ইরান-যুক্তরাষ্ট্র দু’পক্ষই পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে প্রথম এই বৈঠককে গঠনমূলক বলেছে। ফের বৈঠক হতে পারে আগামী শনিবার।
Published : 13 Apr 2025, 10:13 AM
ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ওমানের রাজধানী মাসকটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম দফা বৈঠক ‘ইতিবাচক’ ও ‘গঠনমূলক’ হয়েছে বলে জানিয়েছে দুই পক্ষই।
২০১৮ সালের পর ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এটিই ছিল সবচেয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। শনিবারে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে দুই পক্ষই আবার আগামী সপ্তাহে দ্বিতীয় দফা আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তাদের প্রথম এই বৈঠক শান্ত ও ইতিবাচক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ফলপ্রসূ হয়েছে।
উভয়পক্ষ আলোচনা চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “সম্ভবত আগামী শনিবার” আবার বৈঠক হবে। আরাকচি জানান, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র স্বল্পমেয়াদে একটি চুক্তি চায়। “আমরা কেবল আলোচনার জন্য আলোচনা চালিয়ে যেতে চাই না”, বলেন তিনি।
ওমানের অনুষ্ঠিত আড়াইঘণ্টার বৈঠকে আরাগচি ইরানি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। আর যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে আলোচনার নেতৃত্ব দেন ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ।
বিবিসি জানায়, দুই দেশের প্রতিনিধি দলের মধ্যে আলাদা আলাদা কক্ষে বসে আলোচনা হয়েছে। দুই প্রতিনিধি দলের কাছে একে অপরের বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর বিন হামাদ আল-বুসাইদি।
যুক্তরাষ্ট্র আগে থেকেই ওমানে ইরানের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনা চেয়ে আসছিল। তবে ইরান বরাবরই পরোক্ষো আলোচনার পক্ষে ছিল।
বৈঠক শুরুর আগে প্রাথমিকভাবে আরাগচি এবং উইটকফ কেবল কয়েক মিনিট ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদরের উপস্থিতিতে সরাসরি কথা বলেছিলেন। পরে বৈঠকটি আলাদা কক্ষে বসে হয়।
ইরানের কট্টরপন্থিদের চাপের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক এড়িয়ে গেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগচি। এমনকি বৈঠকের কোনও ছবিও তোলা হয়নি।
বৈঠকের পর হোয়াইট হাউজ আরাগচির সঙ্গে উইটকফ এবং ওমানে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই বৈঠককে খুবই ইতিবাচক ও গঠনমূলক বলে বর্ণনা করেছে।
এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ বলেছে, “এই বিষয়গুলো খুবই জটিল। আজ বিশেষ দূত উইটকফের সরাসরি এই যোগাযোগ পারষ্পরিক সুবিধাজনক ফল বয়ে আনার পথে এক ধাপ অগ্রগামী পদক্ষেপ।”
ওদিকে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগচি রাষ্ট্রীয় টিভিতে বলেন, “আমি মনে করি আমরা আলোচনার জন্য একটি বুনিয়াদের খুব কাছাকাছি আছি। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারলে আমরা অনেক দূর পথ যেতে পারব এবং এর ভিত্তিতে আসল আলোচনা শুরু করতে পারব।”
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে ইরানের সঙ্গে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর হওয়া ওবামা-আমলের পামাণবিক চুক্তি থেকে সরে এসেছেন।
ইরানের সঙ্গে আরও ভাল একটি চুক্তি করবেন বলে দীর্ঘদিন থেকেই বলে এসেছেন ট্রাম্প। তবে এতদিন ইরান পুরোনো ওই চুক্তির জায়গায় নতুন চুক্তি করা নিয়ে আলোচনা প্রত্যাখ্যান করে এসেছিল।
কোনো চুক্তি না হলে ইরানে বোমা মারার হুমকি আগেই দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এর পাল্টায় ইরান সতর্কতার সঙ্গে অগ্রসর হয়েছে।