মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেল খাটেন পেরুর সাবেক এই নেতা।
Published : 12 Sep 2024, 06:11 PM
মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে সাজা খাটা দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট আলবার্তো ফুজিমোরি মারা গেছেন।
বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত ফুজিমোরি বুধবার রাতে অচেতন হয়ে পড়েন। বৃহস্পতিবার তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
বিবিসি লিখেছে, ফুজিমোরির মেয়ে কেইকো ফুজিমোরি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বাবার মৃত্যুর খবর দিয়েছেন। ক্যান্সারেরস সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর মারা গেছেন তার বাবা।
ফুজিমোরির চিকিৎসক হোসে কার্লোস গুতিয়েরেজ বলেন, চলতি বছরের শুরুর দিকে ফুজিমোরির জিহ্বার ক্যান্সার ধরা পড়ে। চিকিৎসায় সাড়া মিললেও দুদিন আগে তার (ফুজিমোরি) শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।
বিবিসি বলছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেল খাটেন পেরুর সাবেক এই নেতা। ১৯৯০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে পেরুর শাসক ছিলেন; শেষপর্যন্ত দুর্নীতির কারণে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য তিনি।
বামপন্থি গেরিলা বিদ্রোহ দমনে ফুজিমোরির কঠোর অবস্থানের কারণে তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয় এবং বিচারে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। ক্ষমতা ছাড়ার পর তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও পরবর্তীতে তাকে গ্রেপ্তার করে দেশে ফিরিয়ে এনে কারাগারে পাঠানো হয়।
সাবেক এই প্রেসিডেন্ট দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে গণহত্যায় জড়িত থাকার মত বেশ কয়েকটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন।
১৫ বছরেরও বেশি সময় বন্দি থাকার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট তাকে সাধারণ ক্ষমা করলে গত বছরের ডিসেম্বরে লিমার বারবাডিলো কারাগার থেকে মুক্তি পান ফুজিমোরি।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দোসী সাব্যস্ত হলেও ফুজিমোরির ভক্ত-সমর্থকরা তা মনে করেন না। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সমর্থকরা তাকে একজনর দেখার জন্য আকুতি জানাতে থাকেন।
ফুজিমোরি ছিলেন সেই নেতা, যিনি পেরুকে নৃশংস মাওবাদী বিদ্রোহী দল সেন্দেরো লুমিনোসো থেকে রক্ষা করেছিলেন বলে তার সমর্থকরা বিশ্বাস করে।
তবে ফুজিমোরির শাসন আমলে দমন-পীড়নের শিকার হাজার হাজার নিরীহ মানুষের কাছে তিনি ছিলেন স্রেফ স্বৈরাচার ও নিষ্ঠুর নেতা।
জাপানি অভিবাসীর সন্তান ফুজিমোরির মেয়ে কেইকো বর্তমানে পেরুর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলের নেতা।