উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা এড়াতে সব বিমানবন্দরে এই ক্যামেরা এবং রাডার স্থাপনের ব্যবস্থা নিচ্ছে দেশটি।
Published : 06 Feb 2025, 07:23 PM
গত বছরের ডিসেম্বরে জেজু এয়ারের একটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় ১৭৯ জন নিহত হওয়ার পর, দক্ষিণ কোরিয়ার সব বিমানবন্দরে পাখি শনাক্তকরণ ক্যামেরা ও থার্মাল ইমেজিং রাডার স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই প্রযুক্তি ২০২৬ সালে চালু করা হবে।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমি মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “উড়োজাহাজগুলোর দ্রুত প্রতিক্রিয়া সক্ষমতা বাড়াতে এবং দূরে থাকা পাখি আগেভাগেই শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সব বিমানবন্দরে পাখি শনাক্তকরণ রাডার বসানো হবে।”
এই রাডার পাখির আকার ও গতিপথ শনাক্ত করে তাৎক্ষণিকভাবে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলারদের কাছে তথ্য পাঠাবে। সে অনুযায়ী তারা পাইলটদের নির্দেশনা দেবেন।
এর আগে, গত সপ্তাহে তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার বোয়িং ৭৩৭-৮০০ উড়োজাহাজটির দুর্ঘটনায় পাখির আঘাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে। উড়োজাহাজের দুটি ইঞ্জিনেই পাখির পালক এবং রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছিল।
গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর জেজু এয়ারের ওই ফ্লাইটটি ব্যাংকক থেকে রওনা দিয়ে মুয়ান বিমানবন্দরের রানওয়েতে জরুরি অবতরণ করে। এটি চাকা ছাড়াই রানওয়ে দিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত ছেঁচড়ে যায়, তারপর রানওয়ের শেষপ্রান্তে একটি কংক্রিটের দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে বিস্ফোরিত হয়। দুর্ঘটনায় উড়োজাহাজটির ১৮১ আরোহীর মধ্যে ১৭৯ জনেরই মৃত্যু হয়। কেবল বেঁচে যান দুইজন।
এখনও এই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার তদন্ত চলছে। বিশেষজ্ঞরা কেবল পাখির আঘাতই নয়, রানওয়ের শেষে থাকা কংক্রিটের ওই সীমানা দেয়ালের দিকেও মনোনিবেশ করেছেন।
রানওয়েতে কোনও দেয়াল না রাখতে দক্ষিণ কোরিয়া এরই মধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে। এর পাশাপাশি দুর্ঘটনা এড়াতে প্রতিটি বিমানবন্দরে অন্তত একটি থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরা বসানো প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
বিবিসি জানায়, বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার মাত্র চারটি বিমানবন্দরে এই ক্যামেরা রয়েছে, তবে কোনওটিতে পাখি শনাক্তকরণ রাডার আছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
এসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়াও বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় পাখিদের আকৃষ্ট করে এমন আবর্জনার স্তূপ ও অন্যান্য উপাদান সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।
ডিসেম্বরের দুর্ঘটনার পর পর্যালোচনা শেষে দক্ষিণ কোরিয়া ঘোষণা করেছিল, সাতটি বিমানবন্দরের রানওয়ে সুরক্ষা অঞ্চল উন্নত করা হবে।
দুর্ঘটনার আসল কারণ এখনও নিশ্চিত জানা যায়নি, তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উড়োজাহাজটি জরুরি অবতরণের পর সীমানা দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছে, সেটি না থাকলে মানুষের মৃত্যু অনেক কম হতে পারত।