“এখনকার আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, যেখানে সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসী ও যুদ্ধবাজ স্বভাব ইতিহাসের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি প্রকাশ্য, যুদ্ধ ও রক্তক্ষয় স্বাভাবিক হয়ে উঠছে, তখন আমাদের দরকার এমন একটি সশস্ত্র বাহিনী যেটি যুদ্ধের সঙ্গে ঠিকঠাক খাপ খাইয়ে নিতে পারে,” বলেছেন উত্তর কোরিয়ার এ শীর্ষ নেতা।
Published : 26 Feb 2025, 05:32 PM
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন পিয়ংইয়ংয়ের একটি সামরিক একাডেমি পরিদর্শনে গিয়ে যে কোনো যুদ্ধের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে একটি শক্তিশালী ও আধুনিক সেনাবাহিনী গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ এ খবর দিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইউক্রেইনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়াকে সহযোগিতায় উত্তর কোরিয়া এরই মধ্যে কুর্স্কে কয়েক হাজার সৈন্য পাঠিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার অনুমান, সামরিক ইউনিট ও তাদের প্রশিক্ষণ দেখতে কিম আগে যেসব পরিদর্শনে গিয়েছিলেন, তা রাশিয়ায় অতিরিক্ত সৈন্য প্রেরণের প্রস্তুতির অংশ হতে পারে।
মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার শীর্ষ নেতার ক্যাং কন মিলিটারি একাডেমি পরিদর্শনেরও একই উদ্দেশ্য কিনা, সে সম্বন্ধে তাৎক্ষণিকভাবে সিউলের কোনো মূল্যায়ন পাওয়া যায়নি।
কয়েকদিন আগে কিম পিয়ংইয়ংয়ের হায়ংজেসান-গিয়কে অবস্থিত কিম ইল সাং ইউনিভার্সিটি অব পলিটিক্সও পরিদর্শন করেন। উত্তর কোরিয়ার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিজান ক্যাডারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেখানে গিয়ে কিম সামরিক বাহিনীর প্রতি দেশের প্রতি আনুগত্য ও ত্যাগের প্রস্তুতি রাখার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
কেসিএনএ জানায়, মঙ্গলবার পরিদর্শনে গিয়ে কিম সামরিক একাডেমিটির দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও অপর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার কড়া সমালোচনা করেছেন। বলেছেন, এই একাডেমি ‘আধুনিকায়ন ও উন্নত প্রযুক্তির সমারোহ ঘটিয়ে’ শক্তিশালী সেনাবাহিনী গড়তে ক্ষমতাসীন দলের যে আকাঙ্ক্ষা তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।
তিনি প্রতিষ্ঠানটির সংস্কার ও চর্চানির্ভর শিক্ষায় জোর দিতে কী করণীয় তা ঠিক করে দেন, যেন শিক্ষার্থীরা 'আধুনিক যুদ্ধের প্রকৃত অভিজ্ঞতা' সম্পর্কে জানতে পারে এবং অত্যাধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম ব্যবহারে দক্ষ হয়ে উঠতে পারে, প্রতিবেদনে বলেছে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা।
“এখনকার আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, যেখানে সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসী ও যুদ্ধবাজ স্বভাব ইতিহাসের যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি প্রকাশ্য, যুদ্ধ ও রক্তক্ষয় স্বাভাবিক হয়ে উঠছে, তখন আমাদের দরকার এমন একটি সশস্ত্র বাহিনী যেটি যুদ্ধের সঙ্গে ঠিকঠাক খাপ খাইয়ে নিতে পারে,” কিম এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে কেসিএনএ।
দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, রাশিয়ায় সেনা ও অস্ত্র পাঠিয়ে উত্তর কোরিয়া আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্র সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।
তবে ইউক্রেইন বলছে, রাশিয়ায় পাঠানো উত্তর কোরিয়ার সেনারা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। জানুয়ারির প্রথম ভাগ পর্যন্ত পিয়ংইয়ংয়ের তিন হাজারের বেশি সেনা হতাহত হয়েছে বলেও দাবি তাদের।