বিদ্রোহীদের কমান্ডার হাসান আব্দুল গনি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে বিদ্রোহীরা হামায় অনুপ্রবেশ করা শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন।
Published : 05 Dec 2024, 05:25 PM
সিরিয়ার বিদ্রোহীরা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহর হামায় প্রবেশ করা শুরু করেছে। শহরটিতে সরকারি বাহিনীগুলো রাশিয়ার তীব্র বিমান হামলার সমর্থন নিয়ে বিদ্রোহীদের প্রবেশ ঠেকানোর চেষ্টা করছে।
বিদ্রোহীদের কমান্ডার হাসান আব্দুল গনি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে বিদ্রোহীরা হামায় অনুপ্রবেশ করা শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন। এর আগে সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানায়, সরকারপন্থি বাহিনীগুলোর একটি হামলা রুখে দিয়েছে।
উভয় পক্ষ জানিয়েছে, বিদ্রোহীরা হামা শহরে প্রবেশ করার চেষ্টায় মঙ্গলবার থেকে লড়াই শুরু করে আর রাতভর তাদের সঙ্গে সিরীয় সেনাবাহিনী ও তাদের মিত্র ইরানের সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর লড়াই হয়েছে। সরকারপন্থিদের পক্ষ হয়ে রাশিয়ার জঙ্গি বিমানগুলো বিদ্রোহীদের ওপর বোমাবর্ষণ করেছে।
গত সপ্তাহে বিদ্রোহীরা উত্তরাঞ্চলের প্রধান শহর আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং তাদের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় ছিটমহলগুলোতে থেকে সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করে। মঙ্গলবার তারা হামার উত্তরদিকের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি পাহাড়ে পৌঁছে যায় এবং বুধবার শহরটির পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের দিকে অগ্রসর হয়।
২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়েছিল। তবে গৃহযুদ্ধের পুরোটা সময় হামা শহরটির সরকারের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ২০২০ সাল থেকে স্থবির হয়ে থাকার পর থেকে গত সপ্তাহে ফের পুনরুজ্জীবিত হয়ে ওঠা বিদ্রোহীদের হাতে শহরটির পতন হলে তার আঘাতের তরঙ্গ রাজধানী দামেস্ক থেকে শুরু করে এর মিত্র রাশিয়া ও ইরান পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।
আলেপ্পো থেকে দামেস্ক পর্যন্ত এক তৃতীয়াংশও বেশি পথের মধ্যে হামা শহরটির অবস্থান। যদি বিদ্রোহীরা এটি দখল করে নিতে পারে তবে তাদের সামনে সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলীয় প্রধান শহর হমস এর পথ খুলে যাবে। হমস শহরটি সিরিয়ার সবচেয়ে জনবহুল এলাকাগুলোর মধ্যে সংযোগকারী একটি কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে।
হামা শহরটি সিরিয়ার ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বড় দু’টি শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। এদের একটি মুহরাদায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বহু মানুষ বসবাস করে আর সালামিয়ায় বাস করে ইসমাইলি মুসলিমরা।
বিদ্রোহীদের সবচেয়ে শক্তিশালী উপদল হচ্ছে সুন্নি জঙ্গি গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) । তারা সিরিয়ায় আল কায়েদার সাবেক শাখা। এইচটিএসের নেতা আবু মোহাম্মদ আল-গোলানি সিরিয়ার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, কিন্তু অনেকেই বিদ্রোহীদের নিয়ে শঙ্কায় ভুগছেন।
গোলানি বুধবার আলেপ্পোর ঐতিহাসিক দুর্গ পরিদর্শন করেছেন। এটি বিদ্রোহীদের বিস্ময়কর জয়ের একটি প্রতীকি মুহূর্ত হয়ে সামনে এসেছে।