সম্প্রতি অধিকাংশ আরব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে শুরু করায় সিরিয়াকে আরব লীগের পূর্ণ সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
Published : 19 May 2023, 09:46 AM
আরব লীগের সম্মেলনে যোগ দিতে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সৌদি আরব গিয়েছেন।
শুক্রবারের সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে আসাদ বৃহস্পতিবার জেদ্দায় পৌঁছান বলে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম আল আরাবিয়া টেলিভিশন ও সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে।
২০১১ সালের প্রথমদিকে সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে নির্মম দমনপীড়ন ও পরবর্তীতে সিরিয়ায় ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ শুরু হলে আসাদ ও তার সরকারকে আরব লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
সম্প্রতি অধিকাংশ আরব দেশ সিরিয়ার সঙ্গে ফের মিত্রতা শুরু করায় ১২ বছর পর দেশটিকে আরব লীগের পূর্ণ সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর সৌদি আরব জেদ্দার সম্মেলনে আসাদকে আমন্ত্রণ জানায়।
সিরিয়ার যুদ্ধের সময় আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করতে লড়াইয়ে নামা সশস্ত্র বিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে যারা সমর্থন যুগিয়েছিল সৌদি আরব তাদের অন্যতম। ওই যুদ্ধে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ নিহত ও সিরিয়ার যুদ্ধপূর্ববর্তী জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক বাস্তুচ্যুত হয়। তবে সম্প্রতি সিরিয়ার সংঘাত অবসানে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে রিয়াদ।
যুদ্ধে আসাদের সেনারা মিত্র রাশিয়া ও ইরানের সহযোগিতায় সিরিয়ার অধিকাংশ এলাকার ওপর নিয়ন্ত্রণ পুনপ্র্রতিষ্ঠা করেছে। সিরিয়ার ক্ষমতার ভারসাম্য এখন আসাদের অনুকূলে।
বাবা হাফেজ আল আসাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট হন বাশার আল আসাদ। ওই সময় থেকেই সিরিয়া ও সৌদি আরবের সম্পর্ক নড়বড়ে হতে শুরু করে। ২০১২ সালে দুই দেশ সম্পর্ক ছিন্ন করে। গত সপ্তাহে তারা ফের তাদের দূতাবাসগুলো খোলার বিষয়ে সম্মত হয়।
২০১৮ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত সিরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্স্থাপন করলে ফের অন্যান্য আরব দেশগুলোর সঙ্গে দামেস্কের সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার পথ খুলে। ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল ও তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পে ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পর ত্রাণ সরবরাহের মধ্য দিয়ে এই প্রক্রিয়া গতি পায়।
ভূমিকম্পের পর সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মানবিক সংকট মোকাবেলার জন্য দামেস্কের সঙ্গে আলোচনা করা দরকার আর এর জন্য সিরিয়ার বিষয়েও মনোভাব পাল্টানো দরকার বলে আবর বিশ্বের মধ্যে একটি ঐকমত্য তৈরি হচ্ছে।
সৌদি আরবের যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। তারপর থেকে রিয়াদ আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটিয়েছে, সিরিয়ার সঙ্গে মিত্রতা পুনর্স্থাপন করেছে এবং দীর্ঘদিন ধরে চলা ইয়েমেন যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটানোর পদক্ষেপ নিয়েছে।