ইসরায়েল সমর্থিত একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের জবাবে হামাস বেশ কয়েকটি দাবিসহ সাড়ে চার মাস স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে।
Published : 08 Feb 2024, 10:58 AM
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতির শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন, কয়েক মাসের মধ্যে গাজায় ‘পূর্ণ বিজয়’ আসতে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
ইসরায়েল সমর্থিত একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের জবাবে হামাস বেশ কয়েকটি দাবিসহ সাড়ে চার মাস স্থায়ী একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয়, বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তা নিয়ে কথা বলার সময় নেতানিয়াহু হামাসের প্রস্তাবকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে বর্ণনা করেন।
হামাসের প্রস্তাবগুলোকে ‘উদ্ভট’ আখ্যায়িত করে নেতানিয়াহু বলেন, ফিলিস্তিনি এই গোষ্ঠীটির সঙ্গে আলোচনা ‘এগোচ্ছে না’।
তবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে কোনো একটি চুক্তিতে পৌঁছতে যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
“পূর্ণ ও চূড়ান্ত বিজয় ছাড়া অন্য কোনো সামধান নেই। যদি গাজায় হামাস টিকে থাকে তাহলে পরবর্তী নির্বিচার হত্যাকাণ্ড শুধু সময়ের ব্যাপার,” বলেছেন নেতানিয়াহু।
বিবিসি বলছে, হামাসের পাল্টা প্রস্তাবে ইসরায়েল প্রতিক্রিয়া দেখাবে এটা প্রত্যাশিতই ছিল, কিন্তু নেতানিয়াহু যা বলেছেন তা সরাসরি তিরস্কার। হামাসের শর্তে যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টাকে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা একেবারে অগ্রহণযোগ্য হিসেবে দেখছেন।
হামাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, নেতানিয়াহুর মন্তব্যগুলো ‘এক ধরনের রাজনৈতিক বাহাদুরি’ আর তিনি যে এই অঞ্চলে সংঘাত চালিয়ে যেতে চান, তা দেখিয়েছে।
মিশরীয় এক সরকারি কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় বৃহস্পতিবার কায়রোতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবগুলো নিয়ে নতুন পর্বের আলোচনা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, একটি সর্বসম্মত সমঝোতা চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় নমনীয়তা দেখাতে মিশর সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
মধ্যস্থতাকারী কাতার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাসের দেওয়া জবাবকে ‘ইতিবাচক’ বলেছিল, কিন্তু নেতানিয়াহুর প্রতিক্রিয়া তার সম্পূর্ণ বিপরীত।
হামাসের ওই প্রস্তাবে তিনটি পর্যায়ে যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। প্রতিটি পর্যায় ৪৫ দিনের হবে। যুদ্ধবিরতির ওই প্রস্তাবে হামাস বলেছে, ফিলিস্তিনি কারাবন্দিদের বিনিময়ে তারা ইসরায়েল থেকে গত ৭ অক্টোবর ধরে নিয়ে আসা বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেবে।
যুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরু করতে হবে, ইসরায়েলি বাহিনীকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করে নিতে হবে এবং উভয় পক্ষ মৃতদেহ এবং বাকি অন্যান্য কিছু বিনিময় করবে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক ও নজিরবিহীন হামলায় প্রায় ১২০০ জন নিহত হয়েছিল। এর প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল ওই দিন থেকেই গাজায় নির্বিচার হামলা শুরু করে। তারপর থেকে চার মাস ধরে তাদের অবিরাম হামলায় গাজায় ২৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে অন্তত ৬৫ হাজার।
আরও পড়ুন:
ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহারসহ হামাসের ১৩৫ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি না দিলে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক নয়: সৌদি আরব
গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য ‘চূড়ান্ত ফরমুলার’ খোঁজে মধ্যস্থতাকারীরা