কুখ্যাত গ্যাং লিডারকে আদালতে বিচারের জন্য আনা হয়েছিল। শুনানি চলার সময় আইনজীবী বেশে এক অস্ত্রধারী তাকে গুলি করে।
Published : 21 Feb 2025, 05:23 PM
শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর একটি আদালতে আইনজীবীর ছদ্মবেশে এক বন্দুকধারী কুখ্যাত এক গ্যাং লিডারকে গুলি করে হত্যা করেছেন।
পুলিশের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, বন্দুকধারী যে বন্দুক দিয়ে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে সেটি এক নারী ফাঁপা বইয়ের মধ্যে পাচার করেন। ওই নারী এখনও পলাতক।
গ্যাং লিডার সঞ্জীবা কুমারা সামারাত্নেকে আদালতে বিচারের জন্য আনা হয়েছিল। শুনানি চলার সময় বন্দুকধারী তাকে গুলি করে। সঞ্জীবা একাধিক হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সঞ্জীবা গ্যানেমুলে সানজিওয়া নামে বহুল পরিচিত। তিনি ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে পুলিশি হেফাজতে ছিলেন।
রাজধানী কলম্বোয় এ হত্যাকাণ্ড শ্রীলঙ্কায় চলমান গ্যাং সহিংসতার ধারাবাহিকতায় ঘটেছে, যা দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত বুধবার শ্রীলঙ্কার সংসদেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বিরোধী দলীয় এক সাংসদ এ সহিংসতাকে ‘গুরুতর নিরাপত্তা সমস্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার ওই ঘটনার সময় ১২ জন পুলিশ কর্মকর্তা আদালত প্রাঙ্গণে তার সঙ্গেই ছিলেন। হামলার পরই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়।
তবে সেখানে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে বন্দুকধারী পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও পরে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।
কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় গণমাধ্যম তাকে ভিন্ন পরিচয়ে শনাক্ত করলেও পুলিশ বলছে, অপরাধ সংগঠিত করতে বন্দুকধারী বেশ কয়েকটি নাম ব্যবহার করেছে। ওদিকে, সেই সন্দেহভাজন সাহায্যকারী নারীর নাম পিনপুরা দেওয়াগে ইশারা সেওয়ান্দি (২৫)।
কর্তৃপক্ষ তার সম্পর্কে তথ্য দিলে পুরস্কারের দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন এই দুই ব্যক্তিকে সহায়তা করার সন্দেহে তারা এক পুলিশ সদস্য ও ভ্যান চালককেও গ্রেপ্তার করেছে।
আদালতের ভেতর এমন চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডে শ্রীলঙ্কার আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কর্তৃপক্ষ বর্তমানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করছে।
গুলি চালানোর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তার মধ্যে বিশেষ ব্যক্তিদের আদালতে আনার সময় সশস্ত্র রক্ষী মোতায়েন করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সাধারণত আদালতে অস্ত্রধারী নিরাপত্তা কর্মীদের অনুমতি দেওয়া হয় না। তবে এই ঘটনার পর বিচারমন্ত্রী হার্শানা নানায়াক্কারা জানিয়েছেন, নিয়ম পরিবর্তন করে নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, চলতি বছর শ্রীলঙ্কায় প্রতিদ্বন্দ্বী গ্যাং সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছে।