান্দালয়, বাগো, মোন, কারেন ও শান রাজ্যের অন্তত ১০টি শহরে বন্যা হয়েছে। এসব শহরে হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
ভিয়েতনামে হাজির হওয়া টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে গত সপ্তাহের মাঝামাঝি থেকেই মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যা শুরু হয়। শুধু নেপিদো ও এর আশপাশে ১৯ জনের মৃত্যু হলেও সারা দেশে মৃত্যুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জনের নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
চলতি বছরে এশিয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে মিয়ানমারের প্রতিবেশী থাইল্যান্ডেও বন্যা হচ্ছে। সেখানে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভিয়েতনামে ঝড়, বন্যা ও ভূমিধসে মৃত্যুর সংখ্যা ২৫০ ছাড়িয়ে গেছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে হওয়া সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারে অশান্তি বিরাজ করছে। দরিদ্র দেশটির বিশাল অংশজুড়ে সহিংসতা চলছে।
বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠিত সেনাবাহিনীসহ অভ্যুত্থানের পর তৈরি হওয়া নতুন প্রতিরোধী গোষ্ঠীগুলো দেশজুড়ে চলমান সশস্ত্র বিদ্রোহে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। নতুন করে শক্তি অর্জন করা বিদ্রোহী এসব বাহিনীগুলো দেশটির সামরিক বাহিনীকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে।
গৃহযুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধির মধ্যে দেশটির অর্থনীতির আকার সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। এখন দেশটির বড় একটি অংশজুড়ে বন্যার ফলে অর্থনৈতিক সঙ্কট আরও গভীর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘ সমর্থিত মিয়ানমার ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট ইউনিট (এমআইএমইউ) উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবি বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার নেপিদোর প্রায় ১৬২ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পানিতে ডুবে ছিল।
মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের আরও প্রায় ৩৬৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা পানিতে ডুবে আছে, বিশ্লেষণে এমন ধারণা পাওয়া গেছে।
মিয়ানমারের পাঁচ কোটি ৫০ লাখ জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশের মানবিক সহায়তা দরকার। কিন্তু রেডক্রসসহ বহু দাতব্য সংস্থা দেশটির অনেক এলাকায়ই বিধিনিষেধ ও নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না।
আরও পড়ুন: